০৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ২২:৫৪
লাউয়াছড়া বনের বনের টিলা থেকে চুরি হচ্ছে গাছ। রাতের আঁধারে কেটে নেয়া হয় বনের মূল্যবান গাছ। বনের টিলায় পড়ে আছে এসব গাছের গোড়া। লাউয়াছড়া বনের দু’টি টিলা ঘুরে এচিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিন দেখা যায়, লাউয়াছড়া উদ্যানের বাঘমারা ক্যাম্পের সম্মুখে ও মুজিবের উঠনি টিলায় গত কয়েকদিনে কেটে নেয়া হয়েছে চারটি মূল্যবান গাছ। বাঘমারা ক্যাম্পের সম্মুখের টিলায় দু’টি চিকরাশি ও একটি মেহগনি এবং মুজিবের উঠনি টিলায় কেটে নেয়া একটি চিকরাশির গাছের মোথা পড়ে থাকতে দেখা যায়। কয়েকদিন পূর্বে এসব গাছ কেটে নেয়া হয়। স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল দীর্ঘ দিন ধরে গভীর রাতে বনের ভেতর থেকে বড় বড় এসব গাছ কেটে পাচার করছে। কেটে নেয়া এসব গাছের খন্ডাংশ পিকআপ ও ঠেলাগাড়ি যোগে পাচার করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন জানান, দু’একদিন পর পরই গভীর রাতে লাউয়াছড়া বনের বিভিন্ন টিলা থেকে গাছ কেটে নেয়া হয়। একটি প্রভাবশালী সংঘবদ্ধ চক্র গাছ কেটে নেয়। ফলে এই উদ্যানটির পুরনো গাছগুলো ক্রমাম্বয়ে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বন ফাঁকা হওয়ায় হুমকির মুখে পড়ছে জাতীয় উদ্যানের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য।
লাউয়াছড়া উদ্যানটি বিরল প্রজাতির প্রাণির সংমিশ্রণে জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্ব বহন করলেও এ বনের গাছ উজাড় হওয়ার কারণে অস্থিত্ব সংকটে পড়েছে বন। বনের অবক্ষয়, খাবার ও বাসস্থান সংকটে অতিষ্ঠ প্রাণিকূল। পূর্বের মতো দিনের বেলা এখন আর বনে অন্ধকার দেখা যায় না। এতে একদিকে প্রাণির আবাসস্থল বিলুপ্ত হচ্ছে অন্যদিকে খাবার সংকটে পড়ছে বন্যপ্রাণি।
তবে গাছ পাচার বিষয়ে বাঘমারা বনক্যাম্পের প্রহরী মো. মোতাহের বলেন, আসলে গাছটি ঝড়ে পড়তে পারে। তাছাড়া কয়েকবছর পূর্বেও যে হারে গাছ চুরি হতো এখন মোটেও গাছ চুরি হচ্ছে না। গাছ চুরি রোধে আমরা কঠোর অবস্থানে আছি।
লাউয়াছড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মোনায়েম হোসেন জানান, এখানে একটি গাছ ঝড়ের কারণে পড়ে যায়। তাছাড়া আর কোন গাছ চুরি হওয়ার কথা নয়।
এ ব্যপারে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, গাছ চুরি হওয়ার মতো কোন সংবাদ পাইনি। তবে এই দুই টিলা থেকে চারটি গাছ কেটে নেয়ার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হবে।
তিনি আরও বলেন, বৃহত্তর স্বার্থে লাউয়াছড়া বনের গাছগাছালি রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। এসব বিষয়ে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।
আপনার মন্তব্য