নবীগঞ্জ প্রতিনিধি:

১৭ নভেম্বর, ২০২২ ১৯:২৬

নবীগঞ্জে বিএনপি-জামায়াতের ১২০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা

প্রতীকী ছবি

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক ও অস্ত্র আইনে মামলা করেছে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ।

বুধবার রাতে সাবেক এমপি শেখ সুজাত মিয়াকে প্রধান আসামি করে ৩৮ জনের নাম উল্লেখসহ ১২০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে পুলিশের ওপর হামলা ও বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়ের করা হয়। ওই রাত থেকে অভিযানে চালিয়ে বিএনপি-জামায়াতের ৬ জন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

জানা গেছে, নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সাংসদ শেখ সুজাত মিয়ার নেতৃত্বে বুধবার কয়েকটি বাস যোগে কয়েক শ নেতাকর্মী সিলেট পৌঁছেছেন। এর আগে মঙ্গলবার রাতে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে উপজেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়কসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার গভীর রাতে সরকার বিরোধী কার্যক্রম করার লক্ষ্যে বিএনপি নেতাকর্মীরা নবীগঞ্জ শহরতলীর হাজারী কমিউনিটি সেন্টারের সামনে সমবেত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে নবীগঞ্জ থানার এসআই গৌতমসহ ৩-৪ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। আহতদের নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে শিহাব আহমেদ চৌধুরীসহ চারজনকে আটক করে পুলিশ। পাশাপাশি ৩টি অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নবীগঞ্জ থানার এসআই গৌতম কুমার বাদী হয়ে সাবেক এমপি শেখ সুজাত মিয়া প্রধান আসামি করে ৩৮ জনের নাম উল্লেখসহ ১২০জনকে অজ্ঞাত আসামি করে পুলিশের উপর হামলা ও বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় আটক ৪ জনকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।

এদিকে বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে গজনাইপুর ইউনিয়ন বিএনপির সহ সভাপতি শাহ মুস্তাকিম ও নবীগঞ্জ পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন চৌধুরী কনুকে গ্রেপ্তার করেছে।

এ ব্যাপারে বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ও সাবেক এমপি শেখ সুজাত মিয়া বলেন, ১৯ নভেম্বর সিলেট বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে মিথ্যা বানোয়াট মামলা করা হয়েছে। আমাদের দলের চার জনকে নিজ নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমি মঙ্গলবার রাতে আমার বাসায় ঘুমিয়ে ছিলাম। পুলিশ মামলায় যে ঘটনা উল্লেখ করেছে সে ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ডালিম আহমেদ গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, অপর আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।

নবীগঞ্জ থানার ওসি মো. ডালিম আহমদ জানান, আগের একটি নাশকতা মামলার বেশ কয়েকজন আসামিকে খুঁজছিলেন। গভীর রাতে তারা খবর পেয়েছেন বিএনপি নেতা শিহাব আহমদ চৌধুরীর বাসায় বসে সরকারবিরোধী মিটিং চলছে। এরপর সেখানে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করেন তারা।

ওসির দাবি, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কয়েকজন স্বীকার করেছেন, তারা সেখানে সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র করতে বসেছিলেন। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই গ্রেপ্তারদের নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না।

নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য সাবেক সংসদ সদস্য শেখ সুজাত মিয়া জানান, তিনি বুধবার রাত থেকে তার নির্বাচনী এলাকা নবীগঞ্জ ও বাহুবলের কয়েক হাজার নেতাকর্মী নিয়ে সিলেট আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে অবস্থান করছেন। বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারে পুলিশ বাড়ি বাড়ি চিরুনি অভিযান চালিয়েছে তাই তারা তীব্র আতংকে আছেন। এ কারণে দুই দিন আগেই ঘর ছাড়া হয়ে সিলেট মাঠে অবস্থান নিয়েছেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত