নিজস্ব প্রতিবেদক

১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ১৯:৫১

কিবরিয়া হত্যাসহ ৪ মামলায় জামিন পেলেন বাবর

সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলাসহ সিলেটে চার মামলায় জামিন পেয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। বুধবার সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক স্বপন কুমার সরকার শুনানি শেষে তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন।

বাবরের আইনজীবী শহীদুজ্জামান চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, লুৎফুজ্জামান বাবরের বিরুদ্ধে সিলেটে চারটি মামলা ছিল। আজ শুনানির পর ওই চারটি মামলায় তিনি জামিন পেয়েছেন। তার বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি মামলা আছে। যার মধ্যে কয়েকটিতে সাজাও হয়েছে। তিনি বর্তমানে কাশিমপুর কারাগারে আছেন। তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ।

সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলা, সাবেক রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত হত্যাচেষ্টা মামলা এবং বিস্ফোরক আইনে করা দুটি মামলাসহ চারটি মামলায় লুৎফুজ্জামান বাবর জামিন পেয়েছেন।

 সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বেঞ্চ সহকারী জয়নাল আবদীন বলেন, ৪ সেপ্টেম্বর সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের জামিন শুনানির আবেদন করেছিলেন আইনজীবী। পরে আদালতের বিচারক ১১ সেপ্টেম্বর জামিন শুনানির তারিখ নির্ধারণ করেন।

২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে আওয়ামী লীগের ঈদ–পরবর্তী জনসভা শেষে বের হওয়ার পথে গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত হন শাহ এ এম এস কিবরিয়া। ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা যান তিনি। হামলায় তাঁর ভাতিজা শাহ মঞ্জুরুল হুদা, আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা আবদুর রহিম, আবুল হোসেন ও সিদ্দিক আলী নিহত হন। আহত হন ৭০ জন।

ঘটনার পরদিন জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল মজিদ খান বাদী হয়ে হত্যা মামলা ও পুলিশ বাদী হয়ে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আরেকটি মামলা করে। পরে মামলা দুটি সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়। তদন্ত শেষে ২০০৫ সালের ১৮ মার্চ শহীদ জিয়া স্মৃতি ও গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল কাইউমসহ ১০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে প্রথম অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। কিন্তু অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি আবেদন করে বাদীপক্ষ।

২০০৭ সালে মামলাটি পুনঃ তদন্তের জন্য আবার সিআইডিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। দ্বিতীয় দফায় ২০১১ সালের ২০ জুন আসামির সংখ্যা আরও ১৬ জন বাড়িয়ে ২৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। এ নিয়েও আপত্তি তোলে বাদীপক্ষ। পরে ২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর মামলার পঞ্চম তদন্তকারী কর্মকর্তা সিলেট অঞ্চলের তৎকালীন সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মেহেরুন্নেসা পারুল আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এতে নতুন করে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব প্রয়াত হারিছ চৌধুরী, সিলেটের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ ৩৫ জনকে আসামি করা হয়। তাঁদের মধ্যে দুজন মামলা চলাকালে মারা গেছেন।

২০০৪ সালের ২১ জুন সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের নির্বাচনী এলাকা সুনামগঞ্জের দিরাই বাজারে একটি রাজনৈতিক সমাবেশে গ্রেনেড হামলা হয়। সমাবেশে তখন প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছিলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। তিনি অল্পের জন্য রক্ষা পান। গ্রেনেড বিস্ফোরণে এক যুবলীগের কর্মী ঘটনাস্থলে নিহত হন। ওই ঘটনায় দিরাই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হেলাল উদ্দিন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দুটি মামলা করেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত