নিজস্ব প্রতিবেদক

২০ মার্চ, ২০২১ ২২:৪১

দিনব্যাপী সিলেট বইমেলায় হাজারো পাঠকের ভিড়

হাজারো পাঠকের ভিড়ে মুখর ছিল সিলেট বইমেলা। শনিবার নগরের চৌহাট্টা এলাকার সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দিনব্যাপী এ বইমেলা হয়। প্রথম আলো বন্ধুসভার আয়োজনে ষষ্ঠবারের মতো এ মেলা হয়। অন্যান্য বছর পক্ষকালব্যাপী আয়োজন থাকলেও এবার করোনাপরিস্থিতিতে তা দিনব্যাপী হয়েছে।

বইমেলায় ঢাকা, সিলেট ও চট্টগ্রামের ১৭টি প্রকাশনাসংস্থা ও বইয়ের বিপণনপ্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। বেলা ১১টা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত মেলা চলে। দিনব্যাপী আয়োজনে শিশু-কিশোরদের আবৃত্তি ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার পাশাপাশি আলোচনা পর্ব, গুণীজন সম্মাননা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বইয়ের মোড়ক উন্মোচন হয়। মেলা আয়োজনে সহযোগিতায় ছিল সিলেট সিটি করপোরেশন।

বেলা তিনটায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে মেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর ছন্দ নৃত্যালয়, মুক্তক্ষর ও প্রথম আলো বন্ধুসভার শিল্পীরা সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেয়। একক সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী সবিনয় সরকার ও ¯েœহা দাস। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন প্রথম আলো বন্ধুসভা সিলেটের সভাপতি তামান্না ইসলাম। পরে বেলা সাড়ে চারটায় আলোচনা সভা হয়।

আলোচনা পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। বক্তব্য দেন সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আল আজাদ, দৈনিক সিলেট মিরর-এর সম্পাদক আহমেদ নূর, কবি এ কে শেরাম, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সভাপতি মিশফাক আহমদ চৌধুরী, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সিলেটের বিভাগীয় প্রতিনিধি শামসুল আলম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক গৌতম চক্রবর্তী।

অনুষ্ঠানে সুনামগঞ্জের বাসিন্দা কবি ইকবাল কাগজীকে সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করা হয়। এ সময় তার হাতে সম্মাননা-স্মারক ও নগদ ১০ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়। আলোচনা পর্বের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলো সিলেটের নিজস্ব প্রতিবেদক উজ্জ্বল মেহেদী। অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন প্রথম আলোর সিলেট প্রতিনিধি সুমনকুমার দাশ।

সভায় বক্তারা বলেন, সিলেট বইমেলা এখন প্রাণের মেলায় পরিণত হয়েছে। লেখক-পাঠকের সম্মিলনে এ বইমেলা এখন সর্বজনীন এক মেলায় পরিণত হয়েছে। এবার সংক্ষিপ্ত পরিসরে মেলা হওয়ায় পাঠকদের মধ্যে আক্ষেপ তৈরি হয়েছে।

আলোচনা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে মঞ্চে সিলেটের সাহিত্য-সংস্কৃতি অঙ্গনের বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে উদীচী সিলেটের সভাপতি এনায়েত হোসেন মানিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মু. আনোয়ার হোসেন রনি, রজতকান্তি গুপ্ত ও হুমায়ূন কবির জুয়েল, বিশিষ্ট আইনজীবী গোলাম সোবহান চৌধুরী দীপন, বিশিষ্ট সাংবাদিক আবদুর রশিদ রেনু, মুক্তাদীর আহমদ ও ছামির মাহমুদ, বাপা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম কিম, লেখক বিধূভূষণ ভট্টাচার্য, সঞ্জয় কুমার নাথ ও প্রণবকান্তি দেব, এসিড সন্ত্রাস নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক জুরেজ আব্দুল্লাহ প্রমুখ।

পরে আবৃত্তি ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় চারটি ক্যাটাগরিতে বিজয়ী ২৪ জনের হাতে পুরস্কার হিসেবে বই ও সার্টিফিকেট তুলে দেওয়া হয়। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় প্রায় শতাধিক প্রতিযোগী অংশ নেয়। আলোচনা শেষে সাংস্কৃতিক পর্বে উজান, থিয়েটার মুরারি চাঁদ ও সাদা কাক দলীয় পরিবেশনায় অংশ নেয়। একক সংগীত পরিবেশন করেন বাউল বশিরউদ্দিন সরকার, শিল্পী ইকবাল সাঁই ও লিংকন দাশ প্রমুখ। সবশেষে ছিল বেশ কিছু নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন।

এবারের মেলা উৎসর্গ করা হয়েছিল সদ্যপ্রয়াত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও অনুবাদক নিজামউদ্দিন লস্কর ময়নাকে। মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে প্রথমা, কথাপ্রকাশ, উৎস প্রকাশন, অন্বেষা প্রকাশন, চৈতন্য, নাগরী, বাসিয়া প্রকাশনী, শ্রীহট্ট, ঘাস প্রকাশন, পা-ুলিপি প্রকাশন, পাপড়ি, অক্ষরবৃত্ত, জসিম বুক হাউস, মালঞ্চ, সিলেট বুক সেন্টার, মারুফ লাইব্রেরি ও নাজমা বুক ডিপো।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত