নিজস্ব প্রতিবেদক

২০ মার্চ, ২০২৪ ২২:৫১

কানাইঘাটের শাহনেওয়াজ হত্যায় ৫ জনের যাবজ্জীবন

প্রতীকী ছবি

সিলেটের কানাইঘাটে যুবক শাহনেওয়াজ (১৯) হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি দণ্ডপ্রাপ্তদের ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রমে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২০ মার্চ) দুপুরে সিলেটের বিশেষ জজ আদালতের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মো.শাহাদৎ হোসেন প্রামানিক এ রায় ঘোষণা করেন।

রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই আদালতের পেশকার (বেঞ্চ সহকারী) মো. আহম্মদ আলী।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন সিলেটের জৈন্তাপুর থানার পাত্তন গ্রামের নুরুল হক ওরফে কুটি মাস্টারের ছেলে আবুল কাশেম ওরফে মারুফ (২৯), একই গ্রামের নুরুল হকের ছেলে বাবুল আহমেদ (২১), ইরফান আলীর ছেলে লোকমান (২২), কানাইঘাট থানার মালি গ্রামের মৃত মকবুল আলীর ছেলে খলিল উদ্দিন (৪৮) ও একই এলাকার মৃত মাহমুদ আলীর ছেলে দর্জি হেলাল (৪০)।

এরমধ্যে বুধবার রায় ঘোষণার সময় সাজাপ্রাপ্ত আসামি আবুল কাশেম ওরফে মারুফ ও দর্জি হেলাল আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত থাকলেও অপর সাজাপ্রাপ্ত আসামি বাবুল আহমেদ, লোকমান ও খলিল উদ্দিন পলাতক ছিলেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, আসামিদের সাথে কানাইঘাট থানার মালিগ্রামের ফখরুল ইসলামের ছেলে শাহনেওয়াজের (১৯) প্রেমঘটিত বিষয়াদি নিয়ে পূর্ব বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরে ২০১১ সালের ২৬ জুন রাত ৯টার দিকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বাড়ি থেকে শাহনেওয়াজকে বাইরে ডেকে নেয় আসামিরা। পরে তারা শাহনেওয়াজের পরনের গেঞ্জি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে এবং কানাঘাট থানার পর্বতপুর গ্রামের লাইন নদীতে তার লাশ ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়।

এদিকে, দুই দিন শাহনেওয়াজ বাড়ি ফিরতে না দেখে তার পরিবার তাকে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজি করতে থাকেন। এক পর্যায়ে ২৯ জুন সকাল ৯টার দিকে পর্বতপুর লাইন নদীর সাকোঁতে শাহনেওয়াজের লাশ দেখতে পেয়ে স্থানীয় লোকজন তার পরিবাকে খবর দেন। পরে পরিবারের লোকজন গিয়ে শাহনেওয়াজের লাশ শনাক্ত করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।

এ ঘটনায় নিহত শাহনেওয়াজের পিতা ফখরুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে কানাইঘাট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১১ সালের ৩১ অক্টোবর কানাইঘাট থানার এসআই এনাম উদ্দিন আহমেদ ৫ আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ মামলার চার্জশিট দাখিল করেন। ২০১৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন (অভিযোগ গঠন) করে আদালত এ মামলার বিচারকার্য শুরু করেন।

দীর্ঘ শুনানি ও ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বুধবার (২০ মার্চ) আদালত আসামি আবুল কাশেম ওরফে মারুফ, দর্জি হেলাল, বাবুল আহমেদ, লোকমান ও খলিল উদ্দিনকে ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাদের প্রত্যেককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং প্রত্যেক আসামিকে ২০১ ধারায় আরও দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ২ মাসের বিনাশ্রমে কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন।

রাষ্ট্রপক্ষে স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট মো. ফখরুল ইসলাম ও আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট মো. ছয়ফুল আলম, এ এস এম এ গফুর ও রমা চন্দ্র নাথ মামলাটি পরিচালনা করেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত