তাহিরপুর প্রতিনিধি

৩০ মে, ২০২০ ১৪:২৩

মুক্তির খাল বন্ধ, দুর্ভোগে নৌযান চালকরা

বর্ষায় চারদিকে পানিতে ভরপুর হলেও তাহিরপুর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের শত শত নৌযান চালকরা উপজেলা সদরে প্রবেশ করতে পারছেন না ১২ ফুট প্রস্থের মুক্তির খাল বন্ধ থাকার কারণে। ফলে তিনটি ইউনিয়নের নৌযানের চালক, মালিকরা ও জনসাধারণ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

মুক্তির খালটি উপজেলার একটি জনগুরুত্বপূর্ণ আর মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি। এই খালটি উপজেলার মাছ বাজারের উত্তর দিকে অবস্থিত।

বিজ্ঞাপন

জানা যায়, প্রতি বছর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়ন, বাদাঘাট ইউনিয়ন ও দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়ন মাটিয়ান হাওরসহ বিভিন্ন হাওরের এক ফসলি বোরো ধান পাহাড়ি ঢল থেকে রক্ষার জন্য বাঁধ দেওয়া হয়। আর পাহাড়ি ঢলের পানি হাওরে প্রবেশের পর এই বাঁধ খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু এবার এখনও এই বাঁধটি খুলে না দেওয়ার কারণে তিনটি ইউনিয়নের সকল ব্যবসায়ীরা ও উপজেলা সদরের ব্যবসায়ীরা ক্ষতির শিকার হচ্ছেন ও উপজেলা সদরে আসতে গিয়ে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন জনসাধারণ।

এছাড়াও জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার স্পিড বোট এই খাল দিয়ে চলাচল করে। আর মাটিয়ান হাওরে ঝড় উঠলে সকল নৌকা মুক্তির খাল দিয়ে প্রবেশ করে তাহিরপুর বাজার গিয়ে আশ্রয় নেয়।

স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধারা এই খাল দিয়ে উত্তর শ্রীপুর, দক্ষিণ বড়দল ও বাদাঘাট ইউনিয়নসহ বিভিন্ন স্থানে নৌকা দিয়ে চলাচল করেছে। এছাড়াও এই খালটি ব্যবসায়ী ও নৌযান চালক এবং সর্বস্তরের মানুষের চলাচলের সহজ মাধ্যম। এই বাঁধটি খোলে না দিলে সবার দুর্ভোগের শেষ থাকবে না।

এ বিষয়ে তাহিরপুর উপজেলার সদরের বাজার বণিক সমিতির সভাপতি আবিকুল মিয়া জানান, মুক্তির খাল বাঁধ খুলে না দেওয়ার কারণে উত্তর দিকে তিনটি ইউনিয়ন হাজার হাজার নৌকা চালকরা যাত্রী নিয়ে বাজারে প্রবেশ করতে না পারায় কোনও ব্যবসায়ী ও মানুষজন বাজারে আসছে না। ফলে আমরা ক্ষতির শিকার হচ্ছি। বাঁধটি খুলে দিলে সবার উপকার হতো।

নৌযান চালক আশরাফুল মিয়া জানান, প্রতি বছরেই হাওরে পানি প্রবেশ করার সাথে সাথেই এই বাঁধটি খোলে দেওয়া হয়। এতে করে বাজারে সহজে প্রবেশ করা যায় আর আমরাও যাত্রী ও মালামাল পরিবহন করে লাভবান হতাম, যাত্রীরাও স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করত। এখন বাজারে আসতে হলে দীর্ঘ পথ ঘোরে বাজারে আসতে হচ্ছে। এতে করে আমরাও ক্ষতির শিকার হচ্ছি।

তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিজেন ব্যানার্জি বলেন, এই খাল নিয়ে দুটি পক্ষ থাকায় একটু সমস্যা আছে। তাই এই বিষয়ে সব কিছু বিবেচনা করে সবার সাথে বসে আলোচনা মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত