ধরমপাশা প্রতিনিধি

২৯ নভেম্বর, ২০২০ ১৩:২৯

মাছ ধরতে ফসল রক্ষা বাঁধ কর্তন, ইউএনওর অভিযানে জাল জব্দ

ফাইল ছবি

সুনামগঞ্জের ধরমপাশা উপজেলার চন্দ্র সোনার থাল হাওরের হুলাসখালী ফসল রক্ষা বাঁধে অভিযান চালিয়ে বাঁধটির কেটে দেওয়া স্থান থেকে দুটি নিষিদ্ধ ভিম জাল জব্দ করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। শনিবার রাত পৌনে আটটার দিকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই অভিযান চালানো হয়। অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মুনতাসির হাসান।

উপজেলা প্রশাসন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার চন্দ্র সোনার থাল হাওরের হুলাসখালী ফসল রক্ষা বাঁধটি সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অধীনে আছে। প্রায় চার সপ্তাহ আগে মাছ শিকারের উদ্দেশ্যে রাতের আঁধারে এই ফসল রক্ষা বাঁধটির ১৫ থেকে ২০ ফুট স্থান কেটে দেয় দুর্বৃত্তরা। এর সপ্তাহখানেক পর থেকে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল বাঁধের কাটা স্থানে লোকজন নিয়োজিত করে ভিম জাল পেতে সেখান থেকে লাখ লাখ টাকার মাছ শিকার করে আসছিল।

অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ কেটে ফেলার কারণে আসন্ন বোরো মৌসুমে জমিতে সেচকাজ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকেরা। এ অবস্থায় শনিবার রাত পৌনে আটটার দিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, থানা-পুলিশ ও পাউবোর এক উপসহকারী প্রকৌশলীকে নিয়ে ওই বাঁধে অভিযানে যান ইউএনও মো. মুনতাসির হাসান। অভিযানে গিয়ে সেখান থেকে তিনি দুটি ভিম জাল জব্দ করেন। এ ছাড়া ওই ফসল রক্ষা বাঁধের অন্য কোনো স্থান মাছ শিকারের উদ্দেশ্যে যাতে কেউ কেটে না দিতে পারে, সে জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) পক্ষ থেকে গ্রাম পুলিশ দিয়ে বাঁধ রক্ষায় পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ওই বাঁধ থেকে জব্দ করা দুটি ভিম জাল উপজেলার মহদীপুর লঞ্চঘাটে এনে ওই দিন রাত সাড়ে আটটার দিকে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। এ সময় ইউএনও ছাড়া অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউপির চেয়ারম্যান আমানুর রাজা চৌধুরী, সুনামগঞ্জ পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী ও উপজেলা কাবিটা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সদস্যসচিব মো. ইমরান হোসেন, ধরমপাশা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল মাহমুদ প্রমুখ।

সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউপির চেয়ারম্যান আমানুর রাজা চৌধুরী বলেন, ‘মাছ শিকারের জন্য এই বাঁধের অন্য কোনো স্থান যাতে কেউ কেটে দিতে না পারে, সে জন্য আমি শনিবার রাত থেকে পালাক্রমে গ্রাম পুলিশ দিয়ে বাঁধ রক্ষায় পাহারার ব্যবস্থা করেছি।’

উপজেলা কাবিটা প্রকল্প বাস্তবায়ন ও পর্যবেক্ষণ কমিটির সদস্যসচিব এবং সুনামগঞ্জ পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী মো. ইমরান হোসেন বলেন, ‘স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীর কাছ থেকে বাঁধ কাটার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের তথ্য সংগ্রহ করছি। এ নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ইউএনও মো. মুনতাসির হাসান বলেন, এখানকার অধিকাংশ মানুষই হাওরের একমাত্র বোরো ফসলের ওপর নির্ভরশীল। ফসল রক্ষা বাঁধ কেটে সরকারি সম্পদ বিনষ্ট করার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক না কেন, তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত