সদরুল আমিন, ছাতক

১১ জুলাই, ২০২০ ২০:২২

ছাতকে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি, বিপর্যস্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা

সুনামগঞ্জের ছাতকে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। প্রায় দু’সপ্তাহর ব্যবধানে ভারি বর্ষন ও পাহাড়ী ঢলে আবারো প্লাবিত হয়েছে গোটা উপজেলা। পানিবন্দি হয়ে উপজেলার ৪ লক্ষাধিক মানুষ।

শহরের প্রধান সড়কসহ অলি-গলি বানের পানি প্রবেশ করেছে। বন্যায় তলিয়ে গেছে উপজেলার বিভিন্ন রাস্তাঘাট ও মৎস্য খামার। বহু কাচা-পাকা ঘরবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, দোকান-পাঠ ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি উঠে গেছে। উপজেলা পরিষদ ও পৌর কার্যালয়ের আঙ্গিনায় বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। বন্যার পানি প্রবেশ করায় শহরের অধিকাংশ দোকান ও ব্যাসায়ী প্রতিষ্ঠািন বন্ধ রয়েছে। শহরের উপর দিয়ে চলাচল করছে ছোট-ছোট নৌকা। সুরমা, চেলা ও পিয়াইন নদীর পানি প্রবল বেগে প্রবাহিত হচ্ছে। ভারি বর্ষনের কারনে পৌর শহরসহ উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নই বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে।

এর মধ্যে ইসলামপুর, নোয়ারাই, কালারুকা ইউনিয়ন ও ছাতক পৌরসভার প্রায় সব এলাকাই বন্যায় প্লাবিত। বন্যা কবলিত মানুষ এখন চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। ছাতক-গোন্দিগঞ্জ-সিলেট, ছাতক-সুনামগঞ্জ, ছাতক-জাউয়া, ছাতক-দোয়ারা সড়কের বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে গেছে বন্যার পানিতে।

শুক্রবার রাত থেকে ছাতকের সাথে জেলা সদরসহ দেশের সকল অঞ্চলের সড়ক ও রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। প্রবল বর্ষন ও পাহাড়ি ঢলের কারনে এখানে সুরমা, চেলা ও পিয়াইন নদীর পানি ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় এখানে প্রায় ১৪০ মি.মি. বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেয়া তথ্যমতে সুরমা নদীর পানি ছাতক পয়েন্টে বিপদসীমার প্রায় ১৭০ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। চেলা নদীর পানি বিপদসীমার প্রায় ১৮০ সেন্টিমিটার এবং পিয়াইন নদীর পানি বিপদসীমার প্রায় ১৯০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবল বেগে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমা নদীর বিভিন্ন ঘাট দিয়ে ঝুকি নিয়ে ফেরী পারাপার চলছে। ইতিমধ্যে উপজেলা সদরের সাথে ১৩ টি ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বন্যার্তদের জন্য সরকারীভাবে তিনটি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

বন্যা দূর্গত মানুষদের নোয়ারাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তাতিকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চন্দ্রনাথ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে কেন্দ্র আশ্রয় নেয়ার জন্য বলা হয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ গোলাম কবির তিনটি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে জানিয়ে বলেন, বন্যার্তদের জন্য আরো ক'টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আশ্রয় কেন্দ্রের হিসেবে প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় মেডিকেল টিম গঠন সহ সবধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত