সিলেটটুডে ডেস্ক

০৯ জানুয়ারি, ২০২৩ ১৮:০০

ম্যুরালে বঙ্গবন্ধুর বদলে এমপি রতনের ছবি ‘গুরুতর অসদাচরণ’: হাইকোর্ট

প্রধানমন্ত্রীর ছবির নিচে মোয়াজ্জেম হোসেন রতন ও মোজাম্মেল হোসেন রুকনের ছবি।

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় সরকারিভাবে নির্মিত ম্যুরালের মূল নকশায় শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি রয়েছে। কিন্তু সেই মূল নকশা পরিবর্তন করে নির্মিত ম্যুরালে প্রধানমন্ত্রীর ছবির নিচে স্থানীয় সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এবং তার ভাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন রুকনের ছবি যুক্ত করা হয়।

এমন ঘটনায় উষ্মা প্রকাশ করে হাইকোর্ট বলেছেন, এটা তো গুরুতর অসদাচরণ। একইসঙ্গে বঙ্গবন্ধু ম্যুরালের মূল নকশা অপরিবর্তিত রেখে সেখান থেকে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও তার ভাইয়ের ছবি সাত দিনের মধ্যে অপসারণ করতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার এই আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশলের দেয়া তথ্যানুযায়ী, গত বছরের ২৩ জুন মেসার্স রানা ট্রেডার্সকে নয় লাখ ৯৯ হাজার ৭২৪ টাকা চুক্তিমূল্যে মূর‍্যালটি বানাতে কার্যাদেশ দেয়া হয়। ৩০ দিনের মধ্যে মধ্যনগর ব্রিজ সংলগ্ন স্থানে ম্যুরাল নির্মাণ কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। ম্যুরালের ডিজাইনে একপাশে বঙ্গবন্ধু ও আরেকপাশে কেবল শেখ হাসিনার ছবি থাকার কথা তবে সেখানে কোন অনুমতি ছাড়াই স্থানীয় সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন ও তার ভাই ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন রুকনের ছবি যুক্ত করা হয়েছে।

 মধ্যনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক পরিতোষ সরকার বলেন, এখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছবি সম্বলিত মুর‍্যাল হওয়ার কথা ছিল কিন্তু এখন দেখি এখানে এমপি আর তার ভাই চেয়ারম্যানের ছবি। এটা শিষ্টাচার বিরোধী কাজ, বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিয়ে দিলেন অথচ তারা সবাই নৌকা মার্কায় ভোট পেয়েই জয়ী হয়েছিলেন। আমি নিজে ইউএনও মহোদয়ের সাথে কথা বলেছি তিনিও বলেছেন এখানে এই ডিজাইন ছিল না তারা নিজ ইচ্ছায় এমন পরিবর্তন করেছে।

সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি পিপি খায়রুল কবির রুমেন বলেন, বিষয়টি আমার নজরেও এসেছে, একজন সরকার দলীয় এমপি চেয়ারম্যান এমন কাজ করতে পারেন না, বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিয়ে এমপি সাহেবও কিভাবে নিজের ছবি বসালেন সেটা আমার বুঝে আসে না,  এ কারণে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হওয়া উচিত এমপি সাহেব ও তার ভাইয়ের।

ধর্মপাশা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির হাসান বলেন, যেহেতু মধ্যনগর নতুন উপজেলা তবে এখনও প্রশাসনিক দাপ্তরিক সব কাজ হয় ধর্মপাশা থেকেই, তবে মধ্যনগরে যে মুর‍্যাল তৈরি হচ্ছে সেখানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি থাকায়  কথা ছিল কিন্তু এভাবে সরকারি টাকায় নির্মিত ডিজাইনের পরিবর্তন করা যায় না। এটি এডিপির বরাদ্দে প্রায় ১০ লাখ টাকায় নির্মাণ করা হয়েছে। এই ডিজাইন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের করা। এটি পরিবর্তন করতে হলে উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে ডিজাইন পরিবর্তনের অনুমোদনের জন্য লিখতে হবে। ওখান থেকে অনুমতি পাওয়া গেলেই কেবল ডিজাইন পরিবর্তন করা যায়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত