শাকিলা ববি

২২ জানুয়ারি, ২০২১ ০১:১৪

বিদ্যুতের দক্ষিণ সুরমা গ্রিড উপকেন্দ্র: বঞ্চিত নগরের গ্রাহকরা!

দক্ষিণ সুরমায় নির্মাণাধীন বিদ্যুতের গ্রিড উপকেন্দ্রের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। চলতি বছরের মাঝামঝি সময় থেকে এই গ্রিড থেকে বিদ্যুত সঞ্চালন শুরু হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিস্টরা। তবে নতুন এই গ্রিড উপকেন্দ্র থেকে নগরের গ্রাহকরা কোনো সুফল পাবেন না বলে জানা গেছে।

অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (পিডিবি) না জানিয়ে পল্লীবিদ্যুৎকে দক্ষিণ সুরমার গ্রিডের দায়িত্ব দিয়ে দিয়েছে গ্রিড কর্তৃপক্ষ। ইতোমধ্যে পল্লীবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ তাদের নির্মাণ কাজও শুরু করে দিয়েছে গ্রিড এলাকায়।

পিডিবি ও গ্রিড মেন্টেনেস ডিভিশন (জিএমডি) সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণ সুরমার পারাইচকে নির্মানাধিন বিদুতের দক্ষিণ সুরমা গ্রিড উপকেন্দ্র চলতি বছর জুন মাসে চালু হবে। নিয়ম অনুযায়ী এই গ্রিড থেকে কে কতটি লাইন নেবেন তা নির্ধারণ করতে একটি ত্রিপক্ষীয় সভা হয়। যে সভায় পাওয়া গ্রিড কোম্পানি বাংলাদেশ (পিজিসিবি), পল্লীবিদ্যুৎ ও পিডিবির কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকেন। কিন্তু দক্ষিণ সুরমা গ্রিড উপকেন্দ্রের ক্ষেত্রে হয়েছে ব্যতিক্রম। সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করছেন, কোনো সভা না করে গ্রিড কর্তৃপক্ষ পল্লীবিদ্যুৎকে বেশিরভাগ লাইন দেওয়া হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে পল্লীবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ তাদের নির্মাণ কাজ শুরু করে দিয়েছে দক্ষিণ সুরমা গ্রিড এলাকায়।

পিডিবি সূত্রে জানা যায়, সিলেট জেলায় পিডিবির গ্রাহক আছে ২ লক্ষ ৫ হাজার। এর মধ্যে সিটির গ্রাহক আছে ১ লক্ষ ৮৬ হাজার। এই গ্রাহকদের বিদ্যুতের চাহিদা পূরণের জন্য একটি গ্রিড পর্যাপ্ত হলেও জরুরী সময়ের জন্য বিকল্প কোনো গ্রিড নেই।

এ ব্যাপারে পিডিবির প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল কবির বলেন, বর্তমান গ্রিড থেকে সিলেট নগর ও নগরের বাইরের গ্রাহকদের যে বিদ্যুৎ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে সেটা পর্যাপ্ত। তবে মূল গ্রিডে কোনো দুর্ঘটনা হলে পুরো বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পরবেন গ্রাহকরা। এরকম সময়ে দক্ষিণ সুরমা গ্রিডটি কাজে লাগানো যেতো। তবে এখন পর্যন্ত গ্রিড কর্তৃপক্ষ আমাদের সাথে আনুষ্ঠানিক কোনো সভা করেননি। নিয়ম অনুযায়ী পিজিসিবি, পল্লীবিদ্যুৎ, পিডিবি কর্তৃপক্ষ মিলে সভা করেই গ্রিডে কে কতটি লাইন নিবেন সে সিদ্ধান্ত হয়।

বিজ্ঞাপন



তিনি বলেন, আমি আজ (বৃহস্পতিবার) দক্ষিণ সুরমা গ্রিডটি পরিদর্শন করেছি। সেখানে গিয়ে দেখি পল্লীবিদুৎ কর্তৃপক্ষ তাদের নির্মাণ কাজও শুরু করেছেন। তবে এই গ্রিডে পিডিবিকে লাইন দিতে তারা বাধ্য। আমাদের জন্য জায়গাও রাখা হয়েছে বলে শুনেছি।

গ্রিড মেন্টেনেস ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জসিম উদ্দিন বলেন, আমাদের জাতীয় গ্রিড দেখে পিজিসিবি। পিজিসিবির অনেকগুলো ডিভিশন আছে। প্রতিটি ডিভিশনের নিজ নিজ দায়িত্ব আছে। আমরা শুধু গ্রিড পরিচালন ও তদারকি করি। দক্ষিণ সুরমা গ্রিডটা নির্মাণাধীন আছে। আগামী জুন-জুলাই নাগাদ এটি চালু হবে। ওইখানে পল্লীবিদুৎ সিলেট পিবিএস-১ এবং ২ এর জন্য খুব সম্ভবত জায়গা দেওয়া হয়েছে গ্রিডের ভিতরে। এটা আমাদের উচ্চ পর্যায়ে  সিদ্ধান্ত হয়েছে। তারা এখানে কন্ট্রোল বিল্ডিং নির্মাণ করবে এবং সুইচিং স্টেশন করবে।

ত্রিপক্ষীয় সভার ব্যাপারে তিনি বলেন, লোড ডিস্টিভিউশনের ব্যাপারে যৌথ কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয়। এই মিটিং ঢাকাতে হয়। তাই এই মিটিংএর ব্যাপারে আমি জানি না। এই গ্রিড থেকে পিডিবি ও পল্লীবিদুৎকে কতটুকু লোড পাবে তারা বলতে পারবেন। সাবস্টেশনে আমাদের যে ক্যাপাসিটি থাকে, সেখান কার কতটুকু ডিমান্ড আছে সেটা উনারা সিদ্ধান্ত নিবেন। আমরা শুধু বলে দেই আমাদের ট্রান্সফরমারের ক্যাপাসিটি, সাবস্টেশনের ক্যাপাসিটি আছে কি না। উনাদের চাহিদামত লোড দেওয়ার কাজটুকু আমরা করি।  লোড কে কতটুকু নিবে কারা কোন এরিয়াতে নিবে এটা উনারা যৌথ সভায় সিদ্ধান্ত নিবেন। তবে আমাদের কাছে গ্রিড মেসেজ লেভেলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কারো যদি কোনো ডিমান্ড থাকে সাবস্টেশন লোডে, সেখানে তারা আমাদের জানাতে পারেন আমরা লোড দিতে পারবো কি না। এ ব্যাপারে এখনো কোনো নোট আসেনি। তাই এ ব্যাপারে আমরাও জানি না।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত