শাকিলা ববি, হবিগঞ্জ

১৮ এপ্রিল, ২০১৬ ১৯:৩১

হবিগঞ্জে আকস্মিক বন্যার আশংকা, দ্রুত ধান কাটতে চলছে প্রচারণা

পাউবোর সতর্কতামূলক চিঠি

হবিগঞ্জসহ দেশের ৫ জেলায় ২০ এপ্রিলের মধ্যে আকস্মিক বন্যার আশংকা দেখা দিয়েছে। এ আশংকার কথা জানিয়ে ওই ৫ জেলায় সতর্কবার্তা পাঠানো হয়েছে। এ বার্তা পেয়ে  ইতিমধ্যে জেলার ৮টি উপজেলায় নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা চেয়ারম্যানদের নিকট সতর্ক বার্তা পাঠানো হয়েছে।  এর পরিপ্রেক্ষিতে জমির পাকা ধান দ্রুত কেটে নিতে বিভিন্ন স্থানে মাইকিংসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। মনিটর করা হচ্ছে বন্যা প্রতিরক্ষা বাঁধ। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশংকা রয়েছে জেলার ভাটি এলাকা হিসেবে খ্যাত আজমিরিগঞ্জ, লাখাই ও বানিয়াচং উপজেলার ফসল। এছাড়াও হবিগঞ্জ সদর, নবীগঞ্জ ও বাহুবল উপজেলারও নিম্নাঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।

এ ব্যাপারে হবিগঞ্জের আজমিরিগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ. এহতেশাম রাসুলে হায়দার মুঠোফোনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান যে,  ১৫ এপ্রিল পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে আজমিরিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ভারী বৃষ্টিপাত ও আকস্মিক বন্যার  আশংকার কথা জানিয়ে একটি বার্তা পাঠানো হয়।

ঐ বার্তায় বলা হয়, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জ -এই ৫ জেলায় ১৬ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি জানান- ইতোমধ্যে রবিবার (১৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত আজমিরিগঞ্জ উপজেলায় ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে।

মোঃ. এহতেশাম রাসুলে হায়দার আরও জানান- এলাকার মসজিদ, মন্দিরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং মাইকিং করে সতর্কতামূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। প্রচারণায় বলা হচ্ছে, কৃষকরা যাতে তাদের জমির পাকা ধান দ্রুত কেটে ফেলেন।তিনি জানান- আজমিরিগঞ্জ উপজেলায় ১৪ হাজার হেক্টর বোরো জমির মধ্যে শতকরা ২৫ ভাগ জমির পাকা ধান কাটা হয়েছে। শতকরা আরও ৪৪ ভাগ পাকা ধান জমিতে রয়ে গেছে।

হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী এমএল সৈকত জানান, ফ্ল্যাড ফরকাস্টিং এন্ড ওয়ার্নিং সেন্টার থেকে তাদেরকে জানানো হয়েছে সিলেট বিভাগে ১৬ থেকে ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত ভারি বৃষ্টিপাত হবে। এ অবস্থায় জলোচ্ছ্বাসের আশংকা রয়েছে। ফলে সব উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে সতর্ক বার্তার বিষয়টি প্রচার করা হচ্ছে। যাতে কৃষকরা দ্রুত ধান কেটে নিতে পারেন।

হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, এ বছর চৈত্র মাস থেকেই জেলায় বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। প্রতিনিয়তই ভারি বৃষ্টিপাত হয়। রোববার ভোর থেকে ১০টা পর্যন্ত জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায় টানা ভারি বৃষ্টি হয়েছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। হাওর এলাকায়ও পানি বাড়ছে। রোববার বিকেল ৫টায় কুশিয়ারা নদীতে আজমিরীগঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমার ৯৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। এছাড়া এদিনে নদীতে পানি বাড়ে ৬০ সেন্টিমিটার। এ অবস্থায় জেলার ভাটি এলাকায় জলোচ্ছ্বাসের আশংকা দেখা দিয়েছে। ফ্লাড ফর কাস্টিং এন্ড ওয়ার্নিং সেন্টরের সতর্ক বার্তায়ও এমনটি বলা হচ্ছে। ফলে ১৬ থেকে ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত ভারি বৃষ্টিপাত এবং জলোচ্ছ্বাসের আশংকা রয়েছে বলে বার্তায় জানানো হয়। এর প্রেক্ষিতে জেলার ৮টি উপজেলায়ই ইউএনও, উপজেলা চেয়ারম্যান এবং ইউপি চেয়ারম্যানদেরকে বিষয়টি জানানো হচ্ছে। ১২ ও ১৪ এপ্রিল পৃথক দু’টি সতর্ক বার্তা পাঠানো হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত