তাহিরপুর প্রতিনিধি

১৭ মার্চ, ২০২৪ ২০:৪৩

ছুটি না নিয়ে স্থায়ীভাবে ইংল্যান্ডে তাহিরপুরের স্কুল-শিক্ষক, বিভাগীয় মামলা

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় সাজেদা আফরিন আশা (২৪) নামে এক শিক্ষিকা কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়েই দেশ ত্যাগ করে ইংল্যান্ডে অবস্থান করায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

তিনি সাহিদাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের লাউড়েরগর গ্রামের আলী আকবরের মেয়ে।

এছাড়াও তিনিসহ জেলার ১৯ জন সহকারী শিক্ষক এবং একজন প্রধান শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরে বিনা অনুমতিতে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকায় তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২০ সালে সহকারী শিক্ষক হিসেবে সাহিদাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগ দেন। চাকরি পাওয়ার পর বিয়ে করেন সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষককে। এরপর ২০২২ সালের শেষ দিকে আইএলটিএস কোর্স করার কথা বলে সিলেটে থাকতে শুরু করেন তিনি। এরপর থেকে বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকায় প্রধান শিক্ষক ফোন করলে ওই শিক্ষক জানান তিনি অসুস্থতার কারণে মেডিকেল ছুটিতে আছেন। কিন্তু কোনো ছুটিই তিনি নেননি। দীর্ঘদিন ধরে এমন উত্তর দেয়ার বিষয়টি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে একাধিকবার অবহিত করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষকরা। এরপরও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি শিক্ষা কর্মকর্তা। পরে জানা যায়, ইংল্যান্ডে পাড়ি জমিয়েছেন তার স্বামীর সাথে।

বিদ্যালয়ের অভিভাবক ও স্থানীয়দের অভিযোগ সাজেদা আফরিন আশা দেড় বছরের বেশি দিন বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থেকেও নিয়মিত বেতন ভাতা উত্তোলন করেছিলেন। গত বছর ২০২৩ সালের জুলাই মাসে তিনি ইংল্যান্ড চলে যাওয়ার আগেও প্রতিষ্ঠানকে এ ব্যাপারে কিছুই জানাননি। পরে বিভিন্ন সূত্রে এ তথ্য জানতে পারেন প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা। বিদেশ চলে যাওয়ার পরও মাস দুয়েক বেতন-ভাতা নিয়েছেন ওই শিক্ষক।

শফিক মিয়া, আশিক মাহমুদসহ স্থানীয়রা বলছেন, যারা শিক্ষকের চাকরি নিয়ে বিদেশে চলে গেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলেই শেষ হবে না শাস্তির ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। আর তাদের চাকরি থেকে স্থায়ী ভাবে বহিষ্কার করে নতুন করে নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানান।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমা বেগম বলেন, সহকারী শিক্ষক সাজেদা আফরিন আশা বিদেশ যাওয়ার পূর্বে চিকিৎসার অজুহাতে প্রায় এক বছর বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন। দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকলেও তিনি মেডিকেল ছুটির বিষয়ে প্রতিষ্ঠানকে অবগত করেননি। এই বিষয়টি একাধিকবার উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছিল।

তাহিরপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল খায়ের জানান, ওই শিক্ষকের এই বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসে রিপোর্ট পাঠিয়েছিলাম গত বছরেই।

সুনামগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহন লাল দাস জানান, বিনা অনুমতিতে দীর্ঘদিন বিদ্যালয়ে অনুপস্থিতির কারণে বিভাগীয় মামলা দায়েরের পর কর্তৃপক্ষ বেশ কিছু পদ শূন্য ঘোষণা করেছেন। শীঘ্রই তাদের বিষয়েও সিদ্ধান্ত হতে পারে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত