বড়লেখা প্রতিনিধি:

২০ নভেম্বর, ২০২২ ১৮:০৩

বড়লেখায় স্বত্ব মামলা দিয়ে প্রবাসীকে হয়রানির অভিযোগ

ভূমির ওপর স্থিতাবস্থা

বড়লেখায় উপযুক্ত মূল্যে ভূমি ক্রয় করার পরও একটি ব্যবসায়ী পরিবারের প্রবাসীকে ভুয়া তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করে স্বত্ব (সাফি) মামলা দিয়ে হয়রানীর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এতে প্রায় ৭ মাস ধরে ক্রয়কৃত ভূমিতে ভুক্তভোগী প্রবাসী আহমেদ অলি কাঙ্খিত বিনিয়োগ করতে পারছেন না।

জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের পশ্চিম হাতলিয়া গ্রামের প্রবীণ মহালাদার মৃত হাজী জমির উদ্দিনের প্রবাসী ছেলে আহমেদ অলি দেশে ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য দক্ষিণভাগ বাজারে দক্ষিণভাগ মৌজায় এসএ ৫৯৯ নং খতিয়ানের ১৩৮৫ নং দাগে চারা রকম শ্রেণীর চার শতাংশ ভূমি ক্রয় করেন। গত ১৬ মার্চ উত্তরাধিকারী সূত্রে ভোগাধিকারী বিক্রেতাগণ-যথাক্রমে নিখিল চন্দ্র দেব, প্রদীপ চন্দ্র দেব, কৃপাময় দেব, শিমুল দেব-এর পক্ষে আমমোক্তার সাইফুর রহমান উক্ত ভুমি প্রবাসী আহমেদ অলির নামে সাব-কাবালা করে দেন। এর আগে ভূমি ক্রেতা প্রবাসী আহমেদ অলি উক্ত ভূমির উপর কারো কোন প্রকার আয়-আপত্তি, দাবী আছে কি-না সে ব্যাপারে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। যথাযথ বিধি-বিধান মেনে ৩২ লাখ টাকা মূল্যে তিনি উক্ত ৪ শতাংশ ভূমি ক্রয় করেন। কিন্তু দলিল সম্পাদনের প্রায় সাড়ে তিন মাস পর হঠাৎ আমেরিকা প্রবাসী সেলিম আহমেদ, শামীম আহমেদ গংরা গত ৩০ জুন মৌলভীবাজার যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালতে স্বত্ব (সাফি) মামলা দায়ের করেন। এতে প্রবাসী আহমেদ অলির ব্যবসা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা আটকা পড়েছে।

ভূমিক্রেতা আহমেদ অলি জানান, তার বাবা একজন অত্যন্ত প্রবীণ ব্যবসায়ী ছিলেন। বাবা মারা যাওয়ার পর অনেকটা বাধ্য হয়ে প্রবাসে যান। সম্প্রতি দক্ষিণভাগ বাজারে পিতার নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ার লক্ষে ৪ শতাংশ ভুমি ক্রয় করি। এ ভুমির মালিক ছাড়াও আশ-পাশের মালিকদের সাথে বোঝাপড়া করি, কাগজপত্র যাচাই করে সবকিছু সঠিক থাকার পরও ভূমি ক্রয়ের ব্যাপারে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করি। কারো কোন আয়-আপত্তির অভিযোগ না থাকায় দলিল রেজিষ্ট্রারী করি। দলিল সম্পাদনের প্রায় সাড়ে তিন মাস পর হঠাৎ ভুয়া তথ্য উপাত্ত দিয়ে সেলিম উদ্দিন আহমদ গংরা স্বত্ব মামলা করে উক্ত ভূমির ওপর স্থিতাবস্থা জারি করান। নানাভাবে আমাকে হয়রানী করছেন। তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি একতরফাভাবে কমিশন করিয়ে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। নিয়োজিত আইনজীবির মাধ্যমে উক্ত একতরফা কমিশনের বিরুদ্ধে আদালতে তিনি আপত্তি দিয়েছেন।

সেলিম উদ্দিন আহমদ গংরা স্বত্ব মামলায় ৭ ও ৮ নং বিবাদী করেছেন তাদের আপন চাচাতো ভাই ছাইফ উদ্দিন ও এমাদ উদ্দিনকে। তারা জানান, সেলিম উদ্দিন ও শামীম উদ্দিন আহমদের বৈশিষ্টই হচ্ছে, উপযুক্ত মূল্য না দিয়ে পানির দামে ভূমি ক্রয় করা। তাদের কথা মতো ভূমি মালিক রাজি না হলে ঘাপটি মেরে বসে থাকেন। অন্য কেউ উপযুক্ত মূল্যে ক্রয় করলেই তার বিরুদ্ধে সাফি মামলা দিয়ে হয়রানী করা। এরকম অনেককে তারা হয়রানী ও ক্ষতিগ্রস্থ করেছে। উক্ত ভূমির একাংশের আমরা মৌরসী স্বত্ববান। কিন্তু সেলিম গংরা মামলার আর্জিতে চৌহাদ্দা বর্ণনায় চরম মিথ্যাচার করেছে। প্রকৃতপক্ষে আহমেদ অলির ক্রয়কৃত ভূমির পশ্চিম ও দক্ষিণে নজরুল ইসলাম গং, উত্তরে এমাদ উদ্দিন ও পূর্বে ছাইফ উদ্দিন, ইমান উদ্দিন গং।

পেনাগুল গ্রামের মৃত রইছ আলী ছেলে প্রবাসী ইসলাম উদ্দিন মুঠোফোনে জানান, আরেঙ্গাবাদ জামে মসজিদ সংলগ্ন ৩ শতাংশ ভুমি গ্রামের বেলাল খান গংরা ২০১৮ সালের নভেম্বরে আমার নিকট বিক্রি করেন। বিক্রেতারা জানান, উক্ত ভুমি বিক্রির আগে একাধিকবার শামীম আহমদের শরনাপন্ন হন। তিনি বাজার দরের চেয়ে অর্ধলক্ষ টাকা কমে কিনতে চান। উপযুক্ত মূল্যে বিক্রির পর শামীম আহমদ গংরা ইসলামী সাফি আইনকে হাতিয়ার করে ক্রেতার (ইসলাম উদ্দিন) বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন। এতে প্রায় ৪ বছর ধরে ইসলাম উদ্দিন ক্রয়কৃত উক্ত ভুমির উপর কোন স্থাপনা নির্মাণ করতে পারছেন না।

এব্যাপারে সেলিম উদ্দিন, শামীম উদ্দিন গংদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি। স্বজনরা বলেছেন তারা আমেরিকায় বসবাস করছেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত