নিজস্ব প্রতিবেদক

০৮ আগস্ট, ২০২০ ১৮:৩৪

দশ বছর পর জানা গেলো নকশা ত্রুটিপূর্ণ

বিমানবন্দর-বাদাঘাট-তেমুখি সড়ক

দশ বছর আগে শুরু হয়েছিলো সিলেটের বিমানবন্দর-বাদাঘাট-তেমুখি সড়কের নির্মাণ কাজ। প্রায় ২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে কিছু অংশ নির্মাণের পর হঠাৎই বন্ধ হয়ে যায় কাজ। কাজ বন্ধ হওয়ার ব্যাপারে তখন কোনো কারণই জানায়নি সড়ক বিভাগ। ১০ বছর পর জানা এসে গেলো এই সড়কের নকশায় ত্রুটি রয়েছে।

শনিবার (৮ আগস্ট) সড়ক ও  মহাসড়ক বিভাগের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল এই সড়কটি পরিদর্শনে এসে নকশার ত্রুটির কথা জানান। এসময় তারা নকশা সংশোধন করে দ্রুত প্রেরণের জন্য সজক ও জনপথ বিভাগের সিলেট অফিসের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।

জানা যায়, দেশের অন্যতম বৃহৎ পাথর কোয়ারি সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ থেকে পাথরবাহী ট্রাক নগরীর ভেতর দিয়ে চলাচল করে যাতে যানজটের সৃষ্টি করতে না পারে তাই বিমানবন্দর-বাদাঘাট-তেমুখি সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিলো। ২০১০ সালের আগস্টে এই সড়কের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ৪৫ কোটি ৪২ লাখ ৯৬ হাজার টাকা ব্যয়ে এই সড়কের কাজ শুরু হয় ২০১১ সালে। ২৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয় করার পর ২০১৪ সালে হঠাৎ আটকে যায় এ প্রকল্পের কাজ।

এরপর এই সড়ককে চার লেনে উন্নীত করতে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। ২০১৬ সালে সেই প্রস্তাবনা পাঠানো হয় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে। পরের বছর আগের প্রস্তাবনা সংশোধন করে চার লেন সড়কের সঙ্গে দুটি সার্ভিস লেন যুক্ত করে নতুন প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এরপর বছর খানেক আগে ফের চার লেনের প্রস্তাবনা যায় মন্ত্রণালয়ে।

বিজ্ঞাপন



তবে সিলেট সড়ক বিভাগের তৈরী করা এই নকশা (ম্যাপ) ত্রুটিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের যুগ্ম প্রধান জাকির হোসেন। শনিবার তার নেতৃত্বেই সড়কটি পরিদর্শনে আসে উচ্চ পর্যায়ের দল। এসময় ত্রুটিপূর্ণ নকশার কারণে অসন্তোষ প্রকাশ করেন প্রতিনিধি দলের প্রধান। তিনি দ্রুত অভিজ্ঞ সার্ভেয়ার দল নিয়োগ করার মাধ্যমে ডিজিটাল সার্ভে (টিবিএম) দিয়ে সংশোধিত ম্যাপ তৈরি করতে সওজ'র সিলেট অফিসকে নির্দেশ প্রদান করেন। একই সঙ্গে সিলেট বিমানবন্দর এলাকায় রানওয়ে ও বিমানবন্দর সম্প্রসারণে প্রস্তাবিত ভুমি অধিগ্রহণের বিসয়টি মাথায় রেখে প্রয়োজনে সিলেট বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে ঐ এলাকার রাস্তার ম্যাপ তৈরী করার উপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

শনিবার (৮আগষ্ট) দুপুরে ঢাকা থেকে সিলেটে এসে পৌছেই প্রতিনিধি দলের সদস্যরা সিলেট বিমানবন্দর থেকে বাদাঘাট হয়ে তেমুখি পয়েন্ট পর্যন্ত সড়ক পরিদর্শন করেন। এসময় তারা এই সড়কের বিভিন্ন স্থানে দাঁড়িয়ে পুরো সড়কের রুপরেখা পর্যবেক্ষণ করেন।

প্রতিনিধি দলের প্রধান বাংলাদেশ সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের যুগ্ম প্রধান জাকির হোসেন বলেন, এ সড়কের  বাস্তব অবস্থা সরজমিন পর্যবেক্ষণের জন্য আমরা এখানে এসেছি। আমরা আমাদের পর্যবেক্ষণ সংশ্লিষ্ট দফতরে জানাবো। পূর্বের ম্যাপ সংশোধনের মাধ্যমে এই সড়কের পূর্নাঙ্গ প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি করা হবে। এতে আগামী ২-৩ মাস সময় লাগতে পারে। তিনি বলেন, আমরা যেহেতু এ রাস্তার জন্য সিলেটে এসেছি তাই অবশ্যই এ রাস্তার কাজ পূর্ণাঙ্গ হবে।

পরিদর্শনকালে প্রতিনিধি দলের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের যুগ্ম প্রধান জাকির হোসেন, উপ প্রধান শামিম উজ্জামান, সওজের রোড সেফটি স্ট্যান্ডার্ড বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তানভীর সিদ্দিকী, পরিকল্পনা বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিন রেজা, সওজ সিলেটের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আনোয়ারুল আমিন, অতিরিক্ত প্রকৌশলী তুষার সিনহা, সওজ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী রিতেশ বডূয়া।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত