গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি

০২ আগস্ট, ২০২১ ১৯:১৭

গোলাপগঞ্জে বাঘা হাতালী মাঠের ‘নাম ডাকাতির’ প্রতিবাদ অব্যাহত

সিলেট জেলার বৃহত্তম ঐতিহ্যবাহী খেলার মাঠ বাঘা হাতালীর ‘নাম ডাকাতির’ প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে। কয়েক সপ্তাহ ধরে বাঘা ইউনিয়নবাসি নানা প্রতিবাদী কর্মসূচী পালন করছেন।

রোববার (১ আগস্ট) ‘বাঁচাও হাতালী ও হাতালী মাঠ সংরক্ষণ কমিটি’ বাঘা'র আয়োজনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাঘা ইউনিয়নের শত শত মানুষের উপস্থিতিতে প্রতিবাদ সভায় আন্দোলন আরও বেগবান করতে ১০১ জন বিশিষ্ট নাগরিকদের নিয়ে ‘বাঁচাও হাতালী ও হাতালী মাঠ সংরক্ষণ কমিটি’ গঠন করা হয়।

এলাকার প্রবীণ ব্যক্তিত্ব হাজী আতাউর রহমানের সভাপতিত্বে ও আব্দুল আলিম শাহ’র সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে রাজনীতিক ব্যক্তিত্ব হুমায়ূন ইসলাম কামালকে আহবায়ক করে বৃহত্তর বাঘা ইউনিয়নের ১০১ জন বিশিষ্ট নাগরিকদের নিয়ে আন্দোলন কমিটি গঠন করা হয়।

‘বাঁচাও হাতালী ও হাতালী মাঠ সংরক্ষণ কমিটি’র আহবায়ক হুমায়ূন ইসলাম কামাল বলেন, ঐহিত্যবাহি হাতালী মাঠের নাম কোন ব্যক্তির নামে হতে পারে না। এই জমি খেলার মাঠ শ্রেণীর। সরকারি এই খেলার মাঠের নাম ডাকাতির তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি আমরা। আমরা এই মাঠ পূর্বাবস্থা ফিরিয়ে আনতে সর্বাত্মক আন্দোলনে রয়েছি।

বাঁচাও হাতালী আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল আলিম শাহ বলেন, সিলেট জেলা প্রশাসকের নিয়ন্ত্রণাধীন হাতালী খেলার মাঠ কি করে কথিত শিল্পপতি গোলাম রব্বানী চৌধুরী তার মৃত বাবার নামে ‘গোলাম মোস্তফা চৌধুরী খেলার মাঠে’ রূপান্তর করে! এতো বড় দুর্নীতির খবর প্রকাশিত হওয়ার পরও প্রশাসনের নীরবতায় এলাকাবাসী হতাশ। প্রায় ৩০ হাজার জনসংখ্যার বাঘা ইউনিয়নের একমাত্র সরকারি খেলার মাঠ হাতালী উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত বাঘাবাসি আন্দোলন অব্যাহত রাখবে বলেও জানান তিনি।

চলমান জরিপে কথিত শিল্পপতি গোলাম রব্বানী চৌধুরী ভূমি জরিপ কর্মকর্তাদের সাথে যোগসাজশে জেলা প্রশাসকের নামাধিন ৩ নম্বর বাঘা মৌজার অর্ন্তগত ১ নম্বর সরকারি খাস খতিয়ান ভুক্ত খেলার মাঠ শ্রেণীর ৭.৬৪ একর ভূমির মাঠটি তার মৃত বাবা ‘গোলাম মোস্তফা চৌধুরী খেলার মাঠ’ নামে রেকর্ড করিয়ে নেয়। এতে এলাকাবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে আন্দোলন গড়ে তুলেছেন।

এদিকে সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মো. ছাদেকুর রহমান জানান, গত ২৯ তারিখ সরেজমিনে তদন্তপূর্বক উপজেলার সহাকারি ভূমি কমিশনার বরাবরে প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। তিনি জানান, ‘জরিপ কার্যের তসদিক পর্যায়ে সরকার পক্ষকে কোনরূপ নোটিশ প্রদান না করে পর্চার মন্তব্য বা ২৩ নম্বর কলামে গোলাম মোস্তফা খেলার খেলা লিখা হয়েছে, যাহা মোটেও সমুচিত হয়নি।’

এব্যাপারে গোলাপগঞ্জ উপজেলার সহাকারি আবিদা সুলতানা কমিশনার (ভূমি) আবিদা সুলতানার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, হাতালী মাঠের বিষয়টি জেলা প্রশাসক মহোদয়ও অবগত আছেন। ইতিমধ্যে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা সরেজমিনে তদন্ত করে একটি প্রতিবেদন আমাদের নিকট দিয়েছেন। আমরা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। কোন ব্যক্তির নামে নয় বাঘা হাতালী নামেই মাঠটি থাকবে। এরজন্য যা করার আমাদের পক্ষ থেকে করা হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত