নিজস্ব প্রতিবেদক:

১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ২১:১৩

অনন্ত বিজয় হত্যা: ফের পেছাল সাক্ষ্য গ্রহণ

বিজ্ঞানমনস্ক লেখক অনন্ত বিজয় দাশ হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ আরও এক দফা পেছাল। সাক্ষীরা হাজির না হওয়ায় মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ আজ সোমবার হয়নি। গত ১০ মার্চ এই মামলার সবশেষ সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছিল। করোনা অতিমারির কারণে প্রায় ৬ মাস বিরতি দিয়ে সিলেটের সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালে আজ সোমবার সাক্ষ্য গ্রহণের নির্ধারিত তারিখ ছিল।

জানা গেছে, আলোচিত এই মামলায় এখন পর্যন্ত ২৯ সাক্ষীর মধ্যে ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছে। বাকি ১০ জনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ৩ জন সাক্ষী রয়েছেন। এই ৩ জন হচ্ছেন সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান চিকিৎসক, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) একজন পরিদর্শক ও সিআইডির তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ।

বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনায় গঠিত আইনজীবী প্যানেলের সদস্য মোহাম্মদ মনির উদ্দিন বলেন, ‘আজ সাক্ষীরা কেউ সাক্ষ্য দিতে আসেননি। ফলে মামলার কারাবন্দী দুই আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়নি। আদালত সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ পরবর্তীতে নির্ধারণ করবেন।’

২০১৫ সালের ১২ মে সিলেট নগরের সুবিদবাজারে নুরানি আবাসিক এলাকায় নিজ বাসার সামনে খুন হন অনন্ত। বিজ্ঞান নিয়ে লেখালেখির পাশাপাশি তিনি ‘যুক্তি’ নামে বিজ্ঞানবিষয়ক একটি পত্রিকা সম্পাদনা করতেন। এ ছাড়া বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন অনন্ত। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজকর্ম বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে অনন্ত সুনামগঞ্জের জাউয়াবাজারে পূবালী ব্যাংকের ডেভেলপমেন্ট অফিসার পদে কর্মরত ছিলেন।

হত্যাকাণ্ডের দিন রাতে অনন্তের বড় ভাই রত্নেশ্বর দাশ বাদী হয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের বিমানবন্দর থানায় অজ্ঞাতনামা ৪জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। এতে বিজ্ঞান বিষয়ে লেখালেখির কারণে অনন্তকে উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে বলে অভিযোগ করা হয়।

এরপর মামলাটি পুলিশ থেকে অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) স্থানান্তরিত হয়। সিআইডির পরিদর্শক আরমান আলী তদন্ত করে ২০১৭ সালের ৯ মে সম্পূরক অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেন। এতে সন্দেহভাজন আটক ১০ জনকে অব্যাহতির সুপারিশ করে ৬ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।

অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার আবুল হোসেন (২৫), খালপাড় তালবাড়ির ফয়সাল আহমদ (২৭), সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বিরেন্দ্রনগরের (বাগলী) মামুনুর রশীদ (২৫), কানাইঘাটের পূর্ব ফালজুর গ্রামের মান্নান ইয়াইয়া ওরফে মান্নান রাহী ওরফে এ বি মান্নান ইয়াইয়া ওরফে ইবনে মঈন (২৪), কানাইঘাটের ফালজুর গ্রামের আবুল খায়ের রশীদ আহমদ (২৫) এবং সিলেট নগরের রিকাবীবাজার এলাকার সাফিউর রহমান ফারাবী ওরফে ফারাবী সাফিউর রহমান (৩০)।

আসামিদের মধ্যে ফারাবী বিজ্ঞান লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলার রায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। অভিযুক্ত আসামিদের মধ্যে মান্নান রাহী আদালতে অনন্ত হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। ২০১৭ সালের ২ নভেম্বর মান্নান হঠাৎ অসুস্থ হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কারা হেফাজতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আসামিদের মধ্যে আবুল হোসেন, ফয়সাল আহমদ ও মামুনুর রশীদ পলাতক আছেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত