নিজস্ব প্রতিবেদক

২৪ জানুয়ারি, ২০২১ ১২:০৪

এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ধর্ষণ : পেছাল সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ

সিলেটের মুরারি চাঁদ (এমসি) কলেজের ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে স্ত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় আদালতে বাদিপক্ষের সাক্ষীরা উপস্থিত না হওয়ায় পিছিয়েছে সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ। যার পরবর্তী তারিখ ২৭ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে।

রোববার (২৪ জানুয়ারি) সকাল ১১ টায় সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক  মো. মোহিতুল হকের আদালতে এ তারিখ নির্ধারণ করেন। এসময় মামলায় গ্রেপ্তারকৃত এজাহারনামীয় ৮ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

নারী ও  শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল পিপি রাশিদা সাঈদা খানম সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, বাদিপক্ষের আইনজীবী সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও ছিনতাই মামলা এক‌ই আদালতে একসাথে বিচার কাজ শুরু করার আবেদন করেন। বিচারক তা খারিজ করে আগামী তারিখে সাক্ষী হাজির করার নির্দেশ দেন।

এর আগে গত ১৭ জানুয়ারি অভিযোগ গঠন করে আজ ২৪ জানুয়ারি প্রথম গ্রহণের সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করেছিলেন আদালত। এর আগে গত ৩ ডিসেম্বর সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আবুল কাশেমের আদালতে ৮ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য।

এতে সাইফুর রহমানকে প্রধান করে ছয় জনের বিরুদ্ধে সরাসরি ধর্ষণে জড়িত থাকা এবং অপর দুই জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহায়তার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

পরে ১৭ জানুয়ারি সকাল ১১ টায় কড়া নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে মামলার পুলিশ এজাহারভুক্ত মামলার ৮ আসামিকে আদালতে হাজির করলে সকল আসামির উপস্থিতেই মামলার অভিযোগ গঠন করেন আদালত।

অভিযোগপত্রে সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, তারেকুল ইসলাম তারেক, অর্জুন লস্কর, আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল, মিসবাউল ইসলাম রাজন মিয়া, রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান মাসুমকে আসামি করা হয়।

পরে ৩ জানুয়ারি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে চাঞ্চল্যকর এই মামলার অভিযোগ গঠনের তারিখ ছিলো। এদিন বাদীর পক্ষে আদালতের কাছে সময় প্রার্থণা করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ২৫ সেপ্টেম্বর সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রবাসে স্বামীকে আটকে রেখে নববধুকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। ঘটনার রাতেই নির্যাতিতার স্বামী বাদী হয়ে নগরের শাহপরান থানায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে স্বামীকে নিয়ে শাহপরান মাজারে বেড়াতে গিয়েছিলেন নির্যাতনের শিকার তরুণী (২৫)। ফেরার সময় তারা গাড়ি থামিয়েছিলেন নগরের টিলাগড় এলাকার এমসি কলেজের প্রধান ফটকের সামনে। স্ত্রীকে প্রাইভেটকারে রেখে স্বামী পাশ্ববর্তী দোকানে গিয়েছিলেন। ওইসময় প্রাইভেটকারটি ঘিরে ধরে কয়েকজন তরুণ। প্রাইভেটকারসহ ওই দম্পতিকে তারা নিয়ে যায় বালুচর এলাকার এমসি কলেজ ছাত্রাবাসের ভেতরে। সেখানে স্বামীর সামনেই গাড়ির ভেতর সংঘবদ্ধভাবে তরুণীকে ধর্ষণ করে ৬ তরুণ। পরে তাদের মারধর করে টাকা পয়সা ছিনিয়ে নেয় ধর্ষকরা। আটকে রাখে তাদের গাড়িও।

ঘটনার পর আসামিরা পালিয়ে গেলেও ৩ দিনের মধ্যে ৬ আসামিসহ সন্দেহভাজন আরও ২ জনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব ও পুলিশ। সন্দেহভাজন দুই গ্রেপ্তারকৃত হলেন- আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল ও মিসবাউল ইসলাম রাজন মিয়া। গ্রেপ্তারের পর তাদের প্রত্যেককে ৫ দিন করে রিমান্ডে নেয় পুলিশ। রিমান্ড শেষে সকলেই দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত