নিজস্ব প্রতিবেদক

০৩ নভেম্বর, ২০২০ ২১:২৫

রায়হান হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বদলি

সিলেট নগরের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশি নির্যাতনে মারা যাওয়া রায়হান হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বদলি করা হয়েছে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সিলেটের পরিদর্শক আওলাদ হোসেনকে নতুন তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) পিবিআই সিলেটের পুলিশ সুপার মো. খালেদ উজ জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, এই মামলার আগের তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই ইন্সপেক্টর মুহিদুল ইসলাম করোনা্য় আক্রান্ত হওয়ায় আওলাদ হোসেনকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, রায়হান আহমদের বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের অভিযোগ আনা পুলিশের সোর্স সাইদুর শেখের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে মামলা হয়েছে। সৌদি রিয়েল দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে মঙ্গলবার সাইদুরের বিরুদ্ধে কতোয়ালি থানায় মামলা হয়। আফজাল হোসেন নামে জকিগঞ্জের এক ব্যক্তি এই মামলা দায়ের করেন।

সাইদুরকে গত ২৫ অক্টোবর ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করেছিলো পিবিআই। তার অভিযোগের ভিত্তিতেই গত ১০ অক্টোবর রাতে রায়হান আহমদকে নগরের কাষ্টঘর থেকে ধরে নিয়ে আসে বন্দরবাজার ফাঁড়ি পুলিশ।

বিজ্ঞাপন



পিবিআই কর্মকর্তারা জানান, গত রোববার রাতে রায়হান হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহিদুল ইসলামসহ পিবিআইর ৫ পরিদর্শকের করোনা শনাক্ত হয়। করোনা শনাক্ত হওয়ায় আইসোলেশনে রয়েছেন মহিদুল। এদিকে রায়হান হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দুই সপ্তাহের মধ্যে হাইকোর্টে দাখিল করা হবে বলে সোমবার আদালতকে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।

তাই দ্রুত মামলার তদন্ত কার্যক্রম শেষ করতে তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হলো।

প্রসঙ্গত, গত ১০ অক্টোবর মধ্যরাতে রায়হানকে তুলে নিয়ে সিলেট মহানগরের কোতোয়ালি থানার বন্দরবাজার ফাঁড়িতে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। পরদিন সকালে তিনি মারা যান। নির্যাতনের সময় এক পুলিশের মুঠোফোন থেকে পরিবারকে ফোন করে টাকা চাওয়ার অভিযোগও ওঠে। পরিবারের সদস্যরা সকালে হাসপাতালে গিয়ে রায়হানের লাশ শনাক্ত করেন। এ ঘটনার শুরুতে ছিনতাইকারী সন্দেহে নগরীর কাস্টঘর এলাকায় গণপিটুনিতে রায়হান নিহত হয়েছেন বলে প্রচার চালায় ওই ফাঁড়ির পুলিশ। কিন্তু গণপিটুনিস্থল হিসেবে যে স্থানটির কথা বলেছিল পুলিশ, সেখানে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরায় ওই রকম কোনো দৃশ্য দেখা যায়নি।

এ ঘটনায় রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগ এনে মামলা করেন।

এরপর পুলিশের তদন্তে প্রাথমিকভাবে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চারজনকে বরখাস্ত ও তিনজনকে ফাঁড়ি থেকে প্রত্যাহার করা হয়।

মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)। পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এই মামলায় এ পর্যন্ত তিন পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

রায়হান নগরীর আখালিয়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি সিলেটের স্টেডিয়াম মার্কেটে এক চিকিৎসকের সহকারি হিসেবে কাজ করতেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত