নিজস্ব প্রতিবেদক

১৩ জুন, ২০২০ ০২:০৫

সিলেটে নমুনা জট, নতুন দুইটি ল্যাব চালুর উদ্যোগ

করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ পরীক্ষা

সিলেট বিভাগে এখন পর্যন্ত দুটি পিসিআর ল্যাবে করোনাভাইরাস শনাক্ত করণ পরীক্ষা করা হয়। সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিসিআর ল্যাবে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে ৩শ' নমুনা পরীক্ষা করা হয়। অথচ প্রতিদিন সিলেট বিভাগের বিভিন্ন স্থান থেকে সংগৃহীত হয় অন্তত ছয়শ' নমুনা। ফলে সিলেটের ল্যাবগুলোতে জমা আছে অনেকগুলো নমুনা। দীর্ঘদিন ধরেও এগুলো পরীক্ষা করা হচ্ছে না।

এ অবস্থায় করোনাভাইরাস শনাক্ত করণ পরীক্ষার জন্য সিলেট বিভাগে আরও দুটি পিসিআর ল্যাব চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও হবিগঞ্জ শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে করোনা পরীক্ষা শুরুর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান।

বিজ্ঞাপন

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ওসমানী মেডিকেল কলেজের ল্যাবে সিলেট জেলার ও শাবির ল্যাবে সুনামগঞ্জ জেলার নমুনা পরীক্ষা হয়। এছাড়া মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার নমুনা পাঠিয়ে দেওয়া হয় ঢাকায়। তবে এর পরেও অনেক নমুনা জমা পড়ে থাকে শাবির ল্যাবে। যা পরে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।

বৃহস্পতিবার (১১ জুন) পর্যন্ত সিলেট বিভাগ থেকে ঢাকায় ৫ হাজার ৯৬২ জনের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট এখনও আসেনি। সময়মত রিপোর্ট না পাওয়ায় সিলেটে বাড়ছে করোনা সংক্রমণের শঙ্কাও।

জানা গেছে, প্রথম দিকে ঢাকাতেই সিলেটের সকল নমুনা পরীক্ষা করা হত। পরবর্তীতে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষা শুরু হয়। তবে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ওসমানী থেকে রিপোর্ট আসতে দীর্ঘ সময় লাগছিল। তাই এখন শুধু সিলেট জেলায় সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষা করা হয় ওসমানী মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে।

অপরদিকে সুনামগঞ্জ জেলার নমুনা পরীক্ষা হয় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পিসিআর ল্যাবে এবং হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের পরীক্ষা হয় ঢাকার ল্যাবে।

চার জেলার সিভিল সার্জন অফিস থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে, সিলেট জেলায় নমুনা জমা পড়েছে ৮ হাজার ৩০০টি। এর মধ্যে পরীক্ষা হয়েছে মাত্র ৪ হাজার ৪৭৫টি। এখনও সিলেট জেলায় ৩৮২৫টি নমুনার রিপোর্ট আসেনি। এছাড়া সুনামগঞ্জে নমুনা সংগ্রহকৃত ৫ হাজার ১৮৬টি নমুনার মাঝে এখনও রিপোর্ট পাওয়া যায়নি ৭১২টি নমুনার।

এদিকে হবিগঞ্জে নমুনা জমা হয়েছে ৫ হাজার ১৭৫টি। এখন পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৪ হাজার ৩৫০টি। রিপোর্ট আসেনি ৮২৫টি নমুনার। আর মৌলভীবাজারে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে প্রায় ৩ হাজার। এখনও রিপোর্ট আসেনি ৬০০টির মতো নমুনার।

সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ মণ্ডল বলেন, এই মাসের ২ থেকে ১১ তারিখে যেসব নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে তা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা থেকে বৃহস্পতিবার ২৯০টি নমুনার রিপোর্ট এসেছে।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আনিসুর রহমান জানান, নমুনা জট তৈরি হওয়ায় কিছু নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। সিলেটে আরও দুটি পিসিআর ল্যাব চালুর চেষ্টা চলছে।

তিনি আরও বলেন, হবিগঞ্জ শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজের জন্য একটি এবং সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি পিসিআর মেশিন স্থাপনের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। এছাড়া জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির মাধ্যমে সিলেট বক্ষব্যাধি হাসপাতালে একটি এবং সুনামগঞ্জে একটি পিসিআর মেশিন স্থাপন করার ব্যাপারে কথা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার পর্যন্ত সিলেট বিভাগে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ১১৫ জনের। এরমধ্যে সিলেট জেলায় ১ হাজার ২৭৭ জন, সুনামগঞ্জে ৪৩৩ জন, হবিগঞ্জে ২২৭ জন ও মৌলভীবাজারে ১৭৮ জন রয়েছেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত