নিজস্ব প্রতিবেদক

১৮ এপ্রিল, ২০১৬ ০১:১৫

দাওয়াতের নাম করে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয় জয়নালকে

সিলেট সদর উপজেলার জাঙ্গাইল গ্রামে গণপিটুনিতে নিহত জয়নাল মিয়া ডাকাতি কিংবা চুরি করতে গিয়ে নয়, তাকে দাওয়াত দিয়ে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। প্রবাসে থাকা অবস্থায় জয়নালের পাওনা টাকা আত্মসাত করতেই তাকে হত্যার পর ডাকাত বলে প্রচার করা হয়।

রোববার সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করেন জয়নালের পিতা আলতা মিয়া। সংবাদ সম্মেলনে তিনি নির্যাতনের ছবি ও এবং প্রত্যক্ষদর্শী দুইজনের বক্তব্যও উপস্থাপন করেন। তিনি ছেলে হত্যার বিচার দাবি করে পুলিশ প্রশাসনকে সঠিক তদন্ত করে ঘাতকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

সিলেট সদর উপজেলার হাটখোলা ইউনিয়নের পাইকরাজ গ্রামের বাসিন্দা আলতা মিয়া অতীতে তার পরিবারের উপর ডাকাতির অভিযোগের কথা স্বীকার করে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন, তার ছেলে জয়নাল মিয়া গত ৫ বছর সৌদি আরব ছিল। সেখানে একই এলাকার জাঙ্গাইল গ্রামের তার বিয়াই আতাউর রহমানের ছেলে কবির আহমদ ও তার ফুফাতো ভাই নন্দিরগাঁওয়ের ফরিদ আহমদের সাথে বসবাস করত। জয়নাল অবৈধ অভিবাসী হওয়ায় কবির ও ফরিদের কাছে টাকা জমা রাখতো। প্রায় ২৬ লাখ টাকা জমা রেখে গত বছর দেশে ফিরে জয়নাল।

বক্তব্যে বলা হয়, দেশে ফিওে জয়নাল পূর্বের একটি মামলায় জামিন লাভ করে। সম্প্রতি কবিরও দেশে ফিরে আসে। জয়নাল তার পাওনা টাকা চাইলে গত ৯ এপ্রিল তারা আলতা মিয়ার বাড়িতে আসে। ১০ হাজার টাকাও দিয়ে যায়। দাওয়াত দিয়ে যায় বাড়িতে যাওয়ার। ১০ এপ্রিল টাকা দেওয়ার কথা বলে আতাউর রহমানের বাড়িতে ডেকে নেওয়া হয় জয়নালকে। দাওয়াত খেয়ে টাকা আনতে জয়নাল মিয়া কবিরের ফুফাতো ভাই নিজামকে সাথে নিয়ে যায়। কিন্তু ওনদিন রাত ১২ টার দিকে আলতা মিয়া জানতে পারি জয়নালকে জাঙ্গাইল এলাকায় মারধর করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পান আতাউর রহমান ও তার ছেলে কবিরসহ কয়েকজন মিলে জয়নালকে মারধর করছে। আতাউর রহমানের গরু নাকি জয়নাল চুরি করতে চাইছিল।

আলতা মিয়া সংবাদ সম্মেলনে বলেন, তার ছেলে জয়নালকে নিজামের যোগসাজশে আতাউর গংরা হত্যা করেছে। চুরির অপবাদ দিয়ে হত্যার পর তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরদিন পুলিশ অজ্ঞাতনামাদের আসামী করে মামলা করে। আলতা জানান, হত্যাকারীদের নাম উল্লেখ করে তিনি আদালতে মামলা করেছেন। ঘটনার পর থেকে জয়নালের সাথে থাকা নিজাম গা ডাকা দিয়েছে। তাকে গ্রেফতার করলেই সকল রহস্য বেরিয়ে আসবে বলে দাবি করেন আলতা।

তিনি মিথ্যা নাটক সাজিয়ে তার প্রবাস ফেরত জয়নালকে হত্যা কারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। সংবাদ সম্মেলনে আল ছেলে স্কুল ছাত্র আনহার মিয়া লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।

এ সময় নিহত জয়নালের মা পিয়ারা খাতুন, প্রত্যক্ষদর্শী মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মানিক ও ব্যবসায়ী আবুল হোসেন, আত্নীয় আব্দুল বারিক, আলাউদ্দিন, আবু সিরাজ, আজাদ মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত