শান্তিগঞ্জ প্রতিনিধি

২৮ নভেম্বর, ২০২২ ২১:৩১

শান্তিগঞ্জে বেইলী সেতু ভেঙে ২০ ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ

শান্তিগঞ্জের ডাবর-জগন্নাথপুর আঞ্চলিক সড়কের ভমভমি বাজার সংলগ্ন বেইলী সেতু ভেঙে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার ২০ ঘন্টা পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। এতে দীর্ঘ সময় দুর্ভোগের পর স্বস্তি ফিরেছে এ রাস্তায় চলাচলকারী হাজার হাজার সাধারণ মানুষ ও পরিবহণ শ্রমিকদের মাঝে।

রবিবার (২৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় পণ্যবাহী একটি ট্রাক সেতুর উপরে উঠলে স্টিলের পাটাতন (স্ল্যাব) নিচে পরে যায়। ধেবে যায় আশপাশের আরো একাধিক স্ল্যাব। এতে প্রায় ২০ ঘন্টা ব্যাপী জগন্নাথপুর, রাণীগঞ্জ ও রাজধানী ঢাকার সাথে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ ছিলো। পরে  সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের দিন-রাত চেষ্টার ফলে সোমবার বিকাল আড়াইটার দিকে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

 দীর্ঘ ২০ ঘন্টা কাজ করে সেতুটিকে সংস্কার করে। রবিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে পণ্যবাহী ভারী ট্রাক সেতুর উপরে উঠলে সেতুর একটি স্ল্যাব ভেঙে নিচে পড়ে যায়। ধেবে যায় পাশে থাকা আরো একাধিক স্টিলের স্ল্যাব। এতে সড়কটিতে সব ধরণের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। দুর্ভোগে পড়েন হাজার হাজার যানবাহনের যাত্রী ও পরিবহণ শ্রমিক।

স্থানীয়রা জানান, এর আগেও একাধিকবার ভমভমি বাজারের এ বেইলী সেতুটি ভেঙেছিলো। সওজের লোকরা এসে নামমাত্র সংস্কার করে দিয়ে যায়। কিছু দিন অতিবাহিত হলে পুনরায় একই ধরণের ঘটনা ঘটে। দুর্ভোগে পড়েন হাজার হাজার যাত্রী সাধারণ। এমন সংস্কার সংস্কার খেলা বন্ধ হওয়া দরকার। এ রাস্তায় আগে খুব একটা ভারী যানবাহন চলতো না, তবু ভাঙতো। এখন রাণীগঞ্জ সেতু হওয়ায় ভারী ভারী যানবাহন এ রাস্তায় চলে। এখন আর সংস্কার করলে হবে না, স্থায়ী পাকা সেতু চাই। তা না হলে রাণীগঞ্জ সেতুর সঠিক ব্যবহার করা যাবে না।

সোমবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেতুর পূর্ব ও পশ্চিমপাড়ে অসংখ্য ছোট বড় যানবাহন আটকা পড়েছে। সেতুর পূর্ব দিকে দ্বিতীয় স্ল্যাব ভেঙে নিচে পড়ে গেছে। আশপাশের একাধিক স্টিলের স্ল্যাব নিচের দিকে ধেবে গিয়েছে। সাধারণ মানুষ অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। পশ্চিম পাড় থেকে পূর্ব পাড়ে, পূর্ব থেকে পশ্চিম পাড়ে মাথায় করে পণ্য পারাপার করছেন। সুনামগঞ্জ থেকে যাত্রী সেতুর পশ্চিম পাড়ে নেমে পায়ে হেঁটে পার হচ্ছেন। উভয় পাশ থেকে আলাদা গাড়ি ধরে যাচ্ছেন গন্তব্যে। এতে নষ্ট হচ্ছে সময়, পাচ্ছেন কষ্ট। মোটরসাইকেলগুলো অনেক দূরের পথ মাড়িয়ে হাওর ঘুরে এপার ওপার হচ্ছে। এদিকে, সওজের বেশ কয়েকজন লোককে রাস্তা সংস্কারের জন্য গভীর মনোযোগে কাজ করতে দেখা যায়। তাদের প্রচেষ্টায় দীর্ঘ ২০ ঘন্টা পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয় এ সেতুর উপর দিয়ে।

রাস্তা আরো একাধিকবার ভেঙেছে জানিয়ে শান্তিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের নব নির্বাচিত সভাপতি সিতাংশু শেখর ধর সিতু বলেন, এভাবে আর কত সংস্কার করা হবে। এর আগে একাধিকবার সেতুটি ভেঙেছে। এখন এভাবে সংস্কার করে দিলে আর চলবে না কারণ রাণীগঞ্জ সেতু দিয়ে ভারী যানবাহন আসবে। তাই সেতুটি স্থায়ী পাকা করে তৈরি করা দরকার। রাণীগঞ্জ সেতুর সুফল ভোগ করতে হলে নারিকেল তলা বেইলী সেতু ও ভমভমি বাজারের বেইলী সেতু স্থায়ীভাবে পাকা করে  নির্মাণ করতে হবে।

সিএনজি চালক রিপন আহমদ জানান, সেতুটি ভেঙ্গে গিয়ে যান চলাচল বন্ধ থাকায় রবিবার রাত থেকে অদ্যাবদি পর্যন্ত সাধারণ যাত্রীগন চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।

মাথায় করে পণ্য পারাপার করছিলেন মাইন উদ্দিন ও সরকারি বীজ মাথায় করে পার করা বয়োজ্যেষ্ঠ রহমত আলী বলেন, আমাদের কষ্টের কথা আর কী বলবো। কিছু দিন পর পর সেতুটি ভাঙ্গে আর তারা জোড়াতালি দেয়। এখন বড় বড় গাড়ি এ রাস্তায় চলবো। ব্রিজটি বড় ও পাকা করে তৈরি করার জোর দাবি করছি।

সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম প্রামাণিক বলেন, রাতে খবর পেয়েছিলাম। খুব ভোরে মানুষ পাঠিয়ে রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক করেছি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত