শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি

১৯ জুলাই, ২০২১ ১৯:১৬

স্ত্রী ও সন্তানের সাথে আর দেখা হলো না হোসেন মিয়ার

স্ত্রীকে ৫ মাসের অন্ত:সত্বা রেখে দুই বছর আগে প্রবাসে পাড়ি জমিয়েছিলেন হোসেন মিয়া। দেড় বছর পূর্বে তার স্ত্রীর গর্ভে জন্ম নিয়েছিলো একটি ফুটফুটে শিশু। করোনাসহ নানা কারনে বিদেশ (আরব আমিরাত) থেকে আসতে পারছিলেন না হোসেন। ছোট ছেলেকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন বুনেছিলেন তিনি।

দেশে আসলে ছেলের জন্য অনেক কিছু নিয়ে আসবেন। সেই স্বপ্ন টা ভেঙ্গে গিয়েছে প্রবাসী হোসেন মিয়ার। রোববার এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তার দেড় বছরের শিশু মোজাহিদ ও স্ত্রী আকলিমা (৩০) মারা গেছেন।

ঘটনাটি মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের আশিদ্রোন ইউনিয়নের ভুজপুর গ্রামের। রোববার দুপুরে উপজেলার ঢাকা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের শাহজীবাজার এলাকায় তেলবাহী ট্যাংক লরীর সাথে সিএনজি চালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষের হাসপাতালে নিয়ে গেলে মারা যান তারা। এই সড়ক দুর্ঘঘটনায় পার্শবর্তী এলাকার সুফিয়া বেগম (৪০) ও আব্দুল হাই (২৭) গুরুতর আহত হয়েছিলেন তারা এখন মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

পুলিশের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত রোববার দুপুরে ১২টার দিকে হবিগঞ্জ থেকে শ্রীমঙ্গলের দিকে আসা তেলবাহী ট্যাংক লরী (ময়মনসিংহ-ঢ- ১১-০০১৩)  এর সাথে শ্রীমঙ্গল থেকে সাতগাঁওগামী সিএনজি অটোরিকশা (মৌলভীবাজার থ- ১২- ৭২৩১) এর সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এই ঘটনায় চারজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
সেখানে তাদের অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। শিশু মোজাহিদ মিয়ার অবস্থা গুরুতর আশংকাজনক হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হলে বিকেলে রাস্তায় তার মৃত্যু হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আকলিমা বেগম মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে বিকেলের দিকে মারা যান।
 
সোমবার আকলিমার বাড়িতে গেলে তার প্রতিবেশীরা বলেন, প্রায় ১০ বছর আগে তাকে কুমিল্লা থেকে বিয়ে হয়ে শ্রীমঙ্গলে আসেন আকলিমা। আকলিমা কুমিল্লার কসবার ভোটার ছিলো। গতকাল রোববার আকলিমা তার দেড় বছরের ছেলেকে নিয়ে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে শ্রীমঙ্গল শহরে গিয়েছিলো। আসার সময় এক্সিডেন্ট করে সে মারা গেছে। তার ১০ বছর ও ৭ বছরের দুই ছেলে ও ৫ বছরের এক মেয়ে রয়েছে।

শ্রীমঙ্গল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কারকুন বলেন, মা ও পুত্রের লাশ মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল মর্গ থেকে বাড়িতে নিয়ে গেছে পরিবারের লোকজন। দাফন কাজ হচ্ছে। পরিবারের তরফ থেকে কোন মামলা এখনো দায়ের করা হয়নি। তেলবাহী ট্যাংক লরীর চালক ও সিএনজির চালক ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন। তাদের খুঁজে বের করতে পুলিশের অভিযান চলছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত