নিজস্ব প্রতিবেদক

০১ মে, ২০২৪ ০২:৫৮

মহান মে দিবস আজ

মহান মে দিবস কর্মক্ষেত্রে বঞ্চনার বিরুদ্ধে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের রক্তাক্ত সংগ্রামের ইতিহাস গড়ার দিন। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হচ্ছে।

দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য- ‘শ্রমিক-মালিক ঐক্য গড়ি, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলি’।

দৈনিক আট ঘণ্টা কাজের সময় নির্ধারণের দাবিতে ১৮৮৬ সালের ১ মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেট চত্বরে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর গুলি চালায় পুলিশ। এতে অর্ধশত শ্রমিক হতাহত হন। এ হত্যার প্রতিবাদে বিশ্বব্যাপী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এর তিন বছর পর ১৮৮৯ সালের ১৪ জুলাই ফ্রান্সের প্যারিসে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক শ্রমিক সম্মেলনে শিকাগোর রক্তঝরা দিনটিকে 'মে দিবস' হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

মহান মে দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার বাণীতে জীবনমান উন্নয়ন এবং ন্যায্য অধিকার রক্ষায় স্ব স্ব ক্ষেত্রে ঐকান্তিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘শিল্প ও শ্রমবান্ধব সরকার শ্রমিকের সার্বিক কল্যাণে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে। বিশ্বের শ্রমজীবী-কর্মজীবী মেহনতি মানুষের ঐক্য, সংহতি, সংগ্রাম ও বিজয়ের দিন মহান মে দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি উদযাপনের উদ্যোগ নিয়েছে। বিশ্বব্যাপী আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে শ্রমজীবী মানুষের কঠোর পরিশ্রম, ত্যাগ ও ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাই দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে শ্রমিকের অধিকার ও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন শোষিত, বঞ্চিত ও শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছেন। শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি ১৯৭২ সালে জাতীয় শ্রমনীতি প্রণয়ন করেন এবং প্রথম মহান মে দিবসকে শ্রমিক সংহতি দিবস হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের স্বীকৃতি দেন। জাতির পিতা মে দিবসে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন। তিনি শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে মজুরি কমিশন গঠন করেন এবং নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণা করেন। জাতির পিতার উদ্যোগে বাংলাদেশ ১৯৭২ সালের ২২ জুন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সদস্যপদ লাভ করে। আমাদের সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক এবং কার্যক্রম আরও সুদৃঢ় হয়েছে। শিল্প-কারখানায় কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করতে কল-কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন পরিদপ্তরকে অধিদপ্তরে উন্নীত করা হয়েছে। এ ছাড়া, শ্রমিক ও তাদের পরিবারের কল্যাণে বিভিন্ন সেবার সম্প্রসারণ ও জোরদার করতে শ্রম পরিদপ্তরকে অধিদপ্তরে রূপান্তরিত করা হয়েছে।’

মহান মে দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে শ্রমিক সমাবেশ, শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, সেমিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

মহান মে দিবস উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় পত্রিকাসমূহ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো দিনটি উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান ও টকশো সম্প্রচার করবে।

রাজধানী ঢাকায় কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আজ বেলা ১১টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আলোচনা সভা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দপ্তর/সংস্থার মাঠ পর্যায়ের কার্যালয়গুলো জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করবে। দেশের বিভিন্ন সড়ক দ্বীপ ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড দ্বারা সজ্জিত থাকবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত