মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:

১৩ জানুয়ারি, ২০২৩ ২১:৪৯

পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে কুশিয়ারার পাড়ে ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা

আবহমান বাঙালি সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে নবান্ন ও পৌষসংক্রান্তি উৎসব। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতি বছরের মতো এবারও মৌলভীবাজারের শেরপুর এলাকায় কুশিয়ারা নদীর তীরে শুক্রবার রাত থেকেই শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলার আমেজ।

আগামীকাল শনিবার দিনভর চলবে মেলায় মাছের বিকিকিনি। মেলা উপলক্ষে এরই মধ্যে কুশিয়ারাপাড়ে মৎস্য আড়তে আসতে শুরু করেছেন মাছ ব্যবসায়ীরা।

এ মেলাকে কেন্দ্র করে সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়ন ও আশপাশের ১৫-২০টি গ্রামের মানুষের মাঝে উৎসব আমেজ বিরাজ করছে। দিন-রাতের মেলায় হাজার হাজার লোকের সমাগমে প্রতিদিন প্রায় ১০-১২ কোটি টাকার মাছ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বেচাকেনা চলে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

মাছের মেলাকে ঘিরে সদর উপজেলার হামরকোনা, দাউদপুর, ব্রাহ্মণ গ্রাম, নতুন বস্তি, নাদামপুর, বাহাদুরপুর, চানপুর, সুমারাইসহ বিভিন্ন গ্রামের মানুষের মাঝে চলছে উৎসবের আমেজ। মেলা উপলক্ষে গ্রামের প্রতিটি বাড়িতেই এখন আত্মীয়স্বজনের ভিড়। অনেক প্রবাসীও মেলা উপলক্ষে পরিবারের সঙ্গে আনন্দ উদযাপনে দেশে এসেছেন।

পৌষসংক্রান্তি ও নবান্ন উৎসব উপলক্ষে সদর উপজেলার সত্রস্বতী পরগনার সাধুহাটি গ্রামের জমিদার রাজেন্দ্রনাথ দাম (মথুর বাবু) কুশিয়ারা তীরবর্তী তৎকালীন বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক স্থল মনুমুখে এ মেলার প্রচলন করেছিলেন প্রায় দেড়শ বছর আগে।

মনুমুখ গ্রামের ৮০ বছর বয়সী সাবু মিয়া মেম্বার বলেন, ‘ছোট থেকে শুনে আসছি মথুর বাবু মাছের মেলার বন্দোবস্ত করে দিয়েছিলেন। বাপ-দাদার মুখে মেলায় মাছ বিক্রি করার গল্প শুনেছি।’

মাছের মেলা কমিটির সাবেক সভাপতি সদর উপজেলার অলিউর রহমান বলেন, ‘১৩ জানুয়ারি রাত থেকে ১৪ জানুয়ারি সন্ধ্যা পর্যন্ত মেলার জন্য কম করে হলেও ৩-৪ লাখ টাকা ইজারা মূল্য দিতে হয়। করোনার কারণে গত বছর মাছের মেলা হয়নি। হাওর-বাঁওড়, নদী, বিল ভরাট হওয়ার কারণে দেশীয় প্রজাতির মাছ দিন দিন কমে যাচ্ছে। আগের মতো বড় আকৃতির মাছ না থাকলেও ঐতিহ্যবাহী এই মেলার কদর স্থানীয়দের আবেগের সঙ্গে মিশে আছে।’

মেলায় আসা ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।

মৌলভীবাজার সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদুল হাসান জানান, মেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে প্রশাসন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত