তাহিরপুর প্রতিনিধি

১৪ মার্চ, ২০২৪ ১৪:৪৫

ভারতের কয়লাখনিতে পাথর চাপায় তাহিরপুরের যুবক নিহত

অবৈধভাবে ভারতের কয়লাখনি থেকে কয়লা আনতে গিয়ে পাথর চাপায় আইয়ুব আলী (২৪)নামে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত।

তিনি সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের রজনী লাইন গ্রামের বাসিন্দা মজনু মিয়ার বড় ছেলে।

বৃহস্পতিবার(১৪ই মার্চ) ভোর রাতে ১১৯৯ আন্তর্জাতিক পিলার ভারতের মেঘালয়ের ৪ নাম্বার নামক এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য জামাল মিয়া এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয় এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার রজনী লাইন গ্রামের আইয়ুব আলী (২৪)সহ ১০-১৫ জনের একটি দল সেহেরী খাওয়ার আগেই স্থানীয় চিহ্নিত চোরাকারবারিদের প্ররোচনায় ভারতের ১১৯৯ আন্তর্জাতিক পিলার বড়ছড়া বিজিবি ক্যাম্পের বুরুংগা ছড়া এলাকা অতিক্রম করে ভারতের মেঘালয়ের ৪ নাম্বার এলাকায় কয়লা কোয়ারীতে যায়। কয়লা কোয়ারীর ভেতর থেকে কয়লা নিয়ে বের হয়ে আসার সময় উপর থেকে মাথায় পাথর পরে ঘটনা স্থলেই নিহত হয়। এসময় সাথে থাকা সহযোগীরা তাকে উদ্ধার করে বাংলাদেশ সীমান্ত নিহতের বাড়িতে নিয়ে আসে। খবর পেয়ে ট্যাকেরঘাট পুলিশ ফাঁড়ি  ও তাহিরপুর থানার সদস্যরা নিহতের বাড়ি থেকে লাশ উদ্ধার করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দারা জানান,সীমান্তের চিহ্নিত চোরাচালানীদের কারনে একের পর এক যুবকের মৃত্যু হচ্ছে ভারতের কয়লা গোহায়। এই সব চোরাচালানীরা বলে বেড়ায় তাদের একজন গডফাদার রয়েছে সে সাংবাদিক, পুলিশ, বিজিবি, র‍্যাব ও ডিবিসহ সবাইকে ম্যানেজ করে অবৈধ ভাবে ভারতে পাঠাচ্ছে। আর ঐসব যুবকরা টাকার লোভে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সীমান্তের চোরাই পথে অবৈধভাবে কয়লাসহ বিভিন্ন ভারতীয় পন্য আনার জন্য ভারতে যায়। গত দুই বছরের ব্যবধানে কয়লা আনতে গিয়ে ৫ জনের বেশি নিহত হয়েছে আহত হয়েছে শতাধিক।

খোঁজ নিয়ে জানাযায়, ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল উপজেলার বালিয়াঘাট সীমান্ত ফাঁড়ির লাকমা এলাকা দিয়ে ভারতীয় চোরাই কয়লার কোয়ারী থেকে চুরি করে কয়লা আনতে গিয়ে কোয়ারীর মাটি চাপা পড়ে অনিক মিয়া(২০)নামের এক বাংলাদেশী যুবকের মৃত্যু হয়। একেই ভাবে ০৪ অক্টোবর সকাল ৯টার দিকে ট্যাকেরঘাট সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতের শিবপুর বস্তি এলাকার কালা পাহাড়ের চোরাই কয়লার গুহার ভিতরে ডুকে(কয়লা কোয়ারী)কয়লার বস্তা নিয়ে আসার সময় বড় পাথর চাপায় রুবেল মিয়া(২৮)নামে যুবকের মৃত্যু হয়েছে। নিহত রুবেল মিয়া উপজেলা উত্তর বড়দল ইউনিয়ন রজনী লাইন গ্রামের কেনু মিয়ার ছেলে।

গত বছরের ১৩ জানুয়ারি উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়ন বুরুঙ্গাছড়া এলাকা দিয়ে অবৈধভাবে কয়লা আনতে যাবার পথে বিএসএফ গুলি করে পরে চিকিৎসাধিন অবস্থা মারা যায়। এছাড়াও গত বছরের ৭ নভেম্বর চাঁনপুর সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারতে কয়লা আনতে গিয়ে তিন বাংলাদেশে আটকের পর বিএসএফ পতাকা বৈঠকের মাধ্যম হস্তান্তর করে।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য জামাল মিয়া জানান,নিহতের পরিবারে ও এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহত আইয়ুব আলী (২৪)পরিবারের সবার বড় ছিল।

এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ট্যাকেরঘাট বিজিবি ক্যাম্পের সরকারী মোবাইল ফোন নাম্বারে কল  দিলেও কেউ রিসিভ না করায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।

তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাজিম উদ্দীন নিহতের সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।  ময়নাতদন্তের জন্য সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো প্রস্তুতি চলছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত