বড়লেখা প্রতিনিধি:

২৮ মে, ২০২৩ ০০:৫৬

দুই যুগ ধরে বিকল এক্স-রে মেশিন, ৬ বছর ধরে প্যাথলজি কক্ষে তালা

বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

দুই যুগ ধরে পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে গেছে এক্স-রে মেশিন। ৬ বছর ধরে তালাবদ্ধ প্যাথলজি বিভাগের পরীক্ষাগার।

মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয় প্রায় ৫ বছর আগে। শয্যা বৃদ্ধির সাথে পদ সৃষ্টি হয়েছে ঠিকই। তবে কোনো বিভাগে বাড়ানো হয়নি লোকবল। বরং ৩১ শয্যায়ই রয়েছে ব্যাপক জনবল সংকট। জনবল সংকট নিয়ে কোনোমতে চলছে চিকিৎসা সেবা। এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুই যুগেরও বেশী সময় ধরে নেই এক্স-রে টেকনিশিয়ান ও এমটি রেডিও গ্রাফার। ফলে দুই যুগ ধরে পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে গেছে এক্স-রে মেশিন ও ডিজিটাল মেডিকেল ল্যাব।মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) না থাকায় ৬ বছর ধরে তালাবদ্ধ প্যাথলজি বিভাগের পরীক্ষাগার।

দীর্ঘদিন অব্যবহৃত থাকায় নষ্ট হচ্ছে ওই বিভাগের মূল্যবান যন্ত্রপাতি। অন্যদিকে সাধারণ এক্স-রে, ইউরিন পরীক্ষা, রক্ত, ব্লাড সুগার, ব্লাড গ্রুপিংসহ সাধারণ পরীক্ষা-নীরিক্ষা সেবা দিতে ব্যর্থ সরকারি এ হাসপাতালটি। এতে উপজেলার রোগীদের অতিরিক্ত টাকা খরচ করে বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে এসব সেবা নিতে হচ্ছে।

এদিকে প্রায় ৮ মাস ধরে চালকের অভাবে গ্যারেজবন্দী রয়েছে প্রায় ৩০ লাখ টাকা মূল্যের সরকারি অ্যাম্বুলেন্স। এতে রেফার্ডের রোগীরা উন্নত চিকিৎসা নিতে সিলেট কিংবা অন্যান্য স্থানে সাশ্রয়ী মূল্যে যাতায়াতের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আর এই সুযোগে প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্স মালিকরা রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন।

জানা গেছে, ৩১ শয্যার বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চরম জনবল সংকটের মধ্যেই ২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ও বর্তমান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এমপি এ হাসপাতালকে ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ ভবনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্টের (ল্যাব) ডেপুটেশন জনিত কারণে ৬ বছর ধরে প্যাথলজি কক্ষে তালা ঝুলছে। ফলে পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে এই বিভাগের মূল্যবান যন্ত্রপাতি। সাধারণ পরীক্ষা-নীরিক্ষার জন্য রোগীদের ছুটতে হয় বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। গুনতে হয় অতিরিক্ত টাকা। ১৭ বছর ধরে শূন্য এমটি রেডিও গ্রাফারের পদ। এতে রোগিরা পাচ্ছে না কোনো ধরণের এক্স-রে সুবিধা। টেকনিশিয়ানের অভাবে প্রায় দুই যুগ ধরে পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে গেছে ১২ লক্ষাধিক টাকার নতুন এক্স-রে মেশিন।

৫০ শয্যার জনবল থাকাতো দুরের কথা, ৩১ শয্যার ২৫টি নার্সের পদে কর্মরত মাত্র ১৫ জন। ৬ বছর ধরে ৫ জন ক্লিনারের স্থলে মাত্র ১ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী দিয়ে পরিস্কার রাখা হচ্ছে তাবদ হাসপাতাল। জনবল সংকটে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে উপজেলার ১০ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার ৫ লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসা সেবা।

বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রত্নদীপ বিশ্বাস বলেন, ‘জনবল সংকটের বিষয়টি প্রতিটি মাসেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবহিত করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এমটি ল্যাব ও এমটি রেডিওগ্রাফার নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। আউটসোর্সিংয়ে চালক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলমান আছে।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত