ছাতক প্রতিনিধি

২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ১৭:০২

ছাতকে ফের বন্যায় বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত

সুনামগঞ্জের ছাতকে ফের বন্যায় প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে মাঠের পর মাঠ। গত এক সপ্তাহ ধরে টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে এখানে প্রবল বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। চতুর্থবারের মতো অকাল বন্যায় হাজার-হাজার একর রোপা আমন ধান ও ধান বীজতলা তলিয়ে গেছে। নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন এখানের কৃষকরা।

তৃতীয় দফা বন্যায় সকল বীজতলা তলিয়ে গেলে বন্যা শেষে কৃষকরা সরকারি ও বেসরকারিভাবে বীজ সংগ্রহ করে রোপা আমন ধানের চাষাবাদ করেছিলেন। চলতি এ বন্যায় রোপণকৃত সকল রোপা আমন ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় এখানের কৃষকরা অসহায় হয়ে পড়েছেন। সুরমা, পিয়াইন ও চেলা নদীসহ উপজেলার সকল নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। যেকোনো সময় ছাতকের সাথে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে পারে।

ছাতক-সিলেট সড়কের ফায়ার সার্ভিস সংলগ্ন এলাকায় বন্যার পানি ছুঁই-ছুঁই অবস্থায় রয়েছে। উপজেলার নিম্নাঞ্চল এলাকার অনেক বাড়ি-ঘর ও রাস্তাঘাটে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। সুরমা নৌ-পথে বন্ধ রয়েছে কার্গো লোড-আনলোড। ফলে বেকার হয়ে পড়েছেন শ-শ শ্রমিক। নিম্নাঞ্চল এলাকার একাধিক মৎস্য খামারও তলিয়ে গেছে বন্যার পানিতে। উপজেলার গ্রামীণ রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় অনেক স্থানে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের হিসেব অনুযায়ী, শনিবার বিকেল পর্যন্ত সুরমা নদীর ছাতক পয়েন্টে বিপদসীমার ১১৫ সে.মি. উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে উপজেলা সদরের সাথে সকল ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।

ইসলামপুর ইউনিয়নের নিজগাঁও গ্রামের জাহাঙ্গির আলম রাসেল জানিয়েছেন, ইউনিয়নের হাজারো পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। সারা ইউনিয়নের রোপা আমন ধান ও বীজতলা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এখানে নদী ভাঙনও প্রকট আকার ধারণ করেছে।

কালারুকা ইউনিয়নের কৃষক আব্দুস সত্তার, উত্তর খুরমা ইউনিয়নের কৃষক আজাদ মিয়া জানান, তাদের রোপণকৃত সকল ক্ষেত বন্যার পানিতে বিনষ্ট হয়েছে। উপজেলার ইসলামপুর, নোয়ারাই, ছাতক সদর, কালারুকা, গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও, ছৈলা আফজালাবাদ, উত্তর খুরমা, দক্ষিণ খুরমা, দোলারবাজার, ভাতগাঁও, সিংচাপইড়, জাউয়াবাজার ও চরমহল্লা ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মাঠের রোপা আমন তলিয়ে গিয়ে বিনষ্ট হয়েছে কৃষকদের শেষ সম্বল।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ তৌফিক হোসেন খান জানিয়েছেন, উপজেলায় ১৩ হাজার ১শ ১৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষাবাদ হয়েছিল। এ বন্যায় অধিকাংশ জমির ক্ষেত তলিয়ে গেছে। ৫০ হেক্টর জমির রোপা আমন ধান বিনষ্ট হয়েছে। দ্রুত বন্যার পানি কমে গেলে ক্ষতির পরিমাণ অনেকটা কমে আসবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত