পুলিশের হাতে আটক ৩

১৬ মার্চ, ২০২৩ ১৭:৫৪

শান্তিগঞ্জে প্রতিপক্ষের উপর গুলি, আহত ১৫

সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নের উফতিরপাড় গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রতিপক্ষের উপর গুলি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্প্রতিবার সকাল ৯ টায় ঘটনাটি ঘটে। এতে ৩ জন গুলিবিন্দসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় তিন জনকে আটক করে শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে যায়, গ্রামের সাইফুল মিয়াসহ গ্রাম পঞ্চায়েতের সাথে গ্রামের আমির আলীর পক্ষে মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল দীর্ঘদিন ধরে। গ্রামের চার গোষ্ঠীর চাপে অন্যত্র অবস্থান করছিলেন আমির আলীর পরিবার।

সম্প্রতি সড়ক দুর্ঘটনায় তার এক আত্মীয় মারা গেলে মরদেহ দাফন করতে গ্রামে আসেন আমির আলী ও তার স্বজনরা। বুধবার দিনে আমীর আলীর বাড়িতে বহিরাগত কিছু লোকজন আসেন। তাদের সাথে কিছু অস্ত্র নিয়ে আসা হয়েছে এমন খবর চাউর হলে গ্রামে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। গ্রামবাসী কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টার দিকে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে প্রতিপক্ষের লোকদের উপর হামলা চালানোর অভিযোগ পাওয়া যায়।

এসময় গ্রামের অপর গোষ্ঠীর লোকজন হামলার প্রতিরোধ করতে চাইলে সংঘর্ষ সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষ চলাকালীন সময়ে বহিরাগত লোকদের ছোঁড়া গুলিতে গ্রামের আবদুল জলিলের ছেলে নূর আলম (৩৫), উস্তার উল্লার ছেলে আলীপাশা (৪০) ও মনর উদ্দিনের ছেলে ফজলু মিয়া (৩০) গুলিবিদ্ধ হন। এছাড়াও একজন নারীসহ আরও ১০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তাৎক্ষণিকভাবে সকল আহতদের নাম পাওয়া যায় নি। আহতদের সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল ও সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে আরও জানা যায়, উফতিরপাড় গ্রামের আলী আহমদ, হযরত আলী ও লন্ডন প্রবাসী রাজা মিয়ার গ্রুপ ও জমসিদ মিয়া, সাইফুল ইসলাম, ফারুক মিয়া ও জরিফ মিয়া গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিরোধ ও মামলা মোকদ্দমা চলে আসছিল। এলাকাবাসীর মধ্যস্থতায় কয়েকবার সালিশ বৈঠকে দু’পক্ষের বিরোধ নিস্পত্তি হয়েছিল। বিগত বছর দু’এক বছর যাবৎ আলী আহমদ ও হযরত আলীরা সিলেটে থাকেন। বিগত ১৪ মার্চ আলী আহমদ গ্রুপের একজন লোক সড়ক দূর্ঘটনায় মারা গেলে তাকে দাফন করার জন্য আলী আহমদ গ্রুপের লোকজন গ্রামে গিয়ে তার লাশ দাফন শেষে গ্রামবাসীর সাথে সংঘর্ষের পায়তারা শুরু করেন। তখন খবর পেয়ে বিভিন্ন গ্রাম থেকে সালিশ ব্যাক্তিগণ সহ শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশের লোকজন ঘটনাস্থলে গেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টায় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আলী আহমদ গ্রুপের লোকজন গ্রামবাসীসহ জমসিদ মিয়া গ্রুপের লোকজনকে ডাকাডাকি শুরু করার এক পর্যায়ে গ্রামবাসী বেরিয়ে পড়লে আলী আহমদ গ্রুপের ৪ জন লোক স্কুলের ছাদের উপর ও বাড়ির সামন থেকে বন্দুক দিয়ে কয়েক রাউন্ড গুলি করে ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে জমসিদ মিয়া গ্রুপের লোকজনকে গুরুতর আহত করে।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশ। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জগন্নাথপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শুবাশীষ ধর বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ রয়েছে। পরিবেশ এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। অভিযান চালিয়ে ৩ জনকে আটক করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। অনুসন্ধান চলছে। অভিযোগ পেলে বিহীত ব্যবস্থা গ্রহণ করার হবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত