সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা লাউড়েরগড় সীমান্তের শাহআরেফিন মোকাম এলাকায় বিজিবির সদস্যদের হামলা সুমন মিয়া (৯) নামে এক শিশু গুরুত্ব আহত হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে এলাকার লোকজন মিছিল করলে বিজিবির ৬-৭ রাউন্ড ফাকা গুলি ছোড়ে ও ১২টি দোকানপাট ভাংচুর করে। এতে ১৫জন আহত হয়েছে বলে জানান স্থানীয় এলাকাবাসী। এঘটনায় এলাকায় বিজিবি ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

বুধবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় এই ঘটনা ঘটে।

গুরুত্ব আহত শিশু উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের মনাইপাড় (উত্তর মুকশেদপুর) গ্রামের বাচ্ছু মিয়ার ছেলে। আহতরা হলেন, আল আমিন (৩০), আব্দুল জলিল, তার বৌ হনুফা বেগম, শফিকুল ও তার বৌ, আফাজ উদ্দিন ১৫ জন আহত হয়েছে। অন্যান্য আহতদের নাম পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, বুধবার সন্ধ্যার পূর্বে উপজেলা বাদাঘাট ইউনিয়নের লাউড়েরগড় সীমান্তের শাহ আরেফিন মোকাম এলাকায় সবার সাথে সিন্নি খেতে আসে সুমন। সিন্নি খেয়ে শাহ আরেফিন মোকাম এলাকার মোড় (লাউড়েরগড় বাজারে পথে) হয়ে যাদুকাটা নদীতে বাংলা কয়লা সংগ্রহের কাজে থাকা মা, বাবার খোঁজে আসে। এসময় বিজিবির এফএস নাইম লাউড়েরগড় বিজিবির ফোর্স শ্রমিকদের সবাইকে দাওয়া করে। তখন সবাই দৌড়ে পালিয়ে গেলে এসময় কাউতে ধরতে না পেরে সুমনকে কাছে পেয়ে দুহাতে মাথার উপর তুলে ফেলে দেন এফএস নাইম। এতে সুমন অজ্ঞান হয়ে পড়লে স্থানীয় লোকজন তাকে ঘণ্টা খানেক চেষ্টা চালিয়ে জ্ঞান ফিরাতে না পেরে মৃত ভেবে বিজিবি উপর চড়াও হলে এফএস নাইমসহ সবাই ক্যাম্পে ফিরে যায়।

এরপর স্থানীয় লোকজন বিজিবির বিরুদ্ধে মিছিল শুরু করলে লাউড়েরগড় ক্যাম্পের বিজিবির সদস্যরা শাহআরেফিন মোকাম এলাকায় মিছিলে লক্ষ্য করে ৬-৭ রাউন্ড ফাকা গুলি করে। এসময় মাজার এলাকায় ১২টি দোকানপাট ভাংচুর করে বিজিবি সদস্যরা। এতে করে ১৫ জন আহত হয়েছে বলে জানান স্থানীয় এলাকাবাসী। গুরুত্ব আহতদের সুনামগঞ্জ ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, ওই ঘটনার পর থেকে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। বিজিবি মারমুখী হয়ে পরিস্থিতি ঘোলা করেছে। বিজিবি সব সময়ই স্থানীয় চোরাচালানীদের সাথে সখ্যতা তৈরি করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করে। তাদের স্বার্থে আঘাত হলেও শ্রমিকদের মারপিট করে বার বার আহত করে। আর ভারত থেকে অবৈধ ভাবে আসা মালামাল নামে মাত্র সিজার দেখিয়ে আটক করলেও এর সাথে জড়িত কাউকেই আটক করে না। এই বিষয়ে বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দিলেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায় না। যারা অভিযোগ দিবে উল্টো তাদের উপর মামলা হয়।

এই বিষয়ে ২৮ বিজিবি সুনামগঞ্জ অধিনায়ক মাকসুদুল আলম জানান, ঘটনাটি যে ভাবে প্রচার হচ্ছে তা না। যাদুকাটা নদীতে শ্রমিকদের দাওয়া করলে সাথে থাকা শিশু সুমন বাঁশের সাথে আঘাত পেলে অজ্ঞান হয়ে পরে। তখন মানুষ মনে করে সে নিহত হয়েছে। পরে স্থানীয় লোকজন বিজিবির উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এসময় ৬-৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে বিজিবি।