বড়লেখা প্রতিনিধি

০৪ জুন, ২০২০ ০০:১৯

বড়লেখায় ঝড়ে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে দুমড়েমুচড়ে গেল ঘর

অল্পের জন্য রক্ষা পেলেন বাসিন্দারা

মৌলভীবাজারের বড়লেখায় ট্রান্সফরমারসহ বিদ্যুতের একটি খুঁটি ভেঙে পড়ে বসতঘর দুমড়েমুচড়ে গেছে। এতে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন ওই বসতঘরের বাসিন্দারা। বুধবার (৩ জুন) দুপুরের দিকে উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের করমপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।

স্থানীয় ও পল্লী বিদ্যুত কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে ঝড় শুরু হয়। এসময় উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের করমপুর গ্রামে পল্লী বিদ্যুতের একটি লাইনের ওপর গাছ পড়ে। এতে ১০ কেভি ট্রান্সফরমারসহ একটি খুঁটি ভেঙে পড়ে পাশ্ববর্তী ঘরের উপর। বিদ্যুতের খুঁটির চাপে বসতঘরটি দুমড়েমুচড়ে যায়।

এ সময় ঘরে থাকা বাসিন্দারা অল্পের জন্য রক্ষা পান। তবে তাড়াহুড়ো করে ঘর থেকে বের হতে গিয়ে পরিবারের দুজন সদস্য আহত হয়েছেন।

খবর পেয়ে পল্লী বিদ্যুত সমিতি বড়লেখা আঞ্চলিক কার্যালয়ের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে আশপাশের এলাকা ঝুঁকিমুক্ত করে। তবে ভাঙা খুঁটিটি ঘরের ওপর থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়নি। বুধবার (৩ জুন) রাত সাড়ে ১০টায় এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত খুঁটিটি ঘরের ওপর ছিল। দুমড়েমুচড়ে যাওয়া ওই ঘরের বাসিন্দারা পাশের ঘরে আশ্রয় নিয়েছেন।  

বাড়ির বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বিদ্যুত লাইনের কাজ করার সময় বসত ঘরের সীমানা ঘেঁষে খুঁটি বসানো হয়। ওই খুটিতে ট্রান্সফরমারও লাগানো হয়। বাড়ির অদূরেও আরেকটি খুঁটি বসানো হয়।  এগুলো অনেকদিন থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল। আপত্তি জানালেও তখন লাইন টেনে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছিল। এরপর ঝুঁকিপূর্ণ একটি খুঁটি সরানোর জন্য আবেদনও করা হয়। কিন্তু ঝুঁকিপূর্ণ খুঁটিটি সরানো হয়নি। এরই মধ্যে একটি খুঁটি ভেঙে বসতঘরের ওপর পড়ে।

বিজ্ঞাপন


    
ভেঙে যাওয়া বসতঘরের বাসিন্দা লয়লা বেগম বলেন, ‘দুপুরে তুফান আইছে। কারেন্টের লাইনে গাছ পড়িয়া বড় খুটিত টান খাইছে। ইটাত ট্রান্সফরমার আছিল (ছিল)। আমার এক ছেলে বাইরে কামো আছিল (কাজে ছিল)। হে দেখছে লাইনে আগুন ধরিয়া ঘরোর উপর খুটি পড়ি যার। হে তখন চিক (চিৎকার) দিছে। আমরা দৌঁড়াইয়া সব ঘর থাকি বারইছি। ঘরে আমরা ১৫ থাকি ২০ জন মানুুষ থাকি। আল্লায় বাঁচাইছন। বিদ্যুতের মানুষ আইছন। দেখিয়া লাইন কাটিছন। কিন্তু খুটি রইছে। আমরা অন্য ঘরে উঠছি। গরিব মানুষ। ঘর বানানির ঠেকা (টাকা) নাই। সবতা ভাঙিয়া গেছে। কিলা ঘর বানাইতাম চিন্তাত আছি।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য বদরুল আহমদ বলেন, ‘অল্পে বড় ধরণের দুর্ঘটনার হাত থেকে মানুষ রক্ষা পাইছেন। আমি ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেছি। এখানে ঝুঁকিপূর্ণ একটি খুঁটি সরানোর জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা লিখিতভাবে আবেদন দিয়েছিলেন। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না পল্লী বিদ্যুৎ অফিস। এর মধ্যে একটি খুঁটি ঝড়ে বসতঘরের উপর ভেঙে পড়েছে। খুঁটিটি ঘরের লাগোয়া ছিল। গাফিলতি না করে সংশ্লিষ্টদের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।’

এ বিষয়ে মৌলভীবাজার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির- বড়লেখা আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. এমাজ উদ্দিন সরদার বুধবার (৩ জুন) রাত সাড়ে ১০টায় মুঠোফোনে বলেন, ভেঙে পড়া খুঁটিতে ১০ কেভির ট্রান্সফরমার ছিল। খুঁটির অদূরের লাইনে গাছ পড়ে ওটাতে টান খেয়ে ভেঙে গেছে। আল্লাহ রক্ষা করেছেন। কেউ হতাহত হয়নি। লোকজন দেখে এসেছে। বৃহস্পতিবার খুঁটি সরানো হবে।

তিনি বলেন, খুঁটিটি ঘরের লাগোয়া ছিল। অনেক বছর আগে লাইন নির্মাণ হয়। তখন ডিজাইন অনুযায়ী হয়েছে। আর খুঁটি সরানোর লিখিত আবেদনের বিষয়টি আমার জানা নেই। আমরা সরেজমিনে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত