নিজস্ব প্রতিবেদক

২৬ ফেব্রুয়ারি , ২০২১ ১৫:২০

দুর্ঘটনার পর আধঘন্টা বাসের ভেতরেই ছিলেন আহতরা

রশিদপুরে দুর্ঘটনা

শুক্রবার সকালে দুর্ঘটনার খবর শুনে ঘুম ভাঙ্গে সিলেটবাসীর। সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের রশিদপুরে দুটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণ যায় ৮জনের। এতে আহত হন আরও প্রায় ২০ জন।

দুর্ঘটনায় আহতরা সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

আহত কয়েকজনের সাথে কথা বলেছে সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর।

তারা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পর আধঘন্টা বাসের ভেতরেই ছিলেন তারা। পরে তাদের চিৎকারে আশপাশের এলাকার লোকজন এগিয়ে আসেন। এরপর ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করেন।

শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে দক্ষিণ সুরমার রশিদপুরের সেতুর পাশে লন্ডন এক্সপ্রেস ও এনা পরিবহণের দুটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে।

আহত যাত্রীদের অভিযোগ, দুই বাসই বেপোরোয়া গতিতে চলছিলো। এর মধ্যে লন্ডন এক্সপ্রেসের চালক ছিলেন অধিক বেপোরোয়া।

দুর্ঘটনা কবলিত বাসের যাত্রী সুহেল আহমদ বলেন, দুর্ঘটনার পর প্রায় আধঘন্টা আমরা বাসের ভেতরে আটকা ছিলাম। আমার শরীর থেকে রক্ত ঝরছিলো। অনেকে হতাহত হয়ে পড়ে আছে। চিৎকার করছে। কিন্তু আশপাশে কাউকে পাওয়া যায়নি।

তিনি বলেন, প্রায় আধঘন্টা পর আমাদের চিৎকার শুনে প্রথমে স্থানীয়রা এগিয়ে আসেন। পরে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন গিয়ে উদ্ধার করে।

বিজ্ঞাপন



সিলেট মহানগর পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনার শিকার এনা বাসে ৮ যাত্রী ছিলেন। এছাড়া চালক-সুপারভাইজার ছিলো মোট আরোহী ছিলেন ১১ জন। এছাড়া লন্ডন এক্সপ্রেসে যাত্রী ছিলেন ২৮ জন। এছাড়া চালক-সুপারভাইজার ছিলেন আরও ৩ জন।

লন্ডন এক্সপ্রেসের বেঁচে যাওয়া এক যাত্রী জানান, ঢাকা থেকে আসার পথে বার বার গাড়ির চালক অন্য গাড়িকে বেপরোয়া গতিতে ওভারটেক করছিলেন। কয়েকবার আমরা সতর্ক করার পরও চালক আমাদের কথা শুনেননি। যে কারণে এমন মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটেছে।

দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে ঘটনাস্থল থেকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, সিলেটের উপ পরিচালক কোবাদ আলী সরকার বলেন, গাড়ি সবসময় রাস্তায় বাঁ পাশ দিয়ে চলার কথা। কিন্তু দুর্ঘটনা কবলিত লন্ডন এক্সপ্রেস বাঁ পাশ ছেড়ে ডান পাশে চলে যায়। ডান পাশে গিয়ে বিপরীত দিক থেকে আসা এনা বাসকে ধাক্কা দেয়।

তিনি বলেন, শুক্রবার সকালে খুব বেশি কুয়াশা ছিলো না। ধারণা করছি, ব্রিজ ক্রস করতে গিয়ে লন্ডন এক্সপ্রেসের চালক স্ট্রিয়ারিংয়ের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। এতে বাসটি ভুল ট্র্যাকে চলে যায়। একারণেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। তবে দুর্ঘটনার আসল কারণ পরবর্তীতে তদন্তে জানা যাবে।

এই দুর্ঘটনায় ৮ জন নিহত হয়েছেন। এতে নিহতরা হলেন- সিলেটের উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক আল মাহমুদ সাদ ইমরান খান (৩৩), এনা পরিবহনের বাসেরচালক ওসমানীনগর উপজেলার ধরখা গ্রামের মঞ্জুর আলী (৩৮), এনার সুপারভাইজার সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার মিঠাভরা গ্রামের সালমান খান (২৫), হেলপার ধরখা গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেন (২৪), বি বাড়িয়ার সরাইল থানার রাজানিয়াকান্দি পশ্চিম পাড়ার নুরুল আমিন (৫০), ঢাকার ওয়ারি এলাকার নাদিম আহমদবসাগর (২৯) ও সিলেট নগরের আখালিয়া এলাকা শাহ কামাল (২৭), সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার বাংলাবাজার এলাকার রহিমা খাতুন (২৬)।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত