নিজস্ব প্রতিবেদক

২২ নভেম্বর, ২০১৫ ১৬:১০

ফাঁসিতেই সমাধান নয়, মগজ ঠিক করতে হবে: অধ্যাপক সালেহ উদ্দিন

সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মামলার অন্যতম সাক্ষী অধ্যাপক মো. সালেহ উদ্দিন বলেছেন, কেবল কয়েকটা ফাঁসি দিয়েই সকল সমস্যার সমাধান হবে না। আমরা একটা বড় ধরণের বিপদের মধ্যে আছি। মানুষের মগজ ঠিক করতে না পারলে সঙ্কট থেকে থেকে উত্তরণ অসম্ভব।

যুদ্ধাপরাধী সাকা চৌধুরীর ফাঁসি কার্যকরের পর সিলেটটুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমকে দেওয়া সাক্ষাতকারে সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ উদ্দিন এমন মন্তব্য করেন। অধ্যাপক সালেহ উদ্দিন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়েরও উপাচার্যের দায়িত্বে ছিলেন।

সাকা চৌধুরীর ফাঁসি কার্যকর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি খুশি। তবে উচ্ছ্বসিত নই। ফাঁসি কার্যকরের ফলে মিছিল করে উল্লাস প্রকাশ করার মতো কিছু নেই। কারণ আমাদের আরো অনেক কাজ বাকী আছে।

সালেহ উদ্দিন বলেন, সাকা চৌধুরীর মামলার একজন সাক্ষী হিসেবে রায় কার্যকর হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই আমি খুশি। এতে নির্যাতিত পরিবারগুলো কিছুটা শান্তি পাবে। তাছাড়া বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি তা থেকেও উত্তরণ ঘটবে। কিন্তু এতে মৌলিক সমস্যার সমাধান হবে না। ১০/২০ টা ফাঁসি দিয়ে এই গোষ্ঠিকে উৎখাত করা সম্ভব নয়।

এই মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষাবিদ বলেন, আমরা অনেক বড় বিপদের মধ্যে আছি। এই সঙ্কট থেকে উত্তরণের জন্য অনেক দূরে যেতে হবে। মানুষের মগজ ঠিক করতে হবে। দেশের মানুষকে আধুনিক ও বিজ্ঞান শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে হবে। মানুষ শিক্ষিত না হলে, মগজ ঠিক না হলে ধর্মের অপব্যবহার আরো বাড়বে। যুক্তি ও বিজ্ঞান মানবে না। ভিন্নমত সহ্য করবে না। অশিক্ষিত-অন্ধকার সমাজেই ধর্ম নিয়ে হানাহানি বেশি হয়।

সালেহ উদ্দিন বলেন, এখন কোনো কিছু বললেই যদি তা কোনোভাবে ধর্মের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে যায় তখন তাকে নাস্তিক আখ্যা দেওয়া হচ্ছে। ধর্মানুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ তোলা হচ্ছে। হত্যা করা হচ্ছে। কেবল ফাঁসি দিয়ে তো এই সমস্যাগুলো সমাধান করা যাবে না।

তিনি বলেন, আমি যদি এখন ইতিহাস নিয়েও লিখি তার তা যদি কোনভাবে কোনো ধর্মের ইতাহাসের সাথে সামান্যতম সাংঘর্ষিক হয় তখন আর রক্ষে নেই।

এই উগ্র ধর্মান্ধতা মোকাবেলায় রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছা নিয়েও প্রশ্ন তুলেন সালেহ উদ্দিন। এছাড়া বুদ্ধিভিত্তিতক গোষ্ঠির নির্লিপ্ততার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের কাছে নিজেদের প্রাণ বড় মায়ার জিনিস। কোনো কিছু বলে আমরা নিজের প্রণটাকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে চাই না। তাছাড়া আমরা কার জন্য মরবো? আমাদের কথা শোনার মতো রাজনৈতিক দল কই?

আপনার মন্তব্য

আলোচিত