নিজস্ব প্রতিবেদক

২২ মার্চ, ২০১৬ ১৯:৫৫

ডিবির হাওরে স্টোন ক্রাশার জোন স্থাপনের প্রতিবাদে নগরীতে মানববন্ধন

সিলেটের জৈন্তাপুরের ডিবির হাওরে ‘স্টোন ক্রাশার জোন’ (পাথর ভাঙার কল অঞ্চল) স্থাপন পরিকল্পনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিশ্ব পানি দিবসে প্রতিবাদী মানববন্ধন হয়েছে।  মঙ্গলবার বিকেলে সিলেট নগরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে প্রতিবাদী মানববন্ধনে হাওর এলাকার বাসিন্দাসহ বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন একাত্ম হন।

একই সময়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) পৃথক ব্যানারে মানববন্ধন করে। তাঁদের দাবি হাওরে স্টোন ক্রাশার জোন করার আগে পরিবেশগত প্রভাব আগে যাছাই করা হোক।

সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী চারটি বিলের সমন্বয়ে ডিবির হাওর। জলমগ্ন থাকলে হাওরের বিলগুলোতে লাল শাপলা ফুল ফোটে। তাই স্থানীয়রা একে বলে লাল শাপলার বিল। এ হাওরে স্টোন ক্রাশার জোন করতে প্রশাসন হাওর এলাকার ৯০০ একর জায়গার মধ্যে ৬২৫ একর জায়গার শ্রেণি পরিবর্তন করেছে।

বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষে আন্তর্জাতিক পরিবেশবাদী সংগঠন ওয়াটারকিপার অ্যালায়েন্সের 'ওয়াটারকিপারস বাংলাদেশ' ও ‘সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার’ যৌথ উদ্যোগে বিকেল চারটায় প্রতিবাদী মানববন্ধন আয়োজন করে।

মানববন্ধনে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সহসভাপতি এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম, টিআইবির সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি ইরফানুজ্জামান চৌধুরী, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক রেজিস্ট্রার জামিল আহমদ চৌধুরী, সিলেট বিভাগ উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি বদরুল আহমদ চৌধুরী, সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর কুহিনুর ইয়াসমিন, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক ছামির মাহমুদ, সেইভ দ্য হেরিটেজ এর সভাপতি আবদুল হাই আল হাদী, চিত্রন চারু শিক্ষালয়ের পরিচালক সত্যজিৎ চক্রবর্তী, সংক্ষুব্ধ নাগরিক আন্দোলনের মুজাহিদ হোসেন মুনিম, বাপা সিলেটের সত্যজিৎ দাস, অ্যাডভোকেট নিতু কান্ত দাস, নি:স্ব সহায়ক সংস্থার সমন্বয়ক ফজলে মাওলা চৌধুরী, বৃক্ষছায়ার পরিচালক শহীদ আহমদ খান সাবের, প্রাধিকারের সাবেক সহসভাপতি নাঈমুল ইসলামসহ বিভিন্ন পেশাজীবী পরিবেশ সচেতন ব্যক্তিরা একাত্মতা প্রকাশ করেন। ডিবির হাওর এলাকার বাসিন্দা শফিকুর রহমান, মাসুক আহমদ ও খুর্শেদ আলম, মুক্তার আহমদ, আবদুল মালিক, জালাল উদ্দিন, আনু মিয়া, আশরাফ আহমদ, মো. মর্তুজ আলী, বিলাল আহমদের নেতৃত্বে ২৫ জনের একটি দল মানববন্ধনে উপস্থিত হয়ে একাত্মতা প্রকাশ করেন।

মানববন্ধনের অন্যতম আয়োজক সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার ও বাপা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম কিম জানান, সিলেটে যত্রতত্র স্টোন ক্রাশার মেশিনের কারণে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছিল। তাই স্টোন ক্রাশার জোন স্থাপনের জন্য দীর্ঘদিন থেকে পরিবেশবাদীরা দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু বিল-হাওর বিনষ্ট করে 'স্টোন ক্রাশার জোন' করার সিদ্ধান্ত পরিবেশ ও প্রতিবেশকে সংকটাপন্ন করবে। জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ হাওর বিনষ্ট হলে এখানকার মিঠাপানির এক অমূল্য ভাণ্ডার প্রকৃতি থেকে চিরতরে হারিয়ে যাবে। স্টোন ক্রাশার জোন স্থাপনের নামে হাওর হত্যার আয়োজন বন্ধ করতে হবে।

একই সময় পৃথক ব্যানারে মানবববন্ধন করে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। ডিবির হাওর এলাকায় পাথর ভাঙার কল অঞ্চল স্থাপনের পূর্বে পরিবেশগত প্রভাব যাছাই করে পরিবেশ উপযোগী স্থানে তা স্থাপনের দাবি জানানো হয়। বেলা সিলেটের সমন্বয়কারী শাহ শাহেদা জানান, যত্রতত্র পাথর ভাঙার কল অঞ্চলভুক্ত করার দাবি পরিবেশবাদীদেরও। তবে পরিবেশ রক্ষা করতে গিয়ে জল, জীববৈচিত্র্য হুমকির সৃষ্টি করা আমরা চাই না।   

আপনার মন্তব্য

আলোচিত