নিজস্ব প্রতিবেদক

১১ আগস্ট, ২০১৫ ২০:১২

সাফ অনুর্ধ-১৬ ফুটবল: শ্রীলংকাকে ৪-০ গোলে গুড়িয়ে বাংলাদেশের উড়ন্ত সূচনা

শেষ পর্যন্ত পাঁচের প্যাচ থেকে বেরোলে সাফ অনুর্ধ-১৬ ফুটবল চ্যাম্পিয়ানশিপ। আগের দুই ম্যচেই প্রতিপক্ষের জালে পাঁচবার করে বল জড়িয়েছিলো ভারত ও নেপাল। কাল আর পাঁচ গোল হয়নি। একগোল কম দিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হলো বাংলাদেশকে। তবে গোল ৪টি হলে শ্রীলঙ্কার জালে সাত বার বল পাঠিয়েছে বাংলাদেশে। বিধিবাম, বেসরসিক লাইন্সম্যন তিনটি অফসাইড ঘোষণা করা সেগুলো আর গোল হিসেবে গণ্য হয়নি।
কাল বিকেলে সিলেট স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কা ৪-০ গোলে হারিয়ে ছয় জাতির এ টুর্ণামেন্টে শুভ সূচনা করলো বাংলাদেশ। আর টানা দুই ম্যাচে যথাক্রমে পাঁচ আর চার গোলে হেরে টুর্ণামেন্ট থেকে বিদায় নিশ্চিত করে ফেললো লংকা।
স্কোরলাইন দেখে কালকের ম্যাচটা যতোটা একপেশে মনে হচ্ছে তারচেয়ে একপেশে ছিলো ম্যাচ। অনেকগুলো সহজ সুযোগ মিস না করলে গোল সংখ্যা দিগুণও করতে পারতো বাংলাদেশ। আর তিনটিতো অফসাইডের গ্যাড়াকলে পড়ে গোল হলো না।
আগেরনিই অনুশীলনে বাংলাদেশ কোচ গোলাম জিলানী জানিয়েছিলেন, আক্রমনাত্মক ফুটবল খেলেই ম্যাচ জিততে চায় বাংলাদেশ। চাপে থাকা শ্রীলঙ্কাকে আরো চেপে ধরার ঘোষণা দিয়েছিলেন জিলানী।
কাল মাঠে জিলানীর চাওয়ারই প্রতিফলন ঘটালো তার শিষ্যরা। শুরু থেকেই আক্রমনের পর আক্রমন করে চেপে ধরে শ্রীলঙকাকে। খেলা শুরুর দুই মিনিটের মধ্যে বাংলাদেশ দলকে উল্লাসে মাতান সরোয়ার জাহান নিপু। তবে সে উল্লাস বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। অফসাইডের ঘোষণায় বল জালে জড়ালেও গোলবঞ্চিতই থাকতে হয় বাংলাদেশকে। অবশ্যই এই বঞ্চিত থাকা মিনিট কয়েকই।
খেলার ৯ মিনিটেই গোল পেয়ে যায় বাংলাদেশ। এবং গোলের দেখা পান নিপুও। বল জালে জড়ানোর সাথে সাথেই লাফিয়ে উঠে পুরো গ্যালারি। লাফাবেন নাই বা কেনে? এমন দৃশ্য দেখার জন্যই তো গত দুইদিনের দর্শক খরা কাটিয়ে কাল মাঠে হাজির হয়েছিলেন হাজার পাঁচেক দর্শক। খেলার ২০ মিনিটে গ্যালারী থেকে ফের চিৎকার। এবারের চিৎকার উল্লাসের নয়, আফসোসের। ১০ নম্বর জার্সি পরিহিত রাকিবের দূর্দান্ত একটি শট গোলপোস্টে লেগে ফিরে আসে যে!
প্রথমার্ধের বাকীসময়ুটুকু ছিলো বাংলাদেশে গোল মিসের মহড়ার। ২৯ আর ৩০ মিনিটে বাংলাদেশ দলের দুটি দুর্দান্ত আক্রমন কর্ণার করে বাঁচিয়ে দেন শ্রীলঙ্কান গোলরক্ষক মোহাম্মদ ফাজলান।
প্রথমার্ধে গোল মিসের মহড়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে যেনা তা শুধরে নেওয়ার প নিয়েই মাঠে নামে বাংলাদেশ। ফলে প্রথমার্ধের এক গোলের সাথে শেষার্ধে আরো তিনটি গোল যোগ করতে সমর্থ হয় শাওন হোসেন গং।


তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুটাও অফসাইডের মাধ্যমে। দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম মিনিটে নিপুর শট জালে জড়ালেও তা অফসাইডের শংকেত দেন লাইন্সম্যান। তবে দ্বিতীয়ার্ধের ১২ মিনিটে আবার বাংলাদেশ দলকে উল্লাসে মাতান আবেদিন রাকিব। দ্বিতীয়ার্ধের ৩৬ মিনিটে বাংলাদেশকে ৩য় সাফল্য এনে দেন ৩৬ নং জার্সিধারী খেলোয়াড় আতিকুজ্জামান। খেলা শেষের মিনিট তিনিক আগে আরেক গোল। গোল করে যিনি শুরু করেছিলেন উৎসবের শেষ পেরেকটুকুও গেথে দেন তিনি। আবারও নিপুর পা ছুঁয়ে বল জড়ায় জালে।
গতিময় আর সমন্বিত ফুটবল ফেলে হেসেখেলেই লঙ্কাবিজয় করেছে বাংলাদেশ। পুরো খেলায় বলার মতো কোনো আক্রমনই থেরি করতে পারেনি শ্রীলংকা। আর পুরো খেলায় মূর্হূমূহূ আক্রমনে লঙকান রক্ষণভাগকে বেতিব্যস্ত রেখেছে বাংলাদেশের আক্রমণভাগের খেলোয়াড়রা।
এই জয়ের ফলে সেমিফাইনাল অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে গেলো বাংলাদেশের। টানা দুই ম্যচ হেরে নিশ্চিত হয়ে গেলে শ্রীলংকার বিদায়ও। আগামী বৃহস্পতিবার ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ দল।
খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে শ্রীলংকার কোচ সুজুকি চিকাশী দোষলেন ভাগ্যকে। আর বাংলাদেশ দলের উচ্চসিত অধিনায়ক শাওন আগামী ম্যাচেও আজকের ম্যাচের ধারাবাহিকতা ধরে রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করলেন।
এবার অপেক্ষা বৃহস্পতিবারের। ক্রিকেটের পর ফুটবলেও আরেকটি ভারত বধের সাক্ষী হওয়ার সুযোগ মিলতে পারে যে এদিন!

আপনার মন্তব্য

আলোচিত