চামড়ার দাম কমেছে। বেড়েছে প্রক্রিয়াজাতকরণের খরচ। তাই চরমড়া সংগ্রহে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন ব্যবসায়ীরা। এতে কোরবানির চামড়া নষ্ট হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। যত্রতত্র চামড়া ফেলে দিলে নগরজুড়ে আবর্জনা ও দুর্গন্ধও ছড়িয়ে পড়বে।

এ অবস্থায় নিজেরাই চামড়া পক্রিয়াজাতকরণের উদ্যোগ নিয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। এজন্য নগরের অদূরে দক্ষিণ সুরমার পারাইচকে খোলা হয়েছে অস্থায়ী প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র। এখানে যে কেউ চামড়া নিয়ে আসলে বিনা খরচে প্রক্রিয়াজাত করে দিচ্ছে সিসিক।

সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানান, জাতীয় সম্পদ চামড়া সংরক্ষণ, বিক্রয়-বিপনন সুবিধা নিশ্চিত এবং নগরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ চামড়া নষ্ট হবে না এবং নগরের রাস্তাঘাটো যত্রতত্র চামড়া ফেলে পরিবেশের ক্ষতিও ঠেকানো যাবে।

সিলেট সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. হানিফুর রহমান বলেন, গতবছরও দাম না পেয়ে অনেকে চামড়া ফেলে দিয়েছেন। এছাড়া নগরের যত্রতত্র পক্রিয়াজাতকরণ ছাড়াই চামড়া বিক্রি করতে দেখা গেছে। এতে পরিবেক্ষ মারাত্মভাবে ক্ষতি হয়।

তিনি বলেন, চমড়া নষ্ট হওয়া হ্রাস এবং নগরের পরিবেশ রক্ষায় সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর নির্দেশে বিনামূল্যে চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের উদ্যোগ নিয়েছে সিসিক। এজন্য পারাইচকে প্রকিয়াজহাতকরণ কেন্দ্র খোলা হয়েছে। বুধবার ঈদের দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় এক হাজার চামড়া প্রক্রিয়াজাত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এবছর আমরা প্রক্রিয়াজাতকরণ ছাড়া নগরের কোথাও চামড়া বিক্রি করতে দিচ্ছি না। অন্যবছর নগরের রেজিস্টারি মাঠে প্রক্রিয়াজাতহীন চামড়া নিয়ে রীতিমত মেলা বসে যেতো। পরিবেশের সুরক্ষায় এবছর কাউকে সে সুযোগ দেওয়া হয়নি।

এ বছর সিলেটে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ পশু কোরবানি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন সিলেট জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রুস্তম আলী।

তবে নানা সঙ্কটে এই বিপুল সংখ্যক চামড়া এবার সংগ্রহ করা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা লাখখানেক চামড়া সংগ্রহ করবেন বলে জানিয়েছেন। ফলে কোরবানি দেওয়া কোরবানি দেওয়া আরও প্রায় ৩ লাখ পশুর চামড়া নষ্ট হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

সিলেটের সিলেট শাহজালাল চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শামীম আহমদ জানান, দাম কমে যাওয়া, লকডাউন, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাব, পরিবহন সমস্যা, ট্যানারিমালিকদের বকেয়া পরিশোধে গড়িমসিসহ নানা জটিলতার কারণে চামড়া ব্যবসায় আগ্রহ নেই ব্যবসায়ীদের। আমরা এবার লাখখানেক চামড়া সংগ্রহ করতে পারি।

সিলেট সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. হানিফুর রহমান বলেন, চামড়া প্রকিয়াজাতকরণের পাশাপাশি কোরবানির বর্জ্য অপসারণেও কাজ করছে সিসিক। অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি নিয়ে প্রায় দুই হাজার কর্মী দুপুর থেকে পরিচ্ছন্নতার কাজ করে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে প্রায় ৮০ ভাগ বর্জ্য অপসারণ শেষ হয়ে গেছে।

হানিফ বলেন, নগরের মোড়ে মোড়ে সিটি করপোরেশনের কর্মীরা আছেন। যেখানেই নতুন করে বর্জ্য ফেলা হবে তারা তা অপসারণ করবে। বুধবার রাতের মধ্যেই পুরো নগরীকে কুরবানির বর্জ্যমুক্ত করা হবে।

বর্জ্য অপসারণের পাশাপাশি পরিবেশ সুরক্ষা ও দূষণমুক্ত রাখার লক্ষ্যে সিটিতে ব্লিচিং পাউডার ও তরল জীবাণুনাশক ছিটানো হচ্ছে বলে জানান মো. হানিফুর রহমান।