কমলগঞ্জ প্রতিনিধি:

০৩ জুন, ২০২৩ ২২:১৬

আশ্রয়ণে বিদ্যুৎ-পানি নেই, ৮৪ ঘরের ৫৪টিতে ঝুলছে তালা

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের প্রধানমন্ত্রীর উপহার দেওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের ভূমিহীনদের মাঝে হস্তান্তর করা ৮৪টি ঘরের মধ্য ৫৪টি ঘরেই তালা ঝুলছে। সুপেয় পানির জন্য নলকূপ, বিদ্যুৎ সংযোগ ও দুর্গম জায়গায় হওয়ায় ভূমিহীনেরা এখানে বসবাস করতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।

এছাড়া যারা বসবাস করছেন, তারাও ঘর ছাড়ার অপেক্ষায় আছেন বলে জানা গেছে। এই ঘরগুলো পড়েছে আলীনগর ইউনিয়নের কালিছালিতে।

জানা যায়, উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের কালিছালি আশ্রয়ণ প্রকল্পে তিন বছরে ২৭৭টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৮৪টি ঘর ভূমিহীনদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়েছে। এই ৮৪টি ঘরের মধ্যে মাত্র ৩০টি ঘরে বসবাস করছেন উপকারভোগীরা। বাকি প্রায় ৫৪টি ঘরে তালা ঝুলছে।

এ বিষয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত উদ্দিন বলেন, ‘আশ্রয়ণ এলাকাটি একটু দূর হওয়ায় অনেকেই এখানে বসবাস করতে চাচ্ছেন না। এখানে আরও ১০০ পরিবারের মাঝে শিগগিরই ঘর হস্তান্তর করা হবে। লোকসমাগম একটু বেশি হলে সব সমস্যা দূর হবে।’

বসবাসরত উপকারভোগীরা বলেন, ‘এখানে বিদ্যুতের তার টানা আছে, কিন্তু সংযোগ নেই। সুপেয় পানির জন্য টিউবওয়েল নেই, এখন থেকে প্রায় চার-পাঁচ কিলোমিটার হেঁটে কাজে যেতে হয়। এখানে অনেক কষ্ট করে আমরা বসবাস করছি। কিছু ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল বকেয়া বিলের জন্য এগুলো বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। মানুষ বসবাসের জন্য এটি সঠিক জায়গা নয়।’

যারা চাবি ও ভূমির কাগজ পাওয়ার পরেও ঘরে ওঠেননি তারা বলেন, ‘আমাদের ঘর দেওয়া হয়েছে ঠিক, কিন্তু বসবাসের জন্য ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়নি। বিদ্যুৎ নেই, পানিও নেই। পাঁচটি নলকূপের মধ্যে মাত্র দুটি নলকূপ সচল আছে।’

প্রকল্পের বাসিন্দা আবদুল জব্বার বলেন, ‘প্রায় তিন মাস হয়েছে, এখানে আমরা উঠেছি। কিন্তু আমাদের কোনো সমস্যা সমাধান করা হয়নি। যেখানে বিদ্যুৎ নেই, পানি নেই। ৮৪টি পরিবারের মধ্যে মাত্র ৩০টি পরিবার বসবাস করছি। আমাদের মাত্র দুটি স্থানে অগভীর নলকূপ বসিয়ে খাবার ও গোসলের পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। তারপরও আমরা কষ্ট করে থাকি। আশপাশে কাজের ব্যবস্থা না থাকায়, অনেক কষ্ট করে চলতে হচ্ছে। এভাবে আর বেশি দিন থাকা সম্ভব নয়। আমরাও এখান থেকে চলে যাব।’

বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের বিষয়ে মৌলভীবাজার পল্লী সমিতির কমলগঞ্জ জোনাল অফিসের উপ মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মীর গোলাম ফারুক বলেন, কালিছালি আশ্রয়ণ প্রকল্পে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৩৮টি ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছিল। বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করায় ২৭টি ঘরের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

আশ্রয়ণের ঘর খালি থাকার বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রইছ আল রিজুয়ান বলেন, ‘কালিছালি এলাকায় স্থানীয় চেয়ারম্যানরা উপকারভোগী নির্বাচনে বিলম্ব করায় ঘরগুলো খালি পরে আছে। আশা করছি শিগগিরই উপকারভোগীদের মাঝে ঘর হস্তান্তর করা হবে।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত