সিলেটটুডে ডেস্ক

০১ ফেব্রুয়ারি , ২০২৩ ২১:১৬

বাংলাদেশ-ভারত রেলপথ উন্নয়নের উদ্যোগ

বাংলাদেশ ও ভারতের রেলপথ উন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে দুই রাষ্ট্র।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এসব  উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে দু’দেশের রেল যোগাযোগের উন্নয়নের পাশাপাশি যাত্রী ও পণ্য পরিবহণও বৃদ্ধি পাবে। ফলে ভারত-বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। পাশাপাশি বৈদেশিক বিনিয়োগকারীদের সংখ্যাও বাড়বে বলে মনে করেন ব্যবাসায়ীরা।

ঢাকাস্থ ভারতীয় দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, কলোনীকাল থেকেই বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে রেলপথ যোগাযোগ চালু আছে। ভারত ও তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের মধ্যে ৭টি আন্তঃসীমান্ত রেল সংযোগ চালু ছিল। ভারত-পাকিস্তানের ১৯৬৫ সনের যুদ্ধে ধ্বংস হয়ে যায় ৫টি রেলপথ। পেট্রোপোল (ভারত)-বেনাপোল (বাংলাদেশ), গেদে (ভারত)-দর্শনা (বাংলাদেশ), সিংহবাদ (ভারত)-রোহনপুর (বাংলাদেশ), রাধিকাপুর (ভারত)-বিরল (বাংলাদেশ) ও হলদিবাড়ি (ভারত)-চিলাহাটি (বাংলাদেশ) রেলপথ পরবর্তীতে পুনরুদ্ধার করে কার্যকর করা হয়েছে। বাকি দুটি রেলসংযোগ এখনো নির্মাণাধীন রয়েছে। আগরতলা (ভারত)-আখাউড়া (বাংলাদেশ) ও করিমগঞ্জ-মহিষাসন (ভারত)-শাহবাজপুর (বাংলাদেশ) রেলসংযোগ বর্তমানে চালু হওয়ার পথে। এই রেলপথ চালু হলে যাত্রী ও পণ্য পরিবহণে বিরাট ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরো জানা গেছে, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে তিনটি আন্তঃসীমান্ত রেল সার্ভিস চালু রয়েছে। ২০০৮ সালে চালু হওয়া মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন সার্ভিস কলকাতা ও ঢাকা, ২০১৭ সালে চালু হওয়া বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেন সার্ভিস খুলনা ও কলকাতা যাতায়াত ব্যবস্থা সচল রেখেছে। এই দুটি রেল পরিষেবা ২০২২ সালের মে মাসের শেষের দিকে কোভিড-১৯’র পরে আবার চালু করা হয়েছে। ঢাকা ও নিউ জলপাইগুঁড়ির মধ্যে তৃতীয় ও নতুন আন্তঃসীমান্ত মিতালি এক্সপ্রেস ট্রেন পরিষেবা গত বছরের ১ জুন চালু করা হয়। গত বছর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরকালে রেলখাতকে গুরুত্ব দিয়ে কয়েকটি নতুন প্রকল্প প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করেন। এসময় ভারত বাংলাদেশকে অনুদানের ভিত্তিতে ২০টি ব্রডগেজ লোকো প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দুটি সমঝোতা স্মারক সম্পন্ন করে। এগুলো হলো ভারতীয় রেলওয়ে ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্মীদের প্রশিক্ষণ এবং অন্যটি বাংলাদেশ রেলওয়ে ডিজিটাইজিং ও দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে আইটি অ্যাপ্লিকেশন প্রবর্তন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরো জানা গেছে, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ৫টি কার্যকর রেল-সংযোগের সবকটি মালবাহী ট্রেন নিয়মিত ও নির্বিগ্নভাবে চলাচল করছে। ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের জুন (বাংলাদেশ অর্থবছর ২১-২২)-এর মধ্যে পণ্য পরিবহনের মোট ১৫৯৮টি ভারতীয় রেলওয়ে রেক বাংলাদেশের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল। মোট বরাদ্দের ১৫৮৩০৫.৫ ওয়াগন থেকে এ সময়ে দ্বিপাক্ষিক ট্রাফিক থেকে আয় করে ১৭৪,৩৩,৭২,১৯৩ টাকা।

ঢাকাস্থ ভারতীয় দূতাবাসের এক কর্মকর্তা বলেন, দুই দেশের রেল যোগাযোগের উদ্যোগের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। অবশিষ্ট রেলপ্রকল্পগুলো চালু হলে যাত্রী ও পণ্য পরিবহণ আরো বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে দুটি শেই অর্থনীতিতে লাভবান হবে। পাশাপাশি বৈদেশিক বিনিয়োগকারীদের সংখ্যাও বাড়বে।

সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্সের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুল জব্বার জলিল জানান, ভারত বাংলাদেশের রেলপথ উন্নয়নে নানা উদ্যোগ ব্যাবসা বানিজ্য সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। নিত্যপণ্য ও জরুরি পণ্য সরবরাহ করে তারা। তাছাড়া দ্বিপাক্ষিক যেসব চুক্তি ও প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে বা প্রক্রিয়াধীন আছে সেগুলো বাস্তবায়িত হলে আমাদের অর্থনীতির চাকা আরো সচল হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত