কানাইঘাট প্রতিনিধি

১৪ নভেম্বর, ২০২০ ১৮:৩৩

কানাইঘাটে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

কানাইঘাট উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউপির বাখালছড়া গ্রামের রহিম উদ্দিন রমু’র পুত্র আব্দুল জব্বার বলেন, তার প্রতিপক্ষ একই গ্রামের আব্দুল হান্নানের পুত্র আব্দুল কাদির তাদের বিভিন্ন মামলার আসামি। এই কারণে পরিকল্পিত ভাবে সে ও তার সাক্ষীদের উপর ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ধর্ষণের মামলা দিয়ে তাদেরকে নানা ভাবে হয়রানীর চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।

শনিবার (১৪ নভেম্বর) বিকাল ৩টায় কানাইঘাট উপজেলা প্রেসক্লাবে এলাকাবাসীকে নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে আব্দুল জব্বার বলেন, গত ১৮ অক্টোবর আমার ছোট ভাই তৌহিদুর রহমান তোঁতা ও তার স্ত্রী ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা রোজিনা আক্তারকে আমার প্রতিপক্ষরা মারপিট করলে, এনিয়ে কানাইঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করি। মামলা দায়েরের পর আসামিরা মামলা সম্পর্কে অবগত হয়ে গত ২০ অক্টোবর বাখালছড়া গ্রামের শফিকের নেতৃত্বে বাখালছড়া গ্রামের সেলিম উদ্দিন উরফে টাইগার সেলিম, ডালিম আহমদ, আব্দুল করিম, নিজাম উদ্দিন গংরা আমার ছোট ভাই তোঁতা মিয়ার স্ত্রী ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা রোজিনা বেগমকে বেধড়ক মারপিট করে। এ সময় শফিকের নেতৃত্বে আব্দুল কাদির আমার বসতঘরে আসবাবপত্র ভেঙ্গে প্রায় ২০ হাজার টাকার ক্ষতিসাধন করে। এসময় খবর পেয়ে আমি বাড়িতে আসিয়া আমার ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রীকে মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসার জন্য উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় বিবাদীরা আমাকে বাধাগ্রস্ত করে।

এসময় আমি কানাইঘাট থানা পুলিশ নিয়ে আহত অবস্থায় আমার ভাই এবং ভাইয়ের স্ত্রীকে উদ্ধার করে কানাইঘাট হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এতে ২১ অক্টোবর রাতে রোজিনা বেগমের গর্ভপাত হয়। ডাক্তাররা জানিয়েছেন রোজিনা বেগমের প্রচুর রক্তক্ষরণে তাহার জীবন সংকটাপন্ন অবস্থায় আছে। উক্ত ঘটনায় সিলেটের আমলগ্রহণকারী আদালতে কানাইঘাট সিআর মামলা নং- ২৪১/২০২০ইং একটি মামলা দায়ের করি। এতে মামলার আসামিরা ক্ষিপ্ত হয়ে গত ৪ নভেম্বর সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আমি ও আমার মামলার সাক্ষী বাখালছড়া গ্রামের মুরব্বী আব্দুস সালাম ও হবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে, আব্দুল কাদির বাদী হয়ে তার বোন সুমানা আক্তারকে ধর্ষণের অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করে। সিলেট নারী ও শিশু মোকদ্দমা নং- ৫৫৫/২০২০ইং।

আব্দুল জব্বার বলেন, আমি বা আমার মামলার সাক্ষীরা সুমানা আক্তারের ধর্ষণের সাথে জড়িত নয়। আব্দুল কাদির পরিকল্পিতভাবে এই মামলায় আমাদেরকে আসামী করেছে। তারা আমার ছোট ভাই তৌহিদুর রহমান তোঁতার স্ত্রী রোজিনাকে মারপিট করায় তার গর্ভে থাকা অবস্থায় সন্তান মারা যায়। প্রসবের পর মৃত সন্তান জন্ম গ্রহণের ঘটনায় অভিযোগ দায়েরের পর থেকে আমাকে ও আমার সাক্ষীগণকে মিথ্যা ধর্ষণ মামলা দিয়ে আব্দুল কাদির হয়রানীর চেষ্টা করছে।

আব্দুল জব্বার বলেন, আমি বা আমার সাক্ষীগন কেউ এই ধর্ষণ মামলায় জড়িত নয়। তাই সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের প্রতি আমার অনুরোধ, প্রকৃতপক্ষে এই ধর্ষণ মামলায় যারা জড়িত রয়েছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হউক এবং সঠিকভাবে সরেজমিনে তদন্তের মাধ্যমে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হোক। এতে সরেজমিনে তদন্তের মাধ্যমে যদি আমি বা আমার সাক্ষী কেউ জড়িত হওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে আমাদেরকে আইনের আওতায় নেওয়া হউক। অন্যতায় আমাদেরকে অযথা হয়রানিমূলক মামলা থেকে অব্যাহতি প্রদান করে বিবাদী আব্দুল কাদির ও তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি ।

সংবাদ সম্মেলনে বাখালছড়া গ্রামের বিশিষ্ট মুরব্বী বীর মুক্তিযোদ্ধা সওকত আলী, আকবর আলী, আব্দুল মন্নান, জলাল উদ্দিন, হাবিবুর রহমান, আব্দুস সালাম, মানিকুর রহমান, শফিকুর রহমান, রহিম উদ্দিন রমু, তৌহিদুর রহমান, জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমুখ।

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত