নিজস্ব প্রতিবেদক

০৮ জানুয়ারি, ২০২৩ ১২:৫৬

নির্বাচন নিয়ে অন্যদের মাতব্বরী করার দরকার নেই: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেছেন, যাদের নিজেদের দেশের নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ তাদের বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে মাতব্বরি মানায় না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কোন লুকোচুরি হয় না। চাইলে যে কোন দেশ পর্যবেক্ষন করতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপত্র নেড প্রেইসের বাংলাদেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষন করার ঘোষণার বিষয়ে জানতে চাইলে রোববার সিলেটে একটি অনুষ্ঠানে এমনটি বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

রোববার সকালে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৬ টি ই-গেইট স্থাপনের উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন। অনুষ্ঠান শেষে আনুষ্ঠানিক ভাবে ই-গেইটের উদ্বোধন করেন তিনি। এর মাধ্যমে ই-পাসপোর্টধারীদের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করতে মাত্র ১৮ সেকেন্ড ব্যয় হবে বলে জানিয়েছেন বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা।

এনময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, আমেরিকায় ৭২ শতাংশ জনগন মনে করে তাদের দেশে গণতন্ত্র খুব দুর্বল। আর সেখানকার রিপাবলিকান পার্টির ৭৭ শতাংশ লোকজন মনে করে তাদের গত নির্বাচন ছিলো ভূয়া। ভোট চুরি হয়েছে বলে মনে করে তারা। আমাদের দেশেরও কিছু লোক আছে এমন। তবে তারা সংখ্যায় খুব কম।

তিনি বলেন, তাদের দেশে কত শতাংশ লোক ভোট দেয়? -৫০ এর কম। আর আমাদের এখানে মিনিমাল ৭২-৭৩ শতাংশ লোক ভোট দেয়। আমাদের এখানে নির্বাচন খুব অংশগ্রহণমূলক, স্বতঃস্ফূত ও উৎসবমুখর।

বাংলাদেশকে গণতন্ত্র নিয়ে সবক দেয়ার প্রয়োজন নেই উল্লেখ করে ড. মোমেন বলেন, এই দেশের সৃষ্টি হয়েছিলো গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ন্যায়বিচা্র প্রতিষ্ঠার জন্য। আমরা যদ্ধ করেছি মানবাধিকারের জন্য। এই দেের প্রতিটি মানুষের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এসব আদর্শ রয়েছে। ফলে আমাদেরকে অন্যরা মাতব্বরি করে পরামর্শ দেয়ার দরকার নেই। তারা নিজেদের আয়নায় দেখুক। তবে আমরা অঙ্গিকার করেছি, আগামী নির্বাচন স্বচ্ছ, সুন্দর, গ্রহণযোগ্য এবং সবাইকে নিয়ে হবে। আমার দল বিশ্বাস করে- আমার ভোট আমি দেব, যারে খুশি তারে দেবো।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সবসময় নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে। সেনাবাহিনীর সহায়তায় আসেনি। যারা এসব নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে তাদের জ্ঞানের অভাব রয়েছে।

দেশে পাসপোর্ট পেতে কিছু ভোগান্তি পোহাতে হয় উল্লেখ করে এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমরা পাসপোর্টের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। সম্প্রতি আমাদের পাসপোর্টের সেবা অনেক উন্নত হয়েছে, আগের মতো বছর খানেক বসে থাকতে হয় না। কিছু কিছু যেগুলো অবাঞ্ছিত, সেগুলোতে সময় লাগে। অধিকাংশ পাসপোর্ট পেয়ে যান।’

বাংলাদেশের পাসপোর্টের মান অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বিমানবন্দরে ই-গেট কার্যক্রম শুরু মাধ্যমে আমাদের পাসপোর্টের মান আরও বৃদ্ধি পাবে। তখন বহু দেশে যাওয়ার জন্য আমার ভিসার দরকার হবে না। অনেক দেশ সাগ্রহে আমাদের সঙ্গে ভিসা অব্যাহতি চুক্তি করতে চাচ্ছে। এটা ইতিবাচক।’

মন্ত্রী ‍আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা থাকলে আমরা অনেক অনেক উন্নত অবস্থানে পৌঁছাবো।’

ই-গেটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা ও সেবা বিভাগের সচিব আব্দুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল নুরুল আনোয়ার, সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান, সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন খান, ওসমানী বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক হাফিজ আহমদ জানান, ই-গেট চালু হওয়ায় মাত্র ১৮ সেকেন্ডেই ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করতে পারবেন যাত্রীরা। তবে এজন্য তাদের কাছে ই-পাসপোর্ট থাকতে হবে।

তিনি জানান, এই বিমানবন্দরে ছয়টি ই-গেট স্থাপন করা হয়েছে। এরমধ্যে তিনটি প্রবেশের জন্য, তিনটি বের হওয়ার জন্য। ই-পাসপোর্টধারীরা এসব গেট ব্যবহার করে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করতে পারবেন।

ই-গেট কার্যক্রম তদারকি করবে ইমিগ্রেশন পুলিশ। ই-পাসপোর্ট ই-গেটের নির্দিষ্ট স্থানে রাখলেই ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হয়ে গেট খুলে যাবে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ই-গেট কার্যক্রম শুরু হয় ঢাকায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। ২০২১ সালের ৩০ জুন সেখানে শুরু হয় ২৬টি গেটের কার্যক্রম। এরপর চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বসে ৬টি ই-গেট। সবশেষ সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও ই-গেট কার্যক্রম চালু হলো।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত