নিজস্ব প্রতিবেদক

০৯ জানুয়ারি, ২০১৬ ১৮:৫৮

সিলেটে ‘বড় ধরনের জঙ্গি হামলার’ আশঙ্কা

সিলেট অঞ্চলে বড় ধরনের জঙ্গি হামলার আশঙ্কা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এসব হামলার টার্গেট হতে পারে বলে শঙ্কা তাদের।

মসজিদ ও মাজারে এই হামলা হতে পারে বলে গোয়েন্দা সংস্থার পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বলেছেন সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মো. মিজানুর রহমান।

শনিবার সিলেট জেলা পুলিশ আয়োজিত জেলার আলেম ও মাশায়েখদের সাথে ‘জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ বিরোধী মতবিনিময় সভায়’ তিনি এই আশঙ্কার কথা জানান।

বগুড়া, দিনাজপুরে আহমদিয়া মসজিদ ও ইসকন মন্দিরে বোমা হামলার পর এবার সিলেটকে টার্গেট করা হতে পারে বলে শঙ্কা তার।

মিজানুর রহমান বলেন, “সিলেটে জঙ্গিদের হামলার পরিকল্পনার নানা তথ্য পুলিশের কাছে রয়েছে। জঙ্গিদের পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন মাজার সংলগ্ন মসজিদ, শিয়া সম্প্রদায়ের মসজিদ, ওয়াজ মাহফিল ও শুক্রবার জুম্মার নামাজের জামাত চলাকালে হামলা।”

গোয়েন্দারা তথ্য পেয়েছেন, ল্যাপটপে করে এক্সপ্লোসিভ ডিভাইসের মাধ্যমে মসজিদে হামলা করতে পারে। গত কয়েকদিনে সন্দেহভাজন জঙ্গিরা পুরনো ল্যাপটপ সংগ্রহ করার চেষ্টা করছে।

জঙ্গিদের মোকাবেলায় পুলিশ সতর্ক রয়েছে জানিয়ে মিজানুর রহমান বলেন, “এসব তথ্যের ভিত্তিতে আমাদের ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির মাধ্যমে সভা করছি, সবাইকে সতর্ক করছি।”

পুলিশের একার পক্ষে জঙ্গি কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ পুরোপুরি সম্ভব নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, এজন্য জনগণকে সচেতন ও সতর্ক থাকতে হবে।

মিজানুর বলেন, “জঙ্গি হামলার আশঙ্কার সাথে জঙ্গি অর্থায়নের বিষয়টিও উঠে এসেছে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে। এজন্য নজরদারিতে রয়েছে বিভিন্ন এনজিওসহ দেশি-বিদেশি সংস্থাও।”

জঙ্গি হামলার আশঙ্কা থেকেই এ অঞ্চলের আলেম ও ইমামদের সাথে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছে জানিয়ে এ অঞ্চলের পুলিশ প্রধান বলেন, জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় আলেম উলামাদের সম্পৃক্ত করা ও জঙ্গি তৎপরতা সম্পর্কে তাদের বাড়তি সতর্ক করতেই তাদের সাথে মতবিনিময় সভা করেছি।

সভায় মসজিদ, মাজার ও মাদ্রাসাগুলোতে আলেম ও মাশায়েখদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি।

সিলেট অঞ্চলে জঙ্গি হামলার আশঙ্কার বিষয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সিলেট ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ফরিদ উদ্দিন আহমদ।

তিনি জানান, সিলেট অঞ্চলে প্রায় ১৯ হাজার মসজিদ ও পাঁচ শতাধিক মাজার রয়েছে। এছাড়া প্রায় ৩০ হাজার মাদ্রাসা রয়েছে। এসব স্থাপনায় কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই।

পুলিশি নিরাপত্তার পাশাপাশি নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

২০০৪ সালের ২১ মে হযরত শাহজালালের মাজারে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর উপর বোমা হামলা হয়। সে বছরের ৭ অগাস্ট তালতলায় গুলশান সেন্টারে বোমা হামলায় নিহত হন আওয়ামী লীগ নেতা ইব্রাহিম আলী।

এরপর ২৪ ডিসেম্বর তাঁতী পাড়ায় আওয়ামী লীগ নেত্রী সাবেক সংসদ সদস্য জেবুন্নেছা হকের বাসায় মহিলা আওয়ামী লীগের সভায় বোমা হামলা চালানো হয়।

২০০৫ সালের ১৭ অগাস্ট দেশের অন্যান্য জেলার পাশাপাশি সিলেটের ২৯টি স্থানে একযোগে সিরিজ বোমা হামলার ঘটনা ঘটে।

সর্বশেষ গত বছরের ১২ মে সুবিদ বাজারে লেখক অনন্ত বিজয় দাশকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

এ সব ঘটনায় করা মামলায় জঙ্গিদের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পান তদন্তকারী কর্মকর্তারা।

এছাড়া ২০০৬ সালে ২ মার্চ নগরীর শাপলাবাগে অভিযানে গ্রেপ্তার হন তৎকালীন জেএমবি নেতা শায়খ আব্দুর রহমান। পরে তার ফাঁসি হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত