সিলেটটুডে স্পোর্টস ডেস্ক

১৫ আগস্ট, ২০১৫ ১১:৪১

এক হালি গোল হজম করল মেসি-সুয়ারেজের বার্সেলোনা

বছরের হিসাবে ৪ শিরোপা আর সর্বশেষ ম্যাচে এক হালি গোল অর্থাৎ ৪ গোল খেয়ে উড়তে থাকা মেসি-সুয়ারেজের বার্সেলোনাকে মাটিতে নামিয়ে আনল আথলেতিক বিলবাও।

স্প্যানিশ সুপার কাপের প্রথম পর্বে আরিতস আদুরিসের হ্যাটিট্রিকে কাতালুনিয়ার দলটিকে ৪-০ ব্যবধানে হারিয়েছে গত মৌসুমে কোপা দেল রেতে রানার্সআপ হওয়া দলটি।

শুক্রবার আথলেতিক বিলবাওয়ের মাঠ সান মামেসে প্রথম একাদশে আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা, ইভান রাকিতিচ, জেরার্দ পিকের মতো গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের রাখেননি বার্সেলোনার কোচ লুইস এনরিকে। মাঝ মাঠে হাভিয়ের মাসচেরানোর সঙ্গী ছিলেন রাফিনিয়া ও সের্জিও রবের্তো। এই ত্রয়ী মাঝ মাঠের নিয়ন্ত্রণ নিতে হিমশিম খান, যার প্রভাব পড়ে বার্সেলোনার খেলায়।

রক্ষণভাগে ফেরেন আদ্রিয়ানো, এক বছর আগে আর্সেনাল থেকে বার্সেলোনায় যোগ দেওয়া টমাস ভারমেলিন। এই ডিফেন্ডারের স্পেনের অন্যতম সফল দলটির হয়ে এটি সবে মাত্র দ্বিতীয় ম্যাচ।

গত মঙ্গলবার রাতে নয় গোলের রোমাঞ্চকর ম্যাচে সেভিয়াকে হারিয়ে সুপার কাপ জেতা বার্সেলোনা তিন দিন পরের এই ম্যাচে ভক্তদের হতাশ করে। প্রতিপক্ষের গোলরক্ষককে খুব একটা পরীক্ষায় ফেলতে পারেননি লিওনেল মেসি-লুইস সুয়ারেসরা।

গত মৌসুমের লা লিগা ও কোপা দেল রের শিরোপা জয়ী বার্সেলোনাকে স্তব্ধ করে ত্রয়োদশ মিনিটে স্বাগতিকদের এগিয়ে দেন মিকেল সান জোসে।

বিলবাওয়ের গোলরক্ষকের শট এগিয়ে এসে হেড করে বিপদমুক্ত করার চেষ্টা করেন মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগান। কিন্তু মাঠের মাঝামাঝি জায়গায় বল পেয়ে যান মিকেল। তার জোরালো শট বার্সেলোনার গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে জালে জড়ালে উল্লাসে মেতে উঠে সান মামেস।

দারুণ এক গোলের ধাক্কা সামলে গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠা বার্সেলোনাকে নিজের রক্ষণ সামলানোর জন্যও সমান মনোযোগ দিতে হয়। ২৫তম মিনিটে দারুণ একটি সুযোগ আসে স্বাগতিকদের সামনে কিন্তু সেবার আদুরিসের বাড়ানো বল হাভিয়ের এরাসো নাগালে না পাওয়ায় ব্যবধান বাড়ানো হয়নি বিলবাওয়ের।

অন্য প্রান্তে তখন দারুণ একটি সুযোগ আসে সুয়ারেসের সামনে। তার প্রচেষ্টাটি ব্যর্থ করে দেন বিলবাও ডিফেন্ডার আয়মেরিক লাপোর্তে।

প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে বিপজ্জনক জায়গায় ফ্রি-কিক পায় বার্সেলোনা। মেসির দারুণ ফ্রি-কিক ফিরিয়ে দিয়ে সেবার দলকে বাঁচান বিলবাওয়ের গোলরক্ষক গোর্কা মোরেনো।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে স্বাগতিকদের রক্ষণভাগের ওপর প্রচণ্ড চাপ তৈরি করে বার্সেলোনা। ৫০তম মিনিটে পেদ্রো রদ্রিগেসের শট ক্রসবারে লেগে ফিরলে হতাশ হতে হয় অতিথিদের। দুই মিনিট পর মেসির দারুণ একটি প্রচেষ্টা অসাধারণ নৈপুণ্যে ব্যর্থ করে দেন বিলবাওয়ের গোলরক্ষক। এর পরই পাল্টে যায় খেলার চিত্র।

১৩ মিনিটের মধ্যে হ্যাটট্রিক করে বার্সেলোনার মনোবল ভেঙে দেন আদুরিস। ২০১৩ সালের এপ্রিলে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি-ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে বার্সেলোনার ৪-০ ব্যবধানের হার বিস্ময় হয়ে এসেছিল অনেকের জন্য। তার চেয়েও বড় বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছে আদুরিসের বিলবাও।

৫৩তম মিনিটে স্যাবিন ম্যারিনোর দারুণ এক ক্রসে বার্সেলোনার জালে বল পাঠিয়ে বিলবাওকে ২-০ গোলে এগিয়ে দেন আদুরিস।

দ্বিতীয় গোলের আগে ইনিয়েস্তা ও পরে রাকিতিচকে মাঠে নামান বার্সেলোনার কোচ। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। ৬২তম মিনিটে নিজের দ্বিতীয় গোল করে অতিথিদের বিপদ আরও বাড়ান গত মৌসুমে ক্যারিয়ার সেরা ২৬ গোল করা আদুরিস।

বার্সেলোনার বিপদ তখনও কাটেনি। ছয় মিনিট পর দানি আলভেসের ফাউল থেকে পাওয়া পেনাল্টির সাহায্যে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন আদুরিস।

বাকি সময়ে আর গোল পায়নি বিলবাও, নিজেদের জালেও বল পাঠাতে দেয়নি অতিথিদের। মেসি-সুয়ারেসদের বেধে রেখে স্প্যানিশ সুপার কাপে নিজেদের দ্বিতীয় শিরোপা অনেকটাই নিশ্চিত করে ফেলে বিলবাও।

আগামী সোমবার কাম্প নউয়ে হবে দ্বিতীয় পর্বের খেলা। দ্বিতীয়বারের মতো বছরে ছয় শিরোপা জয়ের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে নিজেদের মাঠে অসাধ্যই সাধন করতে হবে বার্সেলোনাকে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত