নিজস্ব প্রতিবেদক

১৬ ফেব্রুয়ারি , ২০২১ ১৩:০০

সিলেটে শায়খ আব্দুর রাজ্জাকের ওপর হামলায় কারা?

ইসলামী বক্তা শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফের গাড়িতে হামলার এই ছবিটি ফেসবুক থেকে নেয়া

সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে ইসলামি বক্তা শায়খ আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফের ওপর হামলার ঘটনায় এখনও কোনো মামলা হয়নি।

ফেঞ্চুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাফায়েত হোসেন জানান, হামলার ঘটনা ঘটলেও কেউ অভিযোগ না করায় মামলা হয়নি; নেই আটকও।

ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার মল্লিকপুরে গেল রোববার দুপুরে এই হামলার ঘটনা ঘটে। কারা এই হামলা চালিয়েছে তাও জানানতে পারেননি ওসি।

তবে ইসলামি সংগঠন বাংলাদেশ তালামীযে ইসলামিয়ার নেতা-কর্মীরা এই হামলায় জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও তালামীযে ইসলামিয়ার নেতারা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

মল্লিকপুর এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রবীণ জানান, ইসলামের যে চারটি মাজহাব আছে তা আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ ও তার অনুসারীরা মানেন না। তাদের বলা হয় লা-মাহজাবি। এ কারণে স্থানীয় ইসলামপন্থিদের একটি অংশ তাদের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন বরাবরই।

তিনি বলেন, মল্লিকপুরে লা-মাহজাবির কিছু লোক রোববার দুপুরে গ্রামের মসজিদ আল ফুরকানে ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করে। এর প্রধান অতিথি ছিলেন আব্দুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ। ওয়াজ মাহফিলকে ঘিরে কয়েক দিন ধরেই উত্তেজনা চলছিল এলাকায়।

ওই প্রবীণ আরও জানান, উপজেলা মুসলিম ছাত্র-জনতার ব্যানারে এই ওয়াজ মাহফিল বন্ধে উপজেলা প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপিও দেয়া হয়। অপ্রীতিকর পরিস্থিতির আশঙ্কায় পুলিশের পক্ষ থেকে আব্দুর রাজ্জাককে ফেঞ্চুগঞ্জ আসতে বারণ করা হয়। তবে আপত্তি উপেক্ষা করেই তিনি ফেঞ্চুগঞ্জে আসেন।

রোববারের ঘটনার একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, মল্লিকপুর এসে জোহরের নামাজ পড়েন আব্দুর রাজ্জাক। নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বের হওয়ার পরপরই একদল লোক তার গাড়িতে হামলা করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অর্ধশতাধিক লোক লাঠিসোটা নিয়ে এই হামলা চালায়। তারা আব্দুর রাজ্জাকের গাড়ি ভাঙচুর করে। পরে বিক্ষুব্ধ লোকজন হামলাকারীদের ওপর চড়াও হয়। পুড়িয়ে দেয়া হয় হামলাকারীদের তিনটি মোটরসাইকেল। স্থানীয়দের মারধরে তালামীযে ইসলামিয়ার তিন কর্মী আহতও হন।

এই হামলার ভিডিও সোমবার ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আহমদ জুবায়ের বলেন, ‘নিষেধ উপেক্ষা করে আব্দুর রাজ্জাকের এলাকায় আসা ঠিক হয়নি। আবার তার ওপর হামলাও অন্যায় হয়েছে। আমরা এ ধরনের কাজকে সমর্থন করি না।’


তালামীযে ইসলামীয়ার অঙ্গসংগঠন আল ইসলাহের ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি মাওলানা হারুনুর রশীদ বলেন, ‘রাজ্জাকের গাড়িতে হামলার ঘটনায় তালামীয সংগঠনের কোনো কর্মী জড়িত নয়; বরং আমাদের কর্মীদের ওপর হামলা করা হয়েছে।’

তিনি দাবি করেন, হামলায় তাদের পাঁচ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।

ফেঞ্চুগঞ্জ থানার ওসি শাফায়েত বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে ও আবদুর রাজ্জাককে উদ্ধার করে। তবে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত কোনো পক্ষ থানায় অভিযোগ দেয়নি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত