শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি

২৩ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:৫৩

এবার চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২ কোটি ২২ লক্ষ মেট্রিক টন

দেশে এবার ২ কোটি ২২ লক্ষ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার৷

সোমবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের উত্তরসুর এলাকার হাইল হাওরে আয়োজিত বোরো ধান কর্তন উৎসবে এ কথা জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ এমপি৷

বোরো ধান কর্তন উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্রধান অতিথির বক্তব্য কৃষিমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের উৎপাদিত চালের চাহিদার অর্ধেকেরও বেশি জোগান দেয় বোরো ধান৷ বোরো ধানের আবাদ বাড়াতে সরকার সারাদেশে কৃষকদের ২১৫ কোটি টাকারও বেশি প্রণোদনা দিয়েছে।

এবার ২ কোটি ২২ লক্ষ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে৷ এখন বোরো ধান কাটার মৌসুম। হাওরসহ বিভিন্ন অঞ্চলে রোপণ করা ধানগুলো সঠিকভাবে ঘরে তুলতে পারলে আমাদের চালের আর ঘাটতি থাকবে না৷ হাওর অধ্যুষিত সাতটি জেলায় ৪ লাখ ৫৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে৷ ইতিমধ্যে গড়ে প্রায় ২০ শতাংশ ধান কাটা হয়ে গেছে৷ আমরা হাওরের কোন জমি খালি না রাখার চেষ্টা করছি৷ তাই শ্রীমঙ্গলের হাইল হাওরেও আমরা কোন জমি খালি রাখব না, বোরো চাষ করে আমরা যেন আরও বেশি চাল উৎপাদন করতে পারি সেই লোককে কাজ করছি৷ আমাদের চাষের জমি কম কিন্তু আমাদের এই কম জমিতেই বেশি ধান উৎপাদন করতে হবে৷

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের ধান গবেষণা কেন্দ্র সারাদেশেই উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল জাতের ধানের চাষ করে৷ ব্রি ৮৯ ধান ,ব্রি ৯৯ ধান,ক্লোন ধান ১০০,বীনা ধান ২৫, বঙ্গবন্ধু ১০০ জাতের ধান চাষ করে কৃষকরা অভূতপূর্ব ফলন পেয়েছেন৷ এলাকাভেদে এই ধানের জাতগুলোর বিঘাপ্রতি ফলন হয়েছে ২৫ থেকে ৩০ মণ৷ প্রতি শতক জমিতে ১ মণ ফলন পেয়েছেন কৃষকরা৷ আগে বিঘাপ্রতি সাত থেকে সাড়ে সাত মণ ধান পাওয়া যেতো এখন বিঘাপ্রতি ৩০ মণ ধান উৎপাদন করছেন কৃষকরা৷ তাই এখন পুরোনো জাতের ধানগুলো বাদ দিয়ে নতুন উদ্ভাবিত ধানের জাতগুলোর চাষ করতে হবে৷ এই উচ্চ ফলনশীল ধানগুলো চাষ করে আমরা যেন এগুলো বিদেশে রপ্তানি করতে পারি সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে৷ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ দিয়েছেন সারাদেশে ধানের উৎপাদনকে আরও ব্যাপকভাবে বাড়ানোর৷ এবং কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য বিদেশেও রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে৷

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, গাজীপুরের আয়োজনে এবং শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজারের উপপরিচালক মো. সামছুদ্দিন আহমদ ও পূজা উদযাপন পরিষদ শ্রীমঙ্গল উপজেলার যুগ্ম সম্পাদক সুদিপ দাশ রিংকুর যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মৌলভীবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট গাজীপুরের মহাপরিচালক (গ্রেড-১) ড. মো. শাহজাহান কবীর, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সার ব্যবস্থাপনা ও উপকরণ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. শাহ মো. হেলাল উদ্দিন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি ঢাকার সরজমিন উইংয়ের পরিচালক মো. তাজুল ইসলাম পাটোয়ারী, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি ঢাকার কৃষি তথ্য সার্ভিসের পরিচালক ড. সুরজিত সাহা রায়, মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার মো. মনজুর রহমান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সিলেট অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মো. মতিউজ্জামান, শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ভানু লাল রায় এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবু তালেব।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত