
২১ জানুয়ারি, ২০২৫ ২২:৪১
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট সিলেট নগর শাখার উদ্যোগে সংগঠনের ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সিলেটে মিছিল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বিকাল সাড়ে ৩টায় সিলেট শহীদ মিনার থেকে একটি সুসজ্জিত মিছিল শুরু হয়ে সিটি পয়েন্টে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।
নগর শাখার সহ সভাপতি সুমিত কান্তি দাস পিনাক এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক বুশরা সুহাইলের সঞ্চালনায় উক্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) সিলেট জেলা সাংগঠনিক কমিটির সমন্বয়ক কমরেড সঞ্জয় কান্ত দাস, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট সিলেট নগর শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক দোয়েল রায়, এমসি কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক মিসবা খান, চা বাগান শিক্ষা অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদের সংগঠক অধীর বাউরী প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তরা বলেন, "১৯৮৪ সালে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের অগ্নিগর্ভ থেকে জন্ম নেয় ছাত্র সমাজের অগ্রবর্তী চিন্তার পথিকৃৎ সংগঠন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। জন্মলগ্ন থেকেই শিক্ষা, সংস্কৃতি ও মনুষ্যত্ব রক্ষা ও গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ধারাবাহিক আন্দোলন করে আসছে। সম্প্রতি সংঘটিত জুলাই অভ্যুত্থানে আবু সাঈদ, মীর মুগ্ধ, ওয়াসিম, হৃদয় তরুয়া, রুদ্র সেনের প্রাণের বিনিময়ে একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা জেগে উঠেছে। রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার আলোচনা নতুন প্রত্যাশার জন্ম দিয়েছে এবং অন্তর্র্বতীকালীন সরকার কিছু কমিশন গঠনও করেছেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় সরকার শিক্ষা সংস্কার কমিশন' এখনো গঠন করেনি।"
বক্তারা আরো বলন, আমরা উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করেছি এখন জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদ ও আহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করতে পারেনি সরকার। জুলাই হত্যাকান্ডের বিচার প্রক্রিয়া এখন শুরু করেনি সরকার। উপরুন্ত শিক্ষা অধিদপ্তর প্রজ্ঞাপন জারি করেছে যে, সরকারের বিরোধিতা করা অপরাধ হিসেবে দেখা হবে। আমরা দেখছি, একদিকে পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনীর পোশাক পরিবর্তন করা হচ্ছে,কিন্তু অগণতান্ত্রিক পুলিশ আইন সংস্কার করার কোন কার্যকর লক্ষণ নাই। এমন কি, ন্যায্য আন্দোলনে পুলিশী হামলা,গুলি করে হত্যার মতো ঘটনাও অভ্যুত্থানের পরে সংঘটিত হয়েছে। যা গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থি এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ। এদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় সকল জিনিসপত্রের ন্যায় বাড়ছে শিক্ষা উপকরণের দাম। একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে জুলাই অভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে, অথচ অভ্যুত্থানের পর শিক্ষাক্ষেত্রে এখন বহাল আছে 'টাকা যার। শিক্ষা তার'-এই নীতি। দীর্ঘদিন ধরে সারাদেশে ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের অধিকার এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিঘ্নিত হয়েছে। ক্যাম্পাসে ছাত্র সংসদ নির্বাচন এখন সময়ের দাবি। নির্বাচনের আগে ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে, যাতে সকল সংগঠন সমানভাবে প্রচার-প্রচারণা করতে পারে। শিক্ষার্থীবৃন্দ এবং ছাত্র সংগঠনের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে গঠনতন্ত্র সংশোধন করতে হবে এবং অগণতান্ত্রিক ধারাগুলো বাতিল করতে হবে।"
এছাড়াও বক্তারা বলেন, "একদিকে সমাজে রুচি সংস্কৃতির সংকট দেখা দিচ্ছে, অন্যদিকে বেড়ে চলছে শ্রমজীবী মানুষের উপর নির্যাতন নিপীড়ন। রাস্তায় শীতে রাত কাটাচ্ছে হাজারো মানুষ। এই বৈষম্য তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট এর বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রামের পথ বেছে নিয়েছে। শিক্ষার অধিকার আদায় তথা বৈষম্যহীন সমাজ নির্মাণের সংগ্রামে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান নেতৃবৃন্দ।
আপনার মন্তব্য