সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা

১৮ এপ্রিল, ২০১৬ ০২:১৯

সুনামগঞ্জে বাঁধ ভেঙে হাওরে পানি ঢুকছে, ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

সুনামগঞ্জের বাঁধ ভেঙে ফসলী জমির আবাদ হওয়া কয়েকটি হাওরে পানি ঢুকায় ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।  


ছবি: শামস শামীম

দিরাই উপজেলার কেজাউড়া দক্ষিণ আপার বাঁধ ভেঙে ভরাম হাওরে পানি ঢুকছে। গত শুক্রবার থেকে লাগাতার বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে কালনী নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় উপজেলার  সবকটি বাঁধ উপচে এবং নদীর তীর উপচে পানি ঢুকছে।  গতকাল (১৭ এপ্রিল) রোববার ভোর থেকে কেজাউড়ার দক্ষিণ আপার বাঁধ ভেঙে ভরাম হাওর, কালনী নদীর তীর উপচে চাপতি ও টাংনির হাওরে পানি প্রবেশ করছে।

এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নাক বরাবর অবস্থিত ঝাউয়ার হাওর। প্রায় এক হাজার হেক্টরের এই হাওর রবিবার ভোর রাতে পলিরচর বাঁধ ভেঙ্গে সম্পূর্ণ তলিয়ে গেছে। শনিবার বিকেলে যে হাওরে ছিল সবুজ-হলুদ ধানের ঢেউ সেখানে এখন থৈথৈ জল।

স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ- শুক্রবার থেকে কৃষকরা নিজ উদ্যোগে বাঁধের কাজে নামলেও বাঁশ, চাটাই, বস্তাসহ বাঁধরক্ষার সরঞ্জাম বার বার তাগিদ দিয়েও মিলছে না। এ কারণে ঠেকানো যাচ্ছে না পানির ঢল। ধান কাটার শ্রমিকও পাওয়া যাচ্ছে না। সব মিলিয়ে বিপাকে পড়েছেন হাওর পাড়ের কৃষক।

এছাড়া উদগল হাওরের গাতুয়া, ছিকইন দাইড়, বরাম হাওরের রসরাজের ঢালা, চিতলা, তেরাজানি, বুড়ি দিরাই, লড়ি পাঙ্গাইস্যা, চাপতির হাওরের চাতল বিল, গাতার বন, খাকছিড়া, খালিভুই, আসমানিগুল, খাইজ্জার গুল, বড়জাই, ফাতাল জট, আতারাই, বারবন্দ, কালিগুটা হাওরের বান বিল, ফুকরাইন, বোকারভাঙ্গা, ভাটিপাড়া- আদমপুরের হাওর, মধুরাপুর-বদলপুরের হাওরসহ ছোটবড়
অনেক হাওরের অন্তত ৩ হাজার হেক্টর জমির ধান পানিতে ডুবো ডুবো অবস্থায় রয়েছে। কেজাউড়া আপার বাঁধের ভাঙন ঠেকাতে না পারলে ২-৩ দিনের মধ্যে ভরাম হাওরের ধান পানিতে তলিয়ে যাবে।

কৃষির সাথে সশ্লিষ্টরা জানান- গত ৩ দিনের ব্যবধানে নদীতে দুই হাত পানি বেড়ে অকাল বন্যা দেখা দিয়েছে। সময়মত আপার বাঁধে মাটি কাটা হয়নি এবং সঠিকভাবে তদারকি না হওয়ায় কৃষকরা মরণপণ চেষ্টা করেও রক্ষা করতে পারছেনা বাঁধ।

হাওরপারের লোকজন ফসল ঘরে তুলতে পারবেন কি-না এ নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। বৈরী আবহাওয়ার কারণে মাড়াইকৃত ধান শুকাতে গিয়েও মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের।

দিরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলতাফ হোসেন জানিয়েছেন- উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে নদী কানায় কানায় ভরে ওঠায় প্রতিটি হাওরের উঠতি ফসল শতভাগ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এ জন্য দ্রুত ধান কাটার জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত