সিলেটটুডে ডেস্ক

০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ ২০:৩৩

যুক্তরাজ্যে থেকে সিলেটে ছিনতাই মামলার আসামি!

সিলেটের যুক্তরাজ্য প্রবাসী এক ব্যক্তিকে ছিনতাই মামলার আসামি করা হয়েছে। যে সময় ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে বলে মামলায় দাবি করা হয়েছে সেসময় ওই প্রবাসী যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছিলেন বলে জানা গেছে।

জানা যায়, যুক্তরাজ্য প্রবাসী হুমায়ূন কবির ৫ ফেব্রুয়ারি দেশে আসেন। এরপর ২৪ মে তিনি দেশে ফিরে যান। তবে প্রধান আসামি করে তিনজনের বিরুদ্ধে গত ৩০ অক্টোবর আদালতে দায়ের করা হয় ছিনতাই মামলা। মামলার এজহারে ২৮ অক্টোবর ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। আদালতের আদেশে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে।

এ মামলার বাদী মোহাম্মদ জিলু হকও যুক্তরাজ্য প্রবাসী। ৩০ অক্টোবর অতিরিক্ত চীফ মেট্টােপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ও আমলী আদালত-৬ এ নগরীর চৌকিদেখির বাসিন্দা মোহাম্মদ জিলু হক অভিযোগ করেন, ২৮ অক্টোবর সকালে তিনি কাজিরবাজার থেকে আসার পথে চৌকিদেখি-আম্বরখানা মুখে  একই এলাকার হুমায়ূন কবির, লায়েক আহমদ ও মো. ইমন আহমদসহ কয়েকজন তার উপর হামলার পর গাড়ি ভাংচুর করে চাকুর ভয় দেখিয়ে ১২ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন। পরে ফোন করা হলে স্বাক্ষীরা এসে তাকে উদ্ধার করেন।

তিনি আরো অভিযোগ করেন, থানা পুলিশ মামলা না নেয়ায় আদালতের শরনাপন্ন হন।  

১০ নভেম্বর আদালতের বিচারক আবদুল মোমেন মামলাটি তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য এয়ারপোর্ট থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন। এরপর পুলিশ অভিযুক্তদের বাড়ি গিয়ে তদন্ত কার্যক্রম চালানোর পর শুরু হয় হৈ চৈ।

মামলার প্রধান অভিযুক্ত প্রবাসী হুমায়ুন কবির জানান, তিনি দেশে আসার পর মামলার বাদি মোহাম্মদ জিলু হকের কাছে গত ১৭ এপ্রিল একটি বাসা বিক্রি করেন। এসময় জিলু হক সম্পূর্ণ টাকা দিতে না পারায় হুমায়ূন কবিরকে ২১ এপ্রিলের সাত লাখ ২০ হাজার টাকার ইসলামি ব্যাংকের একটি চেক প্রদান করেন। কিন্তু পরবর্তি সময়ে টাকা প্রদানের তাগাদা দেয়া হলে জিলু হক টালবাহানা শুরু করেন। এ নিয়ে নগরের দাড়িয়াড়ার বাসিন্দা কুমকুম আলমগীরের বাসায় কয়েক দফা বৈঠকও হয়। কিন্তু পাওয়া টাকা পরিশোধ করেন নি জিলু হক। এতে করে একপর্যায়ে মামলার সিদ্ধান্ত নেন হুমায়ূন কবির। কিন্তু ততোক্ষণে জরুরী কাজে যুক্তরাজ্যে চলে যাওয়ার সময় হলে মামলাটি পরিচালনার জন্য তার পরিচিত লায়েক আহমদকে আমমোক্তার নিয়োগ করেন। গত ২৪ মে হুমায়ূন কবির যুক্তরাজ্যে চলে যান। আর তার আমমোক্তার মো. লায়েক আহমদ ২৬ জুন অতিরিক্ত চীফ মেট্টােপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জিলু হকের বিরুদ্ধে এনআই এক্ট-এর ১৩৮ ধারায় মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার সূত্রপাতে সরকার পতনের পর আক্রাশে জিলু হক তাদের বিরুদ্ধে এই মিথ্যে মামলা দায়ের করেন।

জিলু হকের মামলার সাক্ষী করা হয়েছে কুমকুম আলমগীরকে। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, 'জিলু হকের দায়ের করা ছিনতাই মামলা সম্পর্কে আমি অবগত নই। তবে জায়গা এবং হুমায়ূনের টাকা পাওনা সম্পর্কে আমি অবগত। আমার বাসাতেই জিলু ও হুমায়ূন এ নিয়ে কয়েকবার বৈঠক করেছেন।'

হুমায়ূন কবির যুক্তরাজ্যে থেকেও কিভাবে ছিনতাই করলেন-জানতে মামলাটির বাদি জিলু হকের সাথে কথা বলতে কয়েকবার যোগাযোগ করা হলেও তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এ ব্যাপারে এয়ারপোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সৈয়দ আনিসুর রহমান বলেন, মামলাটির প্রাথমিক তদন্তে জানা যায় হুমায়ূন আহমেদ বাদী জিলু হকের কাছে বাসা বিক্রি বাবদ টাকা পাবেন। এ ঘটনার জেরেই পাল্টাপাল্টি মামলা করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, বিষয়টি সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করা হচ্ছে।


আপনার মন্তব্য

আলোচিত