তাহিরপুর প্রতিনিধি

২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ১৮:২৭

টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে রোপা আমন ও রবিশস্য

টানা বর্ষণে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় রোপা আমন ও সবজি চাষিরা হুমকির মুখে পড়েছেন। চলতি বছরে তিন দফা বন্যার ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতে আবারও পাহাড়ি ঢলে রোপা আমন ও রবিশস্য পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন চাষিরা।

জানা যায়, অতিরবৃষ্টি আর ঢলের কারণে তাহিরপুর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের মধ্যে বাদাঘাট, বালিজুরী, শ্রীপুর উত্তর, বড়দল উত্তর ইউনিয়নে রোপা আমন, জমি ও রবিশস্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ছোটখাটো হাওড়ে রোপণকৃত রোপা আমন ও রবিশস্যের জমিগুলোও পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪টি ইউনিয়নে প্রায় ৬হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষাবাদ হয়েছে। রবিশস্য চাষাবাদ করা হয়েছে ১ হাজার হেক্টর।

উপজেলার বাদাঘাট, বালিজুরী, শ্রীপুর উত্তর, বড়দল উত্তর এলাকার একাধিক কৃষক গ্রামের কৃষক জানান, টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে রোপণকৃত জমির অধিকাংশ ডুবে গেছে। চলতি মৌসুমে জেলায় আগাম রবি ফসল চাষ হয়েছে। উপজেলার শত শত চাষি বর্তমানে বিপাকে পড়েছে।

তাহিরপুর উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের চরগাও এলাকার এক কৃষক জানান, তিনি ২কিয়ার (৩০শতাংশ) জমিতে বেগুন, শিম, মুলাসহ বিভিন্ন সবজির চাষ করেছেন। বৃষ্টির কারণে অধিকাংশ সবজি ক্ষেতে পানি জমে গেছে। ২/১দিনের মধ্যে যদি বৃষ্টি না কমে তাহলে এসব ফসল নষ্ট হয়ে যাবে।

বিজ্ঞাপন



নাগরপুর গ্রামের চাষি আব্দুল হাকিম বলেন, ইতিমধ্যে এই অঞ্চলের অধিকাংশ চাষিই আগাম শীতকালীন সবজি চাষ শুরু করেছেন। তারা সবাই ক্ষতির মুখে পড়েছেন। সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন নীচু জমিতে চাষ করা সবজি চাষিরা।

তাহিরপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবুল হাসান জানান, বৃষ্টিতে ঢলের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ইতিমধ্যে ইউনিয়নের নাগরপুর, সোনাপুর,সোহালা এলাকাসহ আরও কয়েকটি এলাকায় সদ্য রোপণকৃত জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন নীচু জমিতে চাষ করা রোপা আমন ও সবজি চাষিরা।

স্থানীয় সাংবাদিক বাবরুল হাসান বাবলু বলেন, ৪৪ বছরে এই প্রথম দেখলাম আশ্বিন মাসে বন্যা। ছোটবেলা দেখতাম বর্ষাকালে মেঘালয় সীমান্তবর্তী জেলা গুলোতে প্রচুর বৃস্টি হতো। মাসের পর মাস বৃস্টি হলেও এ ভাবে বন্যা হতো না। এখন অল্প বৃষ্টিতেই বন্যা হয়ে যায়।

তাহিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ হাসান-উদ-দৌলা জানান, কয়েকদিনের বৃষ্টিতে পাহাড়ি ঢল আসায় উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের নিন্মাঞ্চলের তিনশত একর রোপা আমন পানিতে নিমজ্জিত আছে। ভারী বর্ষণে সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক সফর আলী বললেন, উপজেলাগুলো থেকে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ৬০হেক্টরের মতো আমন জমি পানিতে ডুবেছে। ৫-৭দিন পর্যন্ত এই চারা পানির নীচে থাকলেও নষ্ট হবে না।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত