সিলেটটুডে ডেস্ক

১৯ এপ্রিল, ২০২৪ ১৫:২৮

সিলেটে প্রথমবারের মতো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ডে পালন

সিলেটে প্রথমবারের মতো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ডে পালন করেছে পরিবেশ ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ ট্রাস্ট, সিলেট।

দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার " ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণে আমাদের করণীয়" শীর্ষক মুক্ত আলোচনার আয়োজন করে ট্রাস্ট। এতে সভাপতিত্ব করেন ডা.মোস্তফা শাহজামান চৌধুরী বাহার এবং সঞ্চালনা করেন সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী ও ট্রাস্টি গোলাম সোবহান চৌধুরী দিপন।

এতে বক্তব্য রাখেন, সিলেট মহানগর আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক, রাজনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মো. জাকির হোসেন, অধ্যক্ষ আতাউর রহমান পীর, বাপা সিলেটের প্রেসিডেন্ট জামিল আহমদ চৌধুরী, রাজনীতিবিদ ও কলামিস্ট অ্যাডভোকেট আনসার খান, অধ্যাপক ড. এম. ফারুক উদ্দিন, শাবিপ্রবির সিন্ডিকেট মেম্বার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোস্তাবুর রহমান, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এনামুল মুনির, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ প্রাক্তন সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ মনির হেলাল, কথাকলির সভাপতি ও নাট্যজন শামসুল বাসিত শেরো, রাজনীতিবিদ ও ছড়াকার জগলু চৌধুরী, কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মাহমুদ রাজা, সাংবাদিক সেলিম আওয়াল, সিলেট বারের প্রাক্তন সহ সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন দিলু, অ্যাডভোকেট বদরুল আহমদ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট চৌধুরী আতাউর রহমান আজাদ, মেট্রোপলিটন ল' কলেজের অধ্যক্ষ ড. এম শহীদুল ইসলাম, সিলেট বারের সহ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সলমান মিয়া, সেভ দা হেরিটেজ প্রেসিডেন্ট আবদুল হাই আল হাদি এবং এমসি কলেজের ছাত্রী তানজিনা বেগম।

উপস্থিত ছিলেন, রাজনীতিবিদ উজ্জ্বল রায়, উদীচি সভাপতি রতন দেব, ট্রাস্টি জাকির হোসেন সোহেল,এক্টিভিস্ট রেজাউল কিবরিয়া লিমন, অ্যাডভোকেট শামীম হাসান চৌধুরী, সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী খায়রুল আলম, সমাজকর্মী রোমেনা বেগম রোজি, নাট্য সংগঠক নাহিদ পারভেজ বাবু, কৃষিবিদ বিজিত কুমার আচার্য, অধ্যাপক আখলাকুল আসপিয়া, যুব সংগঠক মতিউর রহমান, ফাতেমা ইয়াছমিন ইমা, মনতোষ সরকার, সন্জয় কান্তি দাস,ইসতিয়াক আহমদ, নিরুপমা সাহা, রিচি ব্যানার্জী, জয়দীপ চক্রবর্তী, দোয়েল রায়, বুশরা সোহেল।

মুক্ত আলোচনায় আলোচকবৃন্দ অভিমত ব্যক্ত করেন, আমাদের সমস্ত প্রাচীন স্থান এবং স্মৃতিচিহ্নগুলি আমাদের পূর্বপুরুষদের সম্পদ এবং ঐতিহ্যের একটি অংশ। সকলের জন্য এই সম্পদ এবং ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করতে এগিয়ে আসতে হবে।

বক্তাগণ সিলেটের ঐতিহ্যবাহী এমসি কলেজের স্থাপনা রক্ষার উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে সারাদেশের ন্যায় সিলেটের বিভিন্ন আনাচে-কানাচে অসংখ্য প্রত্নস্থল বিদ্যমান উল্লেখ করে এইসব প্রত্নস্থল সংরক্ষণে সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানান। বক্তারা উল্লেখ করেন অনেক ক্ষেত্রে শুধুমাত্র অসচেতনতার কারণে আমাদের অনেক ঐতিহাসিক নিদর্শন আমরা ধ্বংস করে ফেলি।
মুক্ত আলোচনায় নানা পেশার ব্যক্তিরা সাম্প্রতিক সময়ে সিলেটের আবু সিনা ছাত্রাবাসের স্থাপনা, গোলাপগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী দেওয়ানের পুল ভেংগে ফেলার দুঃখজনক ঘটনার উল্লেখ করেন এবং এখন পর্যন্ত টিকে থাকা ঐতিহাসিক স্থাপনাসমুহ সংরক্ষণে দ্রত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানিয়ে সিলেটে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক অফিস স্থাপনের আহবান জানান।

মুক্ত আলোচনায় পরিবেশ ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ ট্রাস্ট, সিলেট প্রস্তাবনা রাখে-

১। ইতিহাস ও ঐতিহ্য সভ্য মানুষের আত্নপরিচয়ের বিষয় বিধায় তা সংরক্ষণে নাগরিক উদ্যোগ গড়ে উঠুক।

২। ঐতিহ্য, ঐতিহ্যমন্ডিত ও ঐতিহাসিক স্মৃতি, স্থাপনাসমূহ ও নিদর্শন সংরক্ষণে সচেতন নাগরিক সমাজ প্রতিষ্ঠা, এবং

৩।  মুরারিচাঁদ কলেজ সহ সিলেটের সকল হেরিটেজ সাইট ও ভবন সুরক্ষার জন্য নাগরিক আন্দোলনের পাশাপাশি জনসচেতনা গড়ে তোলা এবং ঐতিহ্য রক্ষার্থে নাগরিক সেল গঠন করা জরুরী।

মুক্ত আলোচনায় মুরারিচাঁদ কলেজসহ সিলেটের গৌরবময় ঐতিহ্য সংরক্ষণে প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়। ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণের সচেতনতা সৃষ্টিতে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক এক্টিভিজম গড়ে তোলার উপর জোরারূপ করা হয়।

উল্লেখ্য, ১৯৮২ সালে ‘ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল ফর মনুমেন্টস অ্যান্ড সাইটস (ICOMOS)’ তিউনিশিয়ায় একটি আলোচনা সভায় ১৮ এপ্রিলকে ‘ইন্টারন্যাশনাল ডে ফর মনুমেন্টস অ্যান্ড সাইটস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। পরবর্তী সময়ে ১৯৮৩ সালে দিনটি ‘বিশ্ব ঐতিহ্য দিবস’ হিসেবে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পায়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের তাগিদ থেকে মূলত দিনটি পালন করা হয়ে থাকে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত