সিলেট নগরের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হান আহমদ হত্যা মামলার প্রধান অভিযুক্ত পুলিশের বহিস্কৃত উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূইয়া রিমান্ডে থাকাকালে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। অসুস্থতার কারণে শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) রাতে তাকে ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।

তবে তার অসুস্থতা গুরুতর নয় বলে জানিয়েছেন রায়হান হত্যা মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এর কর্মকর্তারা। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাতেই তাকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

পিবিআ্ই কর্মকর্তারা জানান, রিমান্ড চলাকালে শুক্রবার রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন আকবর। এরপর রাত ৯টার দিকে তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা শেষে রাত সাড়ে ৯টার দিকে পুনরায় তাকে নিয়ে যায় পিবিআই।

প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে আকবরকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রায়হান হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই'র পরিদর্শক আওলাদ হোসেন। তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।

রায়হানের মৃত্যুর ২৭ দিন পর্ গত সোমবার (৯ নভেম্বর) সকালে আকবরকে আটক করা হয়। ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সিলেটের কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত থেকে তাকে আটক করা হয় বলে জানায় পুলিশ। পরদিন ১০ নভেম্বর আকবরকে ৭ দিনের রিমান্ডে নেয় পিবিআই।

প্রসঙ্গত, গত ১০ অক্টোবর রাতে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে ধরে নেওয়া হয় রায়হান আহমদকে। পরদিন সকালে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পর পুলিশের পক্ষ থেকে প্রথমে দাবি করা হয়, ছিনতাইকালে গণপিটুনে মারা গেছেন রায়হান। তবে তার পরিবারের পক্ষ থেকে প্রথম থেকেই দাবি করা হচ্চে ফাঁড়িতে পুলিশের নির্যাতনে মারা গেছেন রায়হান। ১১ অক্টোবর রাতেই রায়হানের স্ত্রী বাদি হয়ে হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে থানায় মামলা দায়ের করেন।

এরপর মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলে ওই কমিটি নির্যাতনের প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে। ওই কমিটি দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ পেয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূইয়াসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিন সদস্যকে প্রত্যাহার করে।  ঘটনার পরপরই গা ঢাকা দেন এসআই আকবর।

এ ঘটনায় আকবর ছাড়াও আরও ৩ পুলিশ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পিবিআই।

নগরীর আখালিয়া এলাকার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে রায়হান আহমদ (৩৪) নগরীর স্টেডিয়াম মার্কেট এলাকায় এক চিকিৎসকের সহকারি হিসেবে কাজ করতেন।