বিশ্বনাথ প্রতিনিধি

২৯ আগস্ট, ২০২০ ২১:৫৭

বিধবা নারীর সম্পত্তি দখল ও হত্যার হুমকির অভিযোগে বিশ্বনাথে মামলা

পাসপোর্ট জালিয়াতি ও ভুয়া কাগজপত্র তৈরির মাধ্যমে কলছুমা বেগম (৪৫) নামের বিধবা এক নারীর সম্পত্তি দখল ও তাকে প্রাণে মারার হুমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় স্বামীর রেখে যাওয়া বসত ঘরে ঠিকে থাকতে জালিয়াতি, প্রাণনাশের হুমকি ও বসত ভিটায় ১৪৪ধারা জারির জন্যে সিলেট আদালতে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করেছেন বিধবা ওই নারী।

তিনি উপজেলার অলংকারী ইউনিয়নের আলমনগর গ্রামের মৃত মকদ্দস আলী উরফে মখন মিয়ার স্ত্রী। তার স্বামী মখন মিয়া ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ২০১২ সালের ৫ নভেম্বর আওয়ামী লীগ নেতা মকদ্দস আলী মৃত্যুবরণ করেন।

পৃথক তিনটি মামলার মধ্যে গত বুধবার (২৭ আগস্ট) সিলেট সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩নং আমলী আদালতে বিধবা কলছুমা বাদী হয়ে ‘বিশ্বনাথ সিআর-১৫৪/২০২০’ মামলা দায়ের করেছেন। আর ১৪৪ ধারা জারি জন্যে আদালতে গত ১৮আগষ্ট এবং হুমকির অভিযোগে গত ২০ আগস্ট সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩নং আমলী আদালতে কলছুমার পক্ষে তার ভাগ্নে জাবির হোসেন পৃথক এ দুটি মামলা দায়ের করেন।  (পৃথক মামলা নং বিশ্বনাথ বিবিধ মোকদ্দমা নং ১৯/২০২০ইং এবং বিশ্বনাথ সিআর মোকদ্দমা নং ১৪৯/২০২০ইং)।  এরমধ্যে ১৪৯ নং মামলাটি পিবিআইতে তদন্তাধীন রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

পৃথক তিনটি মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, আলমনগর গ্রামের মৃত ইসকন্দর আলীর ছেলে মকরম আলী উরফে গেদা মিয়া (৫০), তার স্ত্রী ছানোয়ারা বেগম (৪৫), পালোগাউ গ্রামের মৃত আপ্তাব আলীর ছেলে শানুর মিয়া (৩০), মুছেধর গ্রামের মৃত ফজলু মিয়ার ছেলে জিয়াউর রহমান (৩২), দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কাঠাদি গ্রামের আবদুল করিমের ছেলে আবদুল কাইয়ুম (২০), মনু মিয়ার ছেলে জাহিদ খান (২৪)।

বিজ্ঞাপন

মামলা সূত্রে জানা গেছে, মামলার প্রধান আসামি মকরম আলী উরফে গেদা মিয়া সিকন্দর আলীর ছেলে মকদ্দস আলী সেজে প্রতারণার মাধ্যমে পাসপোর্ট, জন্ম সনদসহ জাল কাগজপত্র তৈরি করে যুক্তরাজ্যে যান। তিনি এখন কলছুমার স্বামী মকদ্দছ আলী সেজে তার (মকদ্দছ আলীর) পৈত্রিক সম্পত্তি দখল করার জন্য বিভিন্ন কৌশলে লিপ্ত রয়েছেন। এমনকি তিন সন্তানসহ কলছুমা বেগমকে তার স্বামীর বাড়ি থেকে বের করে দিতে নিজ লোকবল দিয়ে প্রাণে মারার হুমকিও দিচ্ছেন মকরম আলী গেদা।

কলছুমা বেগম জানান, তিনি ১৯৮৯ সালের ২৮ মার্চ মকদ্দস আলী উরফে মখন মিয়ার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। দাম্পত্য জীবনে তাদের দুই কন্যা ও এক পুত্র সন্তান রয়েছে। ২০১২ সালের ৫ নভেম্বর তার স্বামী মকদ্দস আলী মৃত্যুবরণ করেন। স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে তিনি তার সন্তানদের নিয়ে স্বামীর রেখে যাওয়া পাকা দালান ঘরে বসবাস করে আসছেন। সম্প্রতি মকরম আলীর ভাগ্নে শানুর মিয়া সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে তাকে (কলছুমাকে) বাড়ি ছাড়ার হুমকি দেন। আর বাড়ি না ছাড়লে প্রাণে মারারও হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন।

এ বিষয়ে মামলার প্রধান অভিযুক্ত মকরম আলী লন্ডনে থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে, তার ভাগ্নে অপর অভিযুক্ত শানুর মিয়া ও তার ভাই জিয়াউর রহমান তাদের উপর আনিত সকল অভিযোগ মিথ্যা দাবি করেছেন। তারা উল্টো কলছুমার উপর অভিযোগ এনে বলেছেন তাদের মামা মকরম আলীর সম্পত্তি দখল করে রেখেছেন কলছুমা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত